মধ্যবর্তী নয়, নতুন নির্বাচন চায় বিএনপি

৫ জানুয়ারি নির্বাচনকে ‘অস্বাভাবিক’ উল্লেখ করে নতুন নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। রোববার বিকেলে নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মুখপাত্র ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন এ দাবি জানান।

রিপন বলেন, মধ্যবর্তী নির্বাচনের প্রশ্ন তখনই আসে, যখন একটি নির্বাচিত সরকার তার জনপ্রিয়তা যাচায়ের জন্য আগে-ভাগে একটি নির্বাচন দেয়। কিন্তু ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি যে নির্বাচন হয়েছে তা ‘স্বাভাবিক’ নির্বাচন ছিলো না। সেজন্য কোনো মধ্যবর্তী নয়, নতুন করে নির্বাচনের দাবি করছি।

‘আগামী নির্বাচনে না গেলে বিএনপি বিলুপ্ত হয়ে যাবে’-আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুর ইসলামের এমন বক্তব্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে এক প্রশ্নের জবাবে রিপন বলেন, ‘বিএনপির প্রতি সৈয়দ আশরাফের এমন সহানুভুতির জন্য ধন্যবাদ জানাই। তবে তাকে জানিয়ে রাখি, বিএনপির ধ্বংস বা বিলুপ্ত হওয়ার কোনো কারণ নেই। কেননা এই দলের নেতাকর্মীরা জিয়াউর রহমানের আদর্শে জেগে থাকবে।’

জনগণের সমর্থন নিয়ে বিএনপি ভবিষ্যতে ক্ষমতায় আসবে সে আশাবাদও ব্যক্ত করেন বিএনপির এই মুখপাত্র। একই সঙ্গে তিনি প্রত্যাশা করেন, সরকার বিএনপির নিরপেক্ষ সরকারের দাবি মেনে নেবে।

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভ্যাট আরোপের প্রতিবাদ পুনর্ব্যক্ত করে আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, এর মাধ্যমে সরকার শিক্ষা নিয়ে বৈষম্য করছে। কিন্তু বিএনপি বিশ্বাস করে শিক্ষা কোনো পণ্য নয়।

তিনি বলেন, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বাণিজ্যিক মনোবৃত্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কিন্তু বিএনপি শিক্ষা বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করা সমর্থন করে না। ব্যক্তিগত লাভের প্রশ্ন না আসলে ভ্যাটের প্রশ্ন আসতো না। সুতরাং উদ্যোক্তরা যেন শিক্ষাকে বাণিজ্যিক না করে সেই আহ্বান জানাবো।

এই সরকার ‘শিক্ষাবান্ধব নয়’ দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকার নিজেকে জনবান্ধব বলে দাবি করে। কিন্তু তারা শিক্ষা বা ছাত্রবান্ধব নয়। হলে ভ্যাট আরোপ করতো না।

তিনি বলেন, রাজস্ব বিভাগ থেকে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তারা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন। অর্থাৎ পদে পদে কিভাবে আরো করারোপ করা যায় সেই প্রক্রিয়া হচ্ছে।

‘সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, সরকারের এই পদক্ষেপ গণবিরোধী আচরণ। এর মাধ্যমে ব্যয় বাড়িয়ে জনগণের কষ্ট বাড়ানো হবে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাবো, ধনিক শ্রেণির দিকে না তাকিয়ে নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের দিকে তাকান। কারণ পাবলিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে আসন স্বল্পতার কারণে অনেক গরীব ছাত্রও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কষ্ট করে পড়াশোনা করে। বিষয়টি মানবিকভাবে বিবেচনা করার আহ্বান জানাচ্ছি।’

ভবিষ্যতে বিএনপি সরকার গঠন করলে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর ভ্যাট প্রত্যাহার করে শিক্ষার সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করার প্রতিশ্রুতি দেন দলটির এই মুখপাত্র।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতাদের মধ্যে হাবিবুর রহমান হাবিব, নিলুফার ইয়াসমিন চৌধুরী মনি, শামীমুর রহমান শামীম, আসাদুল করিম শাহিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এমএম/একে/এমআরআই