খালেদার সাজা নিয়ে কূটনীতিকদের যা বললো বিএনপি
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা এবং কারাগারে তার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে কূটনীতিকদের অবহিত করেছে দলটি। এছাড়া আগামী জাতীয় নির্বাচন ও চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দলের অবস্থান সম্পর্কেও জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে কূটনৈতিকদের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে এসব বিষয়ে তুলে ধরেন দলের শীর্ষ নেতারা। বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, বৈঠকের শুরুতেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন। ব্রিফিংয়ের পর কূটনীতিকরা নানা বিষয়ে প্রশ্ন করেন। এসময় সেখানে উপস্থিত নেতারা প্রশ্নের জবাব দেন। কূটনীতিকদের প্রশ্নের বেশিরভাগই খালেদা জিয়ার মামলা, কারাগারের পরিস্থিতি ও আগামী জাতীয় নির্বাচন কেন্দ্রিক ছিল।
বৈঠকে বাংলাদেশে অবস্থানরত ২২টি দেশের কূটনীতিকদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, সৌদি আরব, পাকিস্তান, তুরস্ক, জাপান, স্পেন, সুইজারল্যান্ড, জার্মানি, কানাডা ও চীনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া সুইডেনের রাষ্ট্রদূতও বৈঠকে যোগ দেন।
বিএনপির পক্ষ থেকে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান, সাবিহউদ্দিন আহমেদ, এ জে মোহাম্মাদ আলী, ড. ইনামুল হক চৌধুরী, বিশেষ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন, আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সহ-আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা, বেবী নাজনীন, ফাহিমা মুন্নি ও নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল।
লিখিত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে কারাগারে নেয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় কারাগার ব্যবহারের অনুপযোগী। মামলার রায়ের পর সরকার প্রতিহিংসা বাস্তবায়নের জন্য খালেদা জিয়াকে কারাগারে প্রাপ্ত সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেছে। এছাড়া মামলার রায়ের অনুলিপি প্রদান নিয়েও সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বৈঠকে উপস্থিত বিএনপির এক নেতা বলেন, ‘কূটনীতিকরা অনেক কিছু জানার চেষ্টা করেছেন। তারা মনোযোগ দিয়ে পুরো বক্তব্য শুনেছেন এবং নোট নিয়েছেন। আবার বিএনপির পক্ষ থেকেও মামলার সব ডকুমেন্টস তাদের সরবরাহ করা হয়েছে।’
বিএনপির কূটনৈতিক উইংয়ের একজন সদস্য জানান, ‘বেশিরভাগ কূটনীতিক খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিয়েছেন। তাকে এখন ভিআইপি মর্যাদার ডিভিশন দেয়া হয়েছে কি না তা জানতে চেয়েছেন।’
উল্লেখ্য, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া তারেক রহমানসহ বাকিদের ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
দণ্ডবিধি ১০৯ ও ৪০৯ ধারায় খালেদা জিয়াসহ বাকিদের সাজা দেয়া হয়। বয়স বিবেচনায় খালেদা জিয়ার সাজা কমানো হয় বলে রায়ে উল্লেখ করেন আদালত। কারাদণ্ডের পাশাপাশি সব আসামিকে দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়। গত ৮ ফেব্রুয়ারি পুরান ঢাকার বকশীবাজারে স্থাপিত বিশেষ আদালতের বিচারক ড. আখতারুজ্জামান এ রায় দেন।
এমএম/জেডএ/বিএ