ফখরুলকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে ভুলে গেলেন খালেদা!
দেশের রাজনীতিতে পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবে যে ক'জনের নাম শোনা যায় তাদের মধ্যে অন্যতম বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ ২৬ জানুয়ারি, তার ৭১তম জন্মবার্ষিকী। ৭২ বছরে পা রাখলেন বর্ষীয়ান এ রাজনীতিবিদ।
প্রতিবছর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জন্মদিনকে ঘিরে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও দলের নেতাকর্মী, শুভাকাঙ্ক্ষী তাকে বিভিন্ন মাধ্যমে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান। এবারও অন্য সব ঠিক থাকলেও চেয়ারপারসনের পক্ষ থেকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা তিনি পাননি।
আজকে শুক্রবার অর্থাৎ ছুটির দিন থাকায় কিছুটা অতৃপ্তি নিয়ে জন্মদিন পালন করলেন বিএনপির এই মুখপাত্র। শুক্রবার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে জাগো নিউজের কথা হয়।
এবারের জন্মদিন কিভাবে কাটলো জানতে চাইলে তিনি জানান, আমাদের প্রোগ্রাম ছিল দু'একটা। সকালে ছিল একটা, বিকেলে একটা। আমার জন্মদিনে বিশেষ কোনো অনুষ্ঠান নেই।
বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে কথা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আজকে (শুক্রবার) আমরা ম্যাডামকে অফ ডে দেই।
১৯৪৭ সালের ২৬ জানুয়ারি ঠাকুরগাঁও জেলায় জন্মগ্রহণ করেন মির্জা ফখরুল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকার সময়ই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন তিনি। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন (পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন) সদস্য ছিলেন এবং সংগঠনটির এসএম হল শাখার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন।
১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের সময়ে তিনি সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি অর্জন করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছাত্রজীবনের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকলেও মির্জা ফখরুলের ইসলাম আলগীরের কর্মজীবন শুরু হয় শিক্ষকতায়। একাধিক সরকারি কলেজে শিক্ষকতা করেছেন তিনি।
১৯৮০-এর দশকে তিনি মূলধারার রাজনীতিতে আসেন। এর আগে তিনি ১৯৭০-এর দশকের শেষে তৎকালীন উপ-প্রধানমন্ত্রী এস এ বারির ব্যক্তিগত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ওই পদে তিনি ১৯৮২ সাল পর্যন্ত বহাল ছিলেন।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে, এমন ধারণা করেছিলেন মির্জা ফখরুল। সেই পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষকতাকেই উপযুক্ত পেশা হিসেবে বেছে নেন। কিন্তু দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে শেষ পর্যন্ত ১৯৮৮ সালে ঠাকুরগাঁও পৌরসভার নির্বাচনের মাধ্যমে ফিরে আসেন রাজনীতিতে। তারপরের বছরই তিনি যোগ দেন বিএনপিতে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২০১৬ সালে বিএনপির মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হন। এর আগে তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ছিলেন। ২০১১ সালের মার্চে বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব খন্দকার দেলওয়ার হোসেন মৃত্যুবরণ করলে তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হন। টানা পাঁচ বছর তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম এর আগে কৃষি, পর্যটন ও বেসরকারি বিমান চলাচল বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন এবং ঠাকুরগাঁও-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
ব্যক্তিগত জীবনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিবাহিত এবং দুই মেয়ের জনক। তার স্ত্রী রাহাত আরা বেগম কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিধারী। তার বড় মেয়ে মির্জা শামারুহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ালেখা শেষ করে সেখানেই শিক্ষকতা করছেন। বর্তমানে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় পোস্ট ডক্টরাল ফেলো হিসেবে কর্মরত আছেন। ছোট মেয়ে মির্জা সাফারুহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেছেন। তিনি বর্তমানে ঢাকার একটি স্কুলে শিক্ষকতা করছেন।
এমএম/জেএইচ