ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য আরও ভয়ঙ্কর ইঙ্গিত : রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ বলেছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘হায়াত-মউত আল্লাহর হাতে, এখানে কারো হাত নেই’। ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্য আরও ভয়ঙ্কর ইঙ্গিত বহন করে।’
তিনি বলেন, ‘ওবায়দুল কাদেরের ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্যে আমরা দেশনেত্রীর জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে আরও বেশি উদ্বেগ ও শঙ্কা প্রকাশ করছি। ওবায়দুল কাদের সাহেবের বক্তব্যে প্রমাণিত হয় যে, সত্যি সত্যি তারা বিএনপি চেয়ারপারসনের জীবন নিয়ে একটা গভীর চক্রান্তে লিপ্ত।’
শুক্রবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে আমরা বারবার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করলেও সরকার ও কারা কর্তৃপক্ষ কোন কর্ণপাত করছে না। গতকাল (বৃহস্পতিবার) শারীরিকভাবে অসুস্থ দেশনেত্রীর সাথে দেখা করার জন্য দলের মহাসচিবসহ সিনিয়র নেতারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতিপত্র নিয়ে কারাফটকে গেলেও তার সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি দেয়নি কারা কর্তৃপক্ষ।’
তিনি বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার হাঁটু ও পায়ের ব্যথা আরও বেড়ে গেছে। পুরাতন ভবনের স্যাঁতস্যাঁতে কক্ষে তাকে অন্তহীন নানাবিধ সমস্যার দ্বারা আক্রান্ত হতে হচ্ছে। সেখানে একদিকে মশার তীব্র উপদ্রুব, অন্যদিকে ঘনঘন লোডশেডিংয়ে তাকে এক অবর্ণনীয় কষ্টে রাখা হয়েছে।’
বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘প্রতিহিংসায় কাণ্ডজ্ঞানহীন সরকার দেশনেত্রীকে নির্যাতন করাটাই ছিল যেন মূল টার্গেট, আর সে জন্যই আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে সাজা দিয়ে দেশনেত্রীকে বন্দি করে রেখেছে। আমি আগেও দেশনেত্রীর জীবন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছি। বর্তমানে তিনি চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন।’
রিজভী বলেন, ‘আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, অবিলম্বে দেশনেত্রীর ইচ্ছানুযায়ী রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা ব্যবস্থা করা হোক, অন্যথায় জনগণের রুদ্ররোষ থেকে কেউই রেহাই পাবে না। দেশনেত্রীর চিকিৎসা নিয়ে কারা কর্তৃপক্ষের গড়িমসি সহ্য করা হবে না। আমি আবারও অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মু্ক্তি দাবি করে তাকে চিকিৎসাসেবা পাওয়ার সুযোগ প্রদানের জন্য জোর আহ্বান জানাচ্ছি।’
সাবেক এ ছাত্র নেতা বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদেরকে গভীর রাতে হল থেকে সম্পূর্ণ অমানবিক আচরণের মাধ্যমে বের করে দেয়া হয়েছে। যা দেশের ইতিহাসে একটি অন্যতম ন্যাক্কারজনক ও কলঙ্কজনক ঘটনা। ছাত্রীদের প্রতি ছাত্রলীগের নির্যাতনকে জারি রাখার ছাড়পত্র দিয়েছে বর্তমান সরকার।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগের অপকর্ম সমূহের মদদদাতা আওয়ামী সমর্থিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যে এত নিচে নামতে পারে, সেটি দেখে বিবেকবান মানুষরা আজ বিস্মিত, হতভম্ব। আওয়ামী ক্ষমতার বলয়ে ঢুকে এরা শিক্ষার মূল আদর্শকেই জলাঞ্জলি দিয়েছেন। আওয়ামী সমর্থিত শিক্ষক ও ছাত্রলীগ যেন একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ।’
দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ করে সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে দলের ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, যুগ্ম মহাসিচব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাসুদ আহমেদ তালুকদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কেএইচ/আরএস/এমএস