আওয়ামী লীগের সময় শেষ : ফখরুল
আওয়ামী লীগের সময় শেষ দাবি করে দলটির নেতাদের ‘পরকালের’ চিন্তা করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘দেশের অবস্থা শেষ। সেদিকে খেয়াল নেই। সরকারি পয়সা খরচ করে টি-শার্ট আর ক্যাপ পরিয়ে দিবস পালন করা হচ্ছে। এসব করে কোনো লাভ হবে না। সময় আপনাদের শেষ। ভোঁ ভোঁ করে লাভ নেই। পরকালের চিন্তা করুন।’
রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৩তম জন্মদিন উপলক্ষে স্বেচ্ছাসেবক দল আয়োজিত আলোচনা সভায় ও চিত্রাঙ্গণ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, ‘তারেক রহমান ১০ বছর নির্বাসিত জীবন যাবন করছেন। কেন? তার একটি মাত্র কারণ, তিনি দেশকে ভালোবাসতেন। দেশের অবস্থা পরিবর্তনের জন্য কৃষক, শ্রমিক ও মেহনতি মানুষের অবস্থার পরিবর্তনের জন্য কাজ করেছিলেন। তার পিতা জিয়াউর রহমান যেভাবে অতি অল্প সময়ের মধ্যে মানুষকে একটি সমৃদ্ধ দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন, যেভাবে তার মাতা আপসহীন নেত্রী যিনি গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে এনেছিলেন তারই উত্তরাধিকার তারেক রহমান।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে একটি স্বপ্নের সৃষ্টি করেছিলেন। যা ছিল আধুনিক বাংলাদেশ, আধুনিক গণতন্ত্রের। যে বাংলাদেশে হিংসা নেই, বিদ্বেষ নেই।’
অত্যন্ত সচেতনভাবে, সুপরিকল্পতিভাবে তারেক রহমানকে নিয়ে সারাবিশ্বে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হয়েছে দাবি করে ফখরুল বলেন, ‘এখন পর্যন্ত তার একটি সম্পত্তির হিসাব জনগণের কাছে তুলে ধরতে পারেনি। তার একটি অ্যাকাউন্টের কথা বলতে পারেনি, যেখানে কোনো অবৈধ লেনদেন হয়েছে। আপনাদের (সরকার) সব লিপিবদ্ধ হচ্ছে। কোথায় কোথায় টাকা পাচার করছেন, কীভাবে পাচার করছেন, কোথায় বেগম পল্লী গড়ে তুলছেন, সব খবর মানুষের আছে আসছে। সময় মতো প্রকাশিত হবে।’
রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়া নিয়ে সরকার ধোঁকাবাজির রাজনীতি করছে বলে অভিযোগ করেন ফখরুল। মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তিতে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি। বলেন, ‘মিয়ানমার যে দাবি করছেন রাখাইনে সন্ত্রাসী আক্রমণ হওয়ার রোহিঙ্গাদের তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে সেটা মেনে নিয়েছে। কিন্তু একবারের জন্যও বলেনি মিয়ানমারে গণহত্যা হয়েছে, তাদের জাতিগত নিধন চলছে, এ কথা একবারও উচ্চারণ করেনি। মিয়ানমার যা যা বলেছে তাই মেনে নিয়েছে। অথচ প্রধানমন্ত্রী বলছেন, এটা সবচেয়ে বড় কূটনৈতিক অর্জন।’
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘কী এমন চাপ হলো যে, আপনি (সরকার) আপনার দেশের স্বার্থটাকে বুঝে না নিয়ে মিয়ানমারের স্বার্থের কাছে নিজেদের বিক্রি করে দিলেন? চাপটা কোথায় বলুন। আসল ঘটনাটা কী বলুন। আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, এই সরকারের কোনো আত্মসম্মানবোধ নেই।’
ফখরুল বলেন, ‘তারেক রহমানের জন্মদিনে এ কথা খুব স্পষ্ট করে বলতে চাই, আগামী নির্বাচনে জনগণের ভোটে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদের (নাগরিক) স্বার্থ রক্ষার জন্য নির্বাচনে আমরা জয়লাভ করবোই। তবে আমাদের স্পষ্ট কথা আছে তা হলো- সেই নির্বাচন হতে হবে নির্দলীয় সরকারের অধীনে।’
সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহাকে দেশ থেকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে বের করে দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এখন যাকে দায়িত্ব দিয়ে রেখেছেন তিনি প্রধান বিচারপতি নন। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা আছে কোনো কারণে যদি প্রধান বিচারপতি দায়িত্ব পালন করতে না চান, পদত্যাগ করেন তাহলে সাথে সাথে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের।’
মেগা দুর্নীতি করতে সরকার মেগা প্রকল্প হাতে নিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।
স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, স্বেচ্ছাসেবক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মোস্তাফিজুর রহমান, সরোয়ার হোসেন, ইয়াসীন আলী প্রমুখ বক্তব্য দেন।
এর আগে তারেক রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে চিত্রাঙ্গণ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এমএম/আরএস