শেখ হাসিনা এক বালতি পানিও আনতে পারেননি : রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ বলেছেন, ‘বন্ধুত্বের এত দহরম-মহরম অথচ শেখ হাসিনা আট বছরে ভারত থেকে এক বালতি পানিও আনতে পারেননি। বছর যায় বছর আসে আর অবৈধ সরকার শুধু একতরফাভাবে ভারতকে সবকিছু দিয়েই যাচ্ছে কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ ন্যায্য পানির হিস্যা বুঝে পাচ্ছে না।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
রিজভী আহমেদ বলেন, ‘আগামীকাল শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও ভারত সফরে যাবেন বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে তিনি একটি ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন ও একটি ডি-লিট ডিগ্রি গ্রহণ করবেন বলে গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিষয়েও আলোচনা হতে পারে বলেও গণমাধ্যমে খবর এসেছে। কিন্তু শেখ হাসিনার এবারের সফরেও বাংলাদেশের মানুষের বহু প্রতীক্ষিত তিস্তা চুক্তির বিষয়ে কোনো এজেন্ডা নেই।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা ক্ষমতায় টিকে থাকতে সার্বভৌমত্বকে ক্ষয়িষ্ণু করে ভারতকে সবকিছু উজাড় করে দিয়ে যাচ্ছেন বিনিময়ে কিছুই পাননি।’
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘পরদেশের কাছে সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিয়ে পারিশ্রমিক হিসেবে পেয়েছেন শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকা। জনগনকে ধোঁকা দেয়ার বিদ্যাটাই ভাল করে রপ্ত করেছেন।’
রিজভী বলেন, বুধবার বিকেলে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বহুল প্রত্যাশিত তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি নিয়ে অগ্রগতির কোনো তথ্য জানাতে পারেননি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। বিগত আটটি বছর ধরে আওয়ামী লীগ ঘোষণা দিয়ে আসছে যে, তারা ভারতের সঙ্গে তিস্তা চুক্তি করতে যাচ্ছে।
মাদক নির্মূলের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চলছে দাবি করে তিনি বলেন, গতরাতেও মাদক নির্মূলের নামে বিচারবহির্ভূতভাবে নয়জনকে হত্যা করা হয়েছে। দেশ-বিদেশের গণমাধ্যমগুলো, সোশ্যাল মিডিয়াসহ মানবধিকার সংগঠনগুলো বেআইনিভাবে মানুষ হত্যার বিরুদ্ধে তুমুল সমালোচনা করলেও এখনও থামছে না বিচারবহির্ভূত হত্যা। গতকাল বিবিসির প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে মাদক ব্যবসার চেয়ে বিচারবহির্ভূত হত্যা ভয়ঙ্কর অপরাধ।
রিজভী আহমেদ বলেন, আমরা বরাবরই বলছি- আমরাও চাই দেশ থেকে মাদক নির্মূল হোক, মাদকের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তি হোক কিন্তু বিচারবহির্ভূতভাবে নির্বিচারে মানুষ হত্যা নয়। কিন্তু প্রকৃত মাদক ব্যবসায়ীদের ধরা হচ্ছে না।
রিজভী আহমেদ বলেন, গতকালও সরকারের শরীক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশষদূত বলেছেন- মাদক সম্রাটরা সংসদেই আছে তাদের ধরে বিচার করুণ। গণমাধ্যমেও মাদকের গডফাদারদের তালিকা প্রকাশ হচ্ছে। কিন্তু তাদের ধরা হচ্ছে না।
তিনি বলেন, মানুষ হত্যা করে কোনোদিন মাদক নির্মূল সম্ভব নয়। এর পেছনে সরকারের অসৎ উদ্দেশ্য আছে। আমরা শুরু থেকেই বলেই আসছি মাদক নির্মূল সরকারের উদ্দেশ্য নয়, আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধীদল নিধনের জন্যই মাদক বিরোধী অভিযানের নামে দেশজুড়ে বিচারবহির্ভূত মানুষ খুনের ধুম চলছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে দলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর শরফত আলী শপু, যুব দল নেতা শামসুজ্জামান সুরুজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কেএইচ/এমবিআর/আরআইপি/জেআইএম