খালেদার চিকিৎসা নিয়ে ‘সময়ক্ষেপণ’ করছে সরকার : ফখরুল
কারাবন্দি অসুস্থ খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে সরকার ‘সময়ক্ষেপণ’ করছে অভিযোগ করে বিএনপি বলেছে, ‘ইউনাইটেড হাসপাতালেই তার চিকিৎসার ব্যবস্থা নিন।’
বুধবার রাজধানীর বিজয়নগরের একটি হোটেলে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক লেবার পার্টির একাংশের আয়োজনে অনুষ্ঠিত ইফতার অনুষ্ঠানে একথা বলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইউনাইটেড হাসপাতালে তার চিকিৎসা ব্যবস্থা হলে যাবতীয় খরচ দল বহন করবে। পরিবার থেকে বলা হয়েছে, তার চিকিৎসার সব ব্যয় পরিবার থেকে বহন করা হবে। এক্ষেত্রে বিলম্ব করার অর্থই হচ্ছে যে, দেশনেত্রীর জীবন একটা হুমকির সম্মুখীন হওয়া।'
তিনি বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ইউনাইটেড হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমইউ)-এ চিকিৎসা নিতে খালেদা জিয়ার অনাগ্রহের পর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বক্তব্য নাকচ করে দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা খুব সুনির্দিষ্টভাবে বলেছি, যিনি রোগী তার আস্থার ব্যাপার আছে। আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, জেলকোডের কোথাও বলা নেই যে, শুধুমাত্র সরকারি হাসপাতালেই চিকিৎসা করতে হবে।’
দেশের বর্তমান অবস্থাকে ‘ভয়াবহ দুঃসময়’ অভিহিত করে এ থেকে উত্তরণে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করতে সব গণতান্ত্রিক দল ও শক্তির এক হওয়ার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি বলতে চাই, দেশনেত্রীকে মুক্ত ও মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনতে হলে জাতীয় ঐক্যের কোনো বিকল্প নাই। এই ঐক্য সৃষ্টি করে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমাদের বিজয় ছিনিয়ে আনতে হবে। নির্বাচনের মাধ্যমে আমাদের বুকের ওপর চেপে বসা দানবকে সরাতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া কোনো কিছুই সম্ভব নয়। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তাকে মুক্ত করে এদেশের আমরা অবশ্যই একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে পারবো ইনশাল্লাহ। যেখানে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সেই নির্বাচন হবে।’
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে, যে সংসদ আছে তা ভেঙে দিতে হবে এবং নির্বাচনের সময়ে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে।
মাদকবিরোধী অভিযানের নামে দেশে বিচারবর্হিভূত হত্যার কঠোর সমালোচনা করেন বিএনপির এই মুখপাত্র।
কারাবন্দি জোট নেত্রী অসুস্থ খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় এই ইফতার মাহফিল হয়। ইফতার শুরুর আগে কারাগারে অসুস্থ খালেদা জিয়ার আরোগ্য কামনায় বিশেষ মোনাজাত হয়।
সংগঠনের চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদ, বিএনপির মির্জা আব্বাস, জামায়াতে ইসলামীর আবদুল হালিম বক্তব্য রাখেন।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিএনপির আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সেলিমা রহমান, বরকত উল্লাহ বুলু, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, জহিরুল হক শাহজাদা মিয়া, হায়দার আলী, সুজাউদ্দিন, সুকোমল বড়ুয়া, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, আহসান হাবিব লিংকন, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিম, জামায়াতে ইসলামীর আবদুল হালিম, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ন্যাপ-ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, জাগপার খোন্দকার লুৎফর রহমান, আসাদুর রহমান খান, মুসলিম লীগের শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, খেলাফত মজলিশের মাওলানা শফিউদ্দিন প্রমুখ।
লেবার পার্টির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ফরিদ উদ্দিন, সহসভাপতি মো. ফারুক রহমান. মোসলেম উদ্দিন, আমিনুল ইসলাম রাজু, মাহবুবুল ইসলাম খালেদ, আমিনুল ইসলাম, এসএম ইউসুফ আলী, তানভীর হোসেনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা ইফতারে অংশ নেন।
কেএইচ/জেএইচ/জেআইএম