ভিডিও EN
  1. Home/
  2. রাজনীতি

বিএনপি ক্ষমতায় এলে রক্তের নদী ও লাশের পাহাড় হবে : কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৩:১৯ পিএম, ১৪ জুলাই ২০১৮

বিএনপি আগামীতে একদিনের জন্যও যদি ক্ষমতায় আসে তবে বাংলাদেশে রক্তের নদী এবং লাশের পাহাড় হবে বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

শনিবার রাজধানীর ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চে মুক্তিযোদ্ধা প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের এ মন্তব্য করেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন মঞ্চ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

মুক্তিযোদ্ধারা কি ঐক্যবদ্ধ- প্রশ্ন রেখে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখনও ঘরের মধ্যে ঘর আছে। এখনও মশারির মধ্যে মশারি আছে। ঠিক কি-না বলেন? শাহজাহান ভাই আপনাদের একত্রিত করেছেন। কিন্তু যে চ্যালেঞ্জ নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, সাম্প্রদায়িক অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে যে চ্যালেঞ্চ এবং সম্প্রসায়িকতার যে বিষবৃক্ষ দেশব্যাপী ডালপালা বিস্তার লাভ করেছে এর মূল উৎপাটন করতে হলে সব মুক্তিযোদ্ধাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যারা বাইরে আছেন তাদের এক জায়গায় আসতে হবে।’

২০০১ ও ২০১৪ সালের বিএনপির সহিংসতার চিত্র তুলে ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আপনাদের কি সে সব মনে আছে?’ মুক্তিযোদ্ধারা সমস্বরে বলেন, ‘আছে।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি যদি আরেকবার ক্ষমতায় আসে কী হবে বুঝতে পারেন আপনারা? ২০০১ সালের চেয়ে ভয়ঙ্কর পরিণতি হবে বাংলাদেশে। বিএনপি যদি একদিনের জন্য ক্ষমতায় আসে একদিনেই বাংলাদেশ রক্তের নদী হয়ে যাবে। বাংলাদেশ লাশের পাহাড় হবে। একদিনে বাংলাদেশ সন্ত্রাসের লীলাভূমিতে পরিণত হবে। একদিনেই বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ আবার পাকিস্তানি ধারায় প্রত্যাবর্তন করবে। এই বিএনপি আপনাদের আবার বাড়ি ছাড়া করবে।’

‘আমাদের শত্রুরা দুর্বল নয়। শত্রুরা একমঞ্চে, এক প্লাটফর্মে ঐক্যবদ্ধ হতে পারলে আমরা কেন ঐক্যবদ্ধ হতে পারব না! আমাদেরও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে মুক্তিযুদ্ধকে বাঁচাতে হবে। মুক্তিযুদ্ধকে বাঁচাতে হলে আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হবে। দেশের উন্নয়ন-অর্জনকে বাঁচাতে হলে শেখ হাসিনাকে আবারও ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনতে হবে।’

সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা যদি এক না হোন শত্রু শিবির চ্যালেঞ্জ করতে পারে। আসন্ন মহাসমাবেশে আমরা নেত্রীকে ইনভাইট করব। এখানে উপস্থিতিতে কোন বিভেদ যেন না থাকে। সবাইকে এক প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসতে হবে যদি আপনি কঠিন চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে চান।’

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা ছাড়া আমাদের আর আস্থার কোনো ঠিকানা নেই। শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।’

‘আমি মুক্তিযোদ্ধাদের বলব আপনারা আশার আলোকবর্তিকা। আপনারা দেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শক্রদের আগামী জাতীয় নির্বাচনে সম্পূর্ণভাবে পরাজিত করার শপথ নিয়ে এখন থেকেই সবাইকে হাতে হাত রেখে কাঁধ কাঁধ মিলিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন এই আহ্বান জানাই।’

নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এবং তথ্যমন্ত্রী ও জাসদ একাংশের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ বি তাজুল ইসলাম।

শাজাহান খান সমাবেশে স্বাধীনতা বিরোধীদের নির্মূলের লক্ষ্যে ৬ দফা দাবি তুলে ধরেন।

দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- জামায়াত-শিবির, যুদ্ধাপরাধী ও স্বাধীনতা বিরোধীদের সন্তান ও তাদের উত্তরসূরিদের সরকারি চাকরিতে নিয়োগ দেয়া বন্ধ করা হোক। জামায়াত-শিবির ও স্বাধীনতা বিরোধী যারা সরকারি চাকরিতে বহাল আছে তাদের তালিকা করে বরখাস্ত করা হোক। যুদ্ধাপরাধীদের সব স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি ও জামায়াত-শিবির স্বাধীনতা বিরোধীদের পরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলোর রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হোক।

অন্যান্য দাবিগুলো হচ্ছে- মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান ক্ষুণ্নকারী, মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ এবং বঙ্গবন্ধুকে কটাক্ষকারীদের বিরুদ্ধে পাশ্চাত্যের ‘হলোকাস্ট অ্যাক্ট বা জেনোসাইড ডিনায়েল ল’ এর আদলে আইন করে রাষ্ট্রদ্রোহী হিসেবে বিচার করা হোক। ২০০১, ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা গণহত্যা ধর্ষণ ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে এবং যারা আগুন সন্ত্রাসকে সমর্থন করেছে, স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল গঠন করে তাদের কঠোর শাস্তি দেয়া হোক। কোটা সংস্কারের আন্দোলনে ছাত্র হত্যার গুজব ছড়িয়ে যারা উস্কানি দিয়েছে এবং যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাড়ি অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করেছে তাদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তি দেয়া হোক।

এছাড়া স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিকে নির্মূল করতে কর্মসূচিও ঘোষণা করে নৌপরিবহন মন্ত্রী বলেন, ‘১৯ জুলাই সিলেট অভিমুখে যাত্রা ও পথে স্থানে স্থানে সভা সমাবেশ হবে। ২২ জুলাই ৬ দফা দাবির সমর্থনে দেশব্যাপী গণস্বাক্ষর সংগ্রহ কর্মসূচি উদ্বোধন করা হবে। ২৩ থেকে ৩১ জুলাই ঢাকাসহ সব জেলা ও উপজেলায় বিভিন্ন পেশার নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় হবে। ১ আগস্ট ঢাকার সব শ্রেণি-পেশার সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রতিনিধি সভা।

এছাড়া ১৫ আগস্ট শোক দিবস পালন উপলক্ষে সরকারি কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ ১৯ আগস্ট শ্রমিক কর্মচারী পেশাজীবী মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় পরিষদের পক্ষ থেকে জাতীয় শোক দিবস পালন। ২ সেপ্টেম্বর জেলা-উপজেলায় সমাবেশ ও ডিসি এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেয়া হবে।’

মুক্তিযোদ্ধা প্রতিনিধি সমাবেশে সারাদেশ থেকে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সাবেক কমান্ডার ও ডেপুটি কমান্ডার এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন মঞ্চের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ বিপুল সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা অংশ নেন।

আরএমএম/এফএইচ/এমআরএম/জেআইএম

আরও পড়ুন