‘আগে আন্দোলন, পরে নির্বাচনের চিন্তা’
চলমান শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা যাবে না উল্লেখ করে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, তার মুক্তির জন্য কঠোর আন্দোলন করতে হবে। আগে আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার মুক্তি, তারপর নির্বাচনের চিন্তা করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘জনগণের কাছে ম্যাসেজ যাচ্ছে বিএনপির কাছে নির্বাচনটা বড়, খালেদার মুক্তি নয়। তাহলে সরকার কেন তাকে মুক্তি দেবে। তারা অপেক্ষায় আছে যে কোনো কায়দায় বিএনপিকে নির্বাচনে আনার। কারণ বিএনপিকে যদি যে কোনোভাবে নির্বাচনে নামানো যায় তাহলে আগের নির্বাচন ও আগামী নির্বাচনের বৈধতা আদায় হয়ে যাবে। ’
মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত এক প্রতিবাদ সভায় এসব কথা বলেন তিনি। ‘খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি এবং ইলিয়াস আলীর সন্ধানের’ দাবিতে এই প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে ‘ইলিয়াস মুক্তি যুব সংগ্রাম পরিষদ’ ও ‘ইলিয়াস মুক্তি ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ’।
গয়েশ্বর বলেন, ‘নেত্রী যখন জেলে গেলেন তখন কে কখন কিভাবে প্রতিবাদ করবেন তাদের ব্যাপার। যিনি কারাগারের ভেতেরে আছেন তিনি বলে দেবেন কোথায় কিভাবে আন্দোলন করবেন? এই সরকারের আচরণ কেমন তা কি আমরা কেউ বুঝি না। এই সরকারের বিরুদ্ধে কি চলমান শন্তিপূর্ণ আন্দোলেনের মাধ্যমে খালেদাকে মুক্ত করে আনা যাবে?’
তিনি বলেন, ‘আমরা ঐক্য চাই। তবে সেই ঐক্য মান্নান ভূঁইয়ার মতো খালেদাকে মাইনাসের ঐক্য চাই না। কারাগারে থাকাকালীন পত্রপত্রিকার মাধ্যমে যে আন্দোলন আমাদের দলের যে অবস্থা দেখলাম তা হলো- খালেদা জিয়ার মুক্তি ও আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি। তার মানে খালেদার মুক্তি না হলেও আমরা নির্বাচনে যাব। আবার বলা হচ্ছে, আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা হবে। তাহলে কি নির্বাচনে ক্ষমতায় যাওয়ার পর আন্দোলন করে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবেন?’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, ‘ইতিহাস বলে আন্দোলনে যারা শিরোপা পায় তারাই নির্বাচনে জয় লাভ করে। আন্দোলনে জয় হলে নির্বাচনে জয়ের প্রেক্ষাপট এমনিতেই তৈরি হয়ে যায়। এ সময় তিনি আরও বলেন, সব আসন পেলেই ক্ষমতায় যাওয়া যায় না। তার জন্য আন্দোলন করতে হয়। তাহলে সেই আন্দোলন কি নির্বাচনের পরে করবেন নাকি আগে করবেন।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আদালত খালেদার বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে কিন্তু জনগণের আদালতে তিনি নির্দোষ। অতএব তার মুক্তির আন্দোলনের জন্য জনগণ প্রস্তুত। আগামীতে কৌশল হবে একটাই। তা হল আন্দোলনে মাঠে নামা। আন্দোলন বাদ দিয়ে যদি আমরা হাসিনার অধীনে যদি নির্বাচনে যাই তাহলে মানুষ বেঈমান বলবে। এসময় তিনি বলেন, নিরামিষ খাওয়া ভালো তবে সব বয়সীদের জন্য ভালো নয়।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবি একটা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার চাই। হাসিনা মার্কা কোনো সরকার চাই না। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার হলে খালেদা জিয়া নির্বাচন করতে পারবেন। কারণ মহিউদ্দিন খান আলমগীর ও মোফাজ্জল হোসেন মায়া চৌধুরীসহ যারা সাজাপ্রাপ্ত আছেন তারা যদি নির্বাচন করতে পারেন তাহলে খালেদা জিয়াও নির্বাচন করতে পারবেন।’
ইলিয়াস মুক্তি যুব সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি মিজানুর রহমান মিজানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর শরাফত আলী সফু , সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ।
কেএইচ/জেএইচ/এমএস