নির্বাচনে সবাই অংশ নেবে, আশা প্রধানমন্ত্রীর
দেশবাসীর সহযোগিতা ও সমর্থন কামনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশবাসী যদি মনে করেন তারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে ভুল করেননি, তারা দেশকে এগিয়ে নিতে সহযোগিতা করছেন- তাহলে দেশের জনগণ আগামী নির্বাচনেও নৌকায় ভোট দিয়ে আবারও তাদের সেবা করার সুযোগ দেবেন। আমাদের বিরোধীদল ও যারা আছে, আমি আশা করি, সবাই নির্বাচনে অংশ নেবেন।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা দেশবাসীকে সজাগ ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি সহযোগিতা কামনা করে বলেন, দেশের মানুষ একটু সুখের মুখ দেখেছে। কোনো অশুভ শক্তি দেশের জনগণের এই সুখটা যেন কেড়ে না নিতে পারে, সেজন্য দেশবাসীকে সজাগ ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানাবো। দেশে যেন আবারও মারামারি, খিস্তিখেউর, আগুন দিয়ে শতশত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যার মতো পরিবেশ ফিরে না আসে।
বিরোধীদলের নেতা বেগম রওশন এরশাদের বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিলিটারি ডিক্টেটরেরা ক্ষমতা দখল করে উপকারের বদলে দেশের সর্বনাশ করে গেছে। মতিঝিলে একসময় ঝিল ছিল। আইয়ুব খান তা বন্ধ করে দেয়। সেগুনবাগিচা ও পান্থপথে আগে খাল ছিল। জেনারেল এরশাদ সাহেব এসে সেই খাল বন্ধ করে দিয়ে বক্সকালভার্ট নির্মাণ করেন। এতে করে পানি এখন আরা নামতে পারে না। জিয়া এয়ারপোর্ট থেকে দীর্ঘরাস্তায় দু’ধারে থাকা সব কৃষ্ণচুড়া গাছ কেটে ফেলে।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে বিজয়ী হলে ক্ষমতায় আসতে পারলে আমরা সব বক্স কালভার্ট ভেঙে ফেলে নিচে খাল এবং উপর দিয়ে এলিভেটেড রাস্তা করে দেব।
সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের মেয়াদ আরও ২৫ বছর বৃদ্ধির সমালোচনাকারীদের উদ্দেশ্যে করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নারীর ক্ষমতায়নের কারণে সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের মেয়াদ আরও ২৫ বছর বৃদ্ধি করতে সংসদে সংবিধান সংশোধন করা হয়েছে। এতে করে কোনো নারীর সরাসরি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে বিজয়ী হয়ে আসার পথে কোনো বাধা হবে না। কিন্তু এটা নিয়েও নারী আন্দোলনের অনেকে সমালোচনা করেন। তাদের বলবো এতো কথা না বলে আগামী নির্বাচনে সরাসরি অংশ নিন, জনগণের কাছে যান, ভোট নিয়ে সংসদে আসুন। কিন্তু ভালো একটা কাজ করার পরও কেন জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন?
২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ হিসেবে পালনের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের কৃষক-শ্রমিক-কামার-কুমার-বেদে-হিজড়া-নৃগোষ্ঠীসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের ভাগ্যের পরির্তনের কাজ করে যাচ্ছি। আগামীতে দেশের একটি মানুষ দরিদ্র্য থাকবে না, একটি মানুষও অবহেলিত ও গৃহহারা থাকবে না। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে বিশ্বের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে গড়ে তুলবোই। বাংলাদেশের মানুষকে আর কেউ কোনোদিন দাবিয়ে রাখতে পারবে না। বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে দেশকে আমরা বিশ্বের দরবারে যে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছি সেটা আমরা ধরে রেখে এগিয়ে যাব। জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ে তুলবো।
এইচএস/জেডএ/পিআর