ভিডিও EN
  1. Home/
  2. রাজনীতি

অনশনে লোক না হওয়ার কারণ খুঁজছে বিএনপি

খালিদ হোসেন | প্রকাশিত: ১২:১১ পিএম, ১০ জুলাই ২০১৮

দলের চেয়ারপারসন কারাবন্দি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে কঠোর কর্মসূচির হুঙ্কার ছাড়লেও বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতেই কাঙ্ক্ষিত লোক সমাগম হচ্ছে না। একই অবস্থা ছিল সোমবার (৯ জুলাই) দিনব্যাপী রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে দলটির প্রতীকী অনশনেও।

সম্প্রতি ঢাকা মহানগরীর দুই অংশের পূর্ণাঙ্গ কমিটির পাশপাশি জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ বিভিন্ন অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নতুন কমিটি গঠন করেছে বিএনপি। পুনর্গঠিত শক্তি দিয়েই কঠোর আন্দোলনের কথা বলছেন দলটির নেতারা। তবে প্রতীকী অনশনের মতো একটি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে উপস্থিতির ক্ষেত্রে পুনর্গঠিত শক্তির কোনো প্রতিফলন ঘটেনি।

যুবদলের কেন্দ্রীয় সাবেক সদস্য মো. গিয়াস উদ্দিন মামুন এবং ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মো. নাজমুল হাসানও এমনটা মনে করেন। জাগো নিউজকে তারা জানান, সরকারের দমন-পীড়নের কারণে অনশনে কাঙ্ক্ষিত লোক সমাগম হয়নি। এছাড়া কর্মসূচির আগের দিন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইসহাক সরকারকে গ্রেফতারের ঘটনায় নেতাকর্মীদের মধ্যে বাড়তি আতঙ্ক তৈরি হয়েছে বলেও জানান তারা।

বিএনপির এ প্রতীকী অনশনে উপস্থিত নিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন নেতাকর্মী বলেন, ‘ঢাকা মহানগরীতে প্রত্যেক ইউনিট থেকে ৫শ’ লোক আসলেও ২৫ হাজার মানুষ হওয়ার কথা। কিন্তু অনশনে কি সেই পরিমাণ লোকের উপস্থিতি হয়েছে? নিম্ন মানের কমিটি গঠন করা হয়েছে। ভালো কমিটি হলে অনশনে লোকে লোকারণ্য হতো।’

বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে সাধারণত দলের সিনিয়র নেতারা, অঙ্গসহযোগী সংগঠনসমূহের নেতারা এবং ঢাকা মহানগরীর নেতাদের উপস্থিতি থাকে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল ছাত্রদল এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।

বিএনপি নেতাকর্মীদের একটা অংশের ধারণা, সর্বত্রই তাদের অনুসারী রয়েছে। তারা কর্মসূচিতে থাকলে অনুসারীরাও থাকেন। একই পরিস্থিতি যুবদল সভাপতি সাইফুল ইসলাম নীরবের ক্ষেত্রেও। তারও অসংখ্য অনুসারী রয়েছে। প্রতীকী অনশনে দেখা যায়নি ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলনকেও। এসব নেতারা কর্মসূচিতে না আসলে অনুসারীদেরও খুব একটা দেখা মেলে না।

তবে প্রতীকী অনশন মঞ্চ থেকে জানানো হয়, হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাইফুল ইলসামী নীরবের ওপর হুলিয়া (পলাতক আসামি) থাকার কারণে তারা অনশনে অংশ নিতে পারেননি।

প্রতীকী অনশনে কাঙ্ক্ষিত লোক সমাগমের বিষয়ে বিএনপির ঢাকা মহনগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা আশাবাদী ছিলাম। সিটি কর্পোরেশন একটা সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান, যে কেউ সেই সেবা নিতে পারে। তারা আমাদের হয়রানি করেছে। একদম শেষ মুহূর্তে মহানগর নাট্যমঞ্চে আমাদের অনুমতি দিয়েছে। বৃষ্টি ও রোদের মধ্যে আমাদের নেতাকর্মীরা কষ্ট করেছে। এছাড়া আমাদের প্রত্যেক নেতাকর্মীর নামে মামলা রয়েছে।’

ঢাকার দুই অংশের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়েছে, স্বেচ্ছাসেবক ও যুবদলের কমিটি দেয়া হচ্ছে এরপরও প্রতীকী অনশন কর্মসূচিতে কাঙ্ক্ষিত উপস্থিতি কম কেন? -জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না, সেভাবে কাঙ্ক্ষিত উপস্থিতি হয়নি। এটা কেন্দ্রীয়ভাবে আয়োজন করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর কেন্দ্রকে সহযোগিতা করেছে। আমরা প্রত্যেক থানায় দাওয়াত দিয়েছি। আগামীতে আমাদের সংশ্লিষ্টতা বাড়ালে আরও ভালো হবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির ঢাকা বিভাগী সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ বলেন, ‘মহানগর নাট্যমঞ্চে সরকারের বিরুদ্ধে বিশাল প্রতিবাদ হয়েছে। আমরা আশাবাদী, ভবিষ্যতে আন্দোলন আরও বেগবান হবে।’

অনশন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক। অনশনে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে জাগো নিউজকে তিনি বলেন, ‘আবহাওয়ার কারণে হয়তো লোক সমাগম হতে পারে নাই।’

একই বিষয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘শেষ মুহূর্তে কর্মসূচির অনুমতি পাওয়ায় অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। সময় পেলে এটা আরও বড় হতে পারতো।’

এদিকে দলীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতীকী অনশন কর্মসূচিতে কাঙ্ক্ষিত উপস্থিতি না হওয়ায় দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা বিষয়টি নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন। নতুন কমিটি করার পরও এমন কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের অনুপস্থিতির কারণ খোঁজার চেষ্টা করছেন তারা।

দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী বিষয়টি নিয়ে দলের নেতাদের সঙ্গে আলাপ করেছেন। এছাড়া কর্মসূচি শেষে গুলশানে জরুরি বৈঠকেও সিনিয়র নেতারা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন।

কেএইচ/আরএস/জেআইএম

আরও পড়ুন