‘কারাবিধির দোহাই দিয়ে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা বঞ্চিত করা হচ্ছে’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ বলেছেন, ‘আমরা বারবার বেগম জিয়ার সুচিকিৎসার দাবি করে আসছি। কেন তিনি ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে চান তাও বিস্তারিতভাবে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করেছি দেশবাসীকে অবহিত করার জন্য। আমরা বহুবার বলেছি পিজি বা সিএমএইচে দেশনেত্রীর প্রকৃত চিকিৎসা হবে না। কারণ সেখানে ডপলার টেস্ট এবং বিশেষ ধরনের এমআরআই সুবিধা নেই। আছে শুধু ইউনাইটেডে।’
তিনি বলেন, ‘সরকার ও কারা র্কতৃপক্ষ কারাবিধির দোহাই দিয়ে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত করছে। তিনি যাতে প্রকৃত চিকিৎসা না পেয়ে চরম দুর্দশার মধ্যে পড়েন সে জন্যই এতো বাধা ও আপত্তি সরকারের। দেশের প্রখ্যাত চিকিৎসকরা খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে যেভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তাতে দেশবাসীর নিকট এটা ক্রমাগতভাবে পরিষ্কার হয়ে গেছে সরকার তার জীবন নিয়ে দুরভীসন্ধিমূলক খেলায় মেতে উঠেছে। একজন সঙ্কটাপন্ন রোগীকে চিকিৎসা না দেয়া চরম মানবধিকার লঙ্ঘন।’
শুক্রবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
রিজভী বলেন, মানবাধিকার তদন্তে জাতিসংঘের অনুরোধে সাড়া দিচ্ছে না বাংলাদেশ। সংস্থাটির এ ধরনের অন্তত ১০টি অনুরোধে বাংলাদেশ সাড়া দেয়নি।
তিনি বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনার জিয়াদ রাদ আল হুসেইন সমাজে কাজ করার ক্ষেত্র সঙ্কুচিত হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং নিরাপত্তা বাহিনীর বিচারবহির্ভূত কর্মকাণ্ড বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। বাংলাদেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ক্রমেই সঙ্কুচিত হচ্ছে। দেশজুড়ে বিচারবর্হিভূত হত্যা চলছেই। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে অবিলম্বে বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধের দাবি জানানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ভোটারবিহীন সরকার তাদের অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতেই দেশজুড়ে বিচারবর্হিভূত হত্যা, গুম, খুন ও গণগ্রেফতার অব্যাহত রেখেছে। বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করা হয়েছে। বিরোধী দলের সভা-সমাবেশের উপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রয়েছে। কেড়ে নেয়া হয়েছে গণমাধ্যমসহ মানুষের বাক-স্বাধীনতা। যা জাতিসংঘের রিপোর্টে ফুটে উঠেছে।
রিজভী বলেন, বিএনপিসহ বিরোধী দলকে দূরে রেখে ৫ জানুয়ারির মত আরেকটি ভোটারবিহীন নির্বাচন করতেই নীলনকশার অংশ হিসেবে সুপরিকল্পিতভাবে বেগম খালেদা জিয়াকে কারাবন্দী করে রাখা হয়েছে। দেশজুড়ে বিরোধী দল নিধনের কর্মসূচি থামছে না। গণমাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ চলছে।
তিনি বলেন, নিশ্চিত ভরাডুবির ভয়ে গাজীপুরে আওয়ামী লীগ ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনী বিএনপি ও বিরোধী দলের নির্বাচন সংশ্লিষ্ট নেতা-কর্মীদের গণগ্রেফতার ও বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি ধামকি দিচ্ছে। গত কয়েকদিনে বেশ কিছু নেতা-কর্মীকে গ্রেফতারের পর এখন তাদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।
রিজভী অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার রাতেও দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. মাজহারুল আলম ও মীর হালিমুজ্জামান ননীর বাসায় দুইবার আওয়ামী লীগের ক্যাডার ও সাদাপোশাকে পুলিশ হানা দিয়ে তল্লাশির নামে পরিবারের সদস্যদের হয়রানি করে। কাশিমপুর ও কোনাবাড়িতে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তল্লাশি চালিয়ে তাদের খুঁজতে থাকে ও পরিবারের সদস্যদের হুমকি ধামকি দেয়। আর এগুলোর দিকে চোখ বন্ধ থাকা দায়িত্বহীন নির্বাচন কমিশন হাওয়া খেয়ে বেড়াচ্ছে।
কেএইচ/এমএমজেড/পিআর