ভিডিও EN
  1. Home/
  2. রাজনীতি

‘গুম নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য জনগণের সঙ্গে প্রতারণা’

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১১:০১ এএম, ২৬ নভেম্বর ২০১৭

বিভিন্ন দেশে গুমের ঘটনার উদাহরণ টেনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে যে বক্তব্য দিয়েছিলেন তা ‘জনগণের সঙ্গে প্রতারণা’বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে সত্যকে গোপন করে অন্য দেশের উদাহরণ দিয়ে এদেশের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। এটা দুঃখজনক। প্রধানমন্ত্রীর পদে থেকে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অধিকার আপনার নেই।’

রোববার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

গত বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) জাতীয় সংসদে গুম-খুন প্রসঙ্গে বিরোধীদলের নেতা রওশন এরশাদের দেয়া বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালের একটি হিসাব টেনে বলেন, ‘যুক্তরাজ্যে ২ লাখ ৪৫ হাজার নাগরিক গুম হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থা আরও ভয়াবহ। বাংলাদেশ ৫৬ হাজার বর্গমাইলের দেশে ১৬ কোটির ওপরে মানুষ বাস করে। আমরা এত মানুষের সেবা করে যাচ্ছি। কিন্তু উন্নত দেশগুলোর জনসংখ্যা কত? উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করার পরও তাদের দেশে এত গুম হচ্ছে!’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য রোববার বলেন, ‘আজকে দেশের প্রধানমন্ত্রী স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছেন বাংলাদেশে গুমের ঘটনা ঘটেছে। সেই সঙ্গে তিনি গুমকে যৌক্তিক করার জন্য বিভিন্ন দেশের নাম উল্লেখ করে বলেছেন, সেখানেও গুম হয়।’

musharof

‘আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, সেসব দেশে এত হারে গুম হয় না। আর সেখানে যদি গুম হয় তাহলে কোনো সন্ত্রাসী বাহিনী বা প্রতিপক্ষ কাউকে জিম্মি করে চাঁদা আদায়ের জন্য গুম হয়। কোনো দেশে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে এভাবে গুমের নজির নাই। আমরা এই ধরনের বক্তব্যের নিন্দা জানাই’-বলেন খন্দকার মোশাররফ।

‘গুম-খুন-নির্যাতন বন্ধে করণীয়’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার ফোরাম নামের একটি সংগঠন।

অন্য দেশের গুমের ঘটনার সঙ্গে বাংলাদেশের গুমের ঘটনার পার্থক্য রয়েছে দাবি করে বিএনপির এ নীতি নির্ধারক বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রত্যেকটি ঘটনার সঙ্গে সরকারের বাহিনী জড়িত। এর দায় সরকার এড়াতে পারে না।’

‘২০০৯ সাল থেকে যতগুলো গুম হয়েছে তা সরকারের নির্দেশে তার প্রশাসন তাদের যে রাষ্ট্রীয় বাহিনী, তার মাধ্যমে গুম হয়েছে। আজকে সরকারের পক্ষ থেকে সাফাই গাওয়া হচ্ছে। এটা প্রমাণিত যে রাষ্ট্রযন্ত্রের সরাসরি হস্তক্ষেপে ২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত সাড়ে চারশ’র বেশি গুম হয়েছে। দেড় হাজারে অধিক বিনা বিচারে হত্যা হয়েছে’,-বলেন খন্দকার মোশাররফ।

ভবিষ্যতে ‘জনগণের সরকার’ ক্ষমতায় এলে গুমের ঘটনাগুলো বিচারের আওতায় আনবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এত বড় অন্যায়, এটা কেউ সহ্য করবে না। এজন্যই আপনারা (আওয়ামী লীগ) বলেন, আগামীতে ক্ষমতায় না আসলে আপনাদের পিঠ বাঁচবে না। কারণ আপনারা জানেন, যে অন্যায় অত্যাচার, নির্যাতন, গুম ও খুন করেছেন সেজন্য আপনারা ভয় পাচ্ছেন। যদি ক্ষমতায় টিকে থাকতে না পারেন, এসব অপকর্মের খেসারত দিতে হবে। যখন জনগণের সরকার আসবে প্রত্যেকটি গুমের নির্যাতনের আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

সরকার রাষ্ট্রের তিনটি স্তম্ভ ধ্বংস করে দিয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘রাষ্ট্রের তিনটি স্তম্ভের মধ্যে নির্বাহী বিভাগকে সরকার দলীয়করণ করে ধ্বংস করে দিয়েছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদকে অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে ধ্বংস করা হয়েছে। আর প্রধান বিচারপতিকে প্রথমে অসুস্থ বানিয়ে পরে পদত্যাগে বাধ্য করার মাধ্যমে বিচারবিভাগ ধ্বংস করে দিয়েছে। উচ্চ আদালতকে নিয়ন্ত্রণ করছে। আজকে বিচার পাওয়ার আর কোনো সুযোগ নেই। এর মাধ্যমে তারা গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকতে চায়।’

আয়োজক সংগঠনের সভানেত্রী শাহনাজ আকতার বানুর সভাপতিত্বে এতে আরো বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমদ আজম খান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট রফিক সিকদার প্রমুখ।

এমএম/জেডএ/আইআই

আরও পড়ুন