আ.লীগই জাতিকে বড় বড় অর্জন এনে দিয়েছে : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাঙালি জাতি আপন মহিমায় বিশ্বব্যাপি উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছে। আওয়ামী লীগই বাঙালি জাতির জন্য সব থেকে বড় বড় অর্জন এনে দিয়েছে। সে জন্য আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতা কর্মী ও দেশবাসীকে অভিনন্দন জানাই। দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শত অপপ্রচার ও প্রতিকূলতাসহ অনেক কিছু আওয়ামী লীগ মোকাবিলা করেছে।
মঙ্গলবার সকালে জাতীয় সংসদের বৈঠকে আওয়ামী লীগের ৬৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া এক বক্তব্যে একথা বলেন তিনি। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বৈঠকের সভাপতিত্বে ছিলেন।
শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে আওয়ামী ইতিহাস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আন্দোলন সংগ্রামের চিত্র তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতা হোসনে শহীদ সোহরাওয়ার্দী, উপনেতা মাওলানা ভাসানী, সামছুল হকসহ সকল নেতাদের শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। কোনো আত্মত্যাগ বৃথা যায় না। জাতির পিতা বলেছিলেন মহান অর্জনের জন্য মহান ত্যাগের প্রয়োজন। আওয়ামী লীগ চিরদিন ত্যাগস্বীকার করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর প্রান্তরে সিরাজউদ্দৌল্লার পতন হয়েছিল। আর আওয়ামী লীগের জন্ম হল সেই ২৩ জুন। বাংলার যে স্বাধীনতার সুর্য অস্তমিত হয়েছিল সেই স্বাধীনতার সূর্য উদিত করার জন্যই যেন আওয়ামী লীগের জন্ম।
তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার সময় যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৪৮ সালে ভাষা আন্দোলনের শুরু। সেই সময়ই বঙ্গবন্ধু ছাত্রলীগ গঠন করেছিলেন। ১৯৪৯ সাল থেকে বাঙালি জাতির অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন শুরু হয়। এসময়ও আওয়ামী লীগের সক্রিয় ভুমিকা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের ইতিহাসই হচ্ছে বাঙালি জাতির অর্জনের ইতিহাস, অনেক ত্যাগ তিতীক্ষার ইতিহাস। এই আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা হয় অসম্প্রাদায়িকতা প্রতিষ্ঠার জন্য। এই মাটিতে প্রতিটি জাতি, ধর্ম, বর্ণের মানুষের অধিকার যাতে প্রতিষ্ঠা হয়, অসাম্প্রদায়িক চেতনায় যাতে এ জাতি এগিয়ে যেতে পারে সেজন্য আওয়ামী লীগ কাজ করছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৫৬ সালে আওয়ামী সরকার গঠন করে ২১ শে ফ্রেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ঘোষণা করে। শিল্প, সাহিত্য, কলা প্রতিটি বিভাগে যে অগ্রযাত্রা সব অর্জন কিন্তু আওয়ামী লীগের সময়ই হয়েছে। এরপর ৫৮তে মার্শাল ল দিয়ে জনগণের অধিকার কেড়ে নেওয়া হলেও বঙ্গবন্ধু কিন্তু থামেননি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে মানুষের আস্থা বিশ্বাস সবসময় আওয়ামী লীগ অর্জন করেছেন নিজেদের ত্যাগের বিনিময়ে। বঙ্গবন্ধুর আগে থেকেই পরিকল্পনা করেছিলেন যে বাংলাদেশকে স্বাধীন করবেন। অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ কিন্তু বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে চলেছে। স্বাধীনতার পর মাত্র তিন বছরে বঙ্গবন্ধু শেষ মুজিবুর রহমান সব কাজ করে গিয়েছিলেন দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেগুলো শুধু বাস্তবায়ন করতে পারেননি তিনি।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ শত প্রতিকূলতার মধ্যে তৃনমূলের নেতাকর্মীদের কারণে টিকে গেছে বলে জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ একটি আদর্শের উপর গড়ে উঠায় এটিকে শেষ করা সম্ভব নয় বলে তিনি জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ এর পর এই দলটিকে শেষ করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতা কর্মীরাই এই দলটিকে সুসংগঠিত রেখেছে। ১৯৭৫ থেকে ৯৬ পর্যন্ত সাধারণ মানুষ কী পেয়েছে? তাদের কোনো অধিকার ছিল না। কিন্তু আওয়ামী লীগ আজীবন মানুষের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছে। ৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ২১ বছর পর জনগণ উপলব্ধি করতে পেরেছিল আওয়ামী লীগ জনগণের সেবক। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার সময় বিশ্বব্যাপি অর্থনৈতিক মন্দা থাকা সত্ত্বেও এ দেশ এগিয়ে গেছে। জনগণ আমাদের উপর দায়িত্ব দিয়েছিলেন। সেই দায়িত্ব আন্তরিকতা সাথে পালন করে যাচ্ছি। এই দেশকে যাতে উন্নত সমৃদ্ধ করতে পারি সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার জন্য বহু চেষ্টা করা হয়েছে । কিন্তু কেউ সফল হয়নি, হবেও না। এই উপমহাদেশে যে কয়েকটি পুরোনো দল আছে তার মধ্যে আওয়ামী লীগ একটি। উজানে নাও ঠেলে ঠেলেই অভিষ্ঠ লক্ষ্যে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। প্রতিটি ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ এগিয়ে গিয়ে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
তিনি বলেন, ক্রিকেটে বাংলাদেশ সফলতা অর্জন করেছে, আরো করবে। বাংলাদেশ এশিয়ার একটি শান্তিপূর্ণ দেশে রূপ নেবে। উন্নত দেশ হবে ।
# প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
এইচএস/এআরএস/পিআর/এসআরজে