ভিডিও EN
  1. Home/
  2. রাজনীতি

যে কারণে থমকে আছে বিএনপি`র পুনর্গঠন

প্রকাশিত: ১১:২৮ এএম, ২২ জুন ২০১৫

ঢাকা ও চট্টগ্রামের তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পর অতীতের সব ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন করে সরকারবিরোধী আন্দােলন বেগবান করতে দলকে পুনর্গঠনের কথা বলেছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। সেসময় নতুন কমিটিকে তারুণ্য নির্ভর করার কথাও বলেছিলেন তিনি। তবে শিগগিরই কমিটি গঠনের কথা বলা হলেও সেই প্রক্রিয়া এখনও থমকে আছে। কবে নাগাদ এই প্রক্রিয়া শুরু হবে তা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে। জানা গেছে, নিজ দলের নেতাদের উপর নানা কারণে অবিশ্বাস ও আস্থাহীনতাই এই প্রক্রিয়ায় স্থবিরতার কারণ।

সূত্রমতে, দলের মধ্যে বিশ্বস্ত নেতাদের অভাবের কারণে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এখন কাকে নিয়ে পথ চলবেন তা নিয়ে এক ধরণের শঙ্কার মধ্যে পড়েছেন। নীতি-নির্ধারনী ফোরাম, তথা স্থায়ী কমিটির কয়েকজন নেতাকে এখন আগের মত আর বিশ্বাস করতে পারছেন না তিনি।

এর আগে যাদের উপর ভরসা করতেন সে সব নেতারা এখন বলছেন খালেদা জিয়াকে দিয়ে কিছু হবে না। বিএনপির কয়েকজন নেতাদের ফাঁস হওয়া ফোনালাপে এমন বক্তব্যই শোনা গেছে। এখন এসব নেতাদের ব্যাপারে খালেদা জিয়া নিজেই সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, চেয়ারপারসনের একক সিদ্ধান্তে দলকে পুনর্গঠন করা হবে। যারা শহীদ জিয়ার আদর্শে রাজনীতি করেন তাদেরই দলে জায়গা হবে। যাদের দলের জন্য সত্যিকার অর্থে ত্যাগ রয়েছে, দলের জন্য যাদের শ্রম রয়েছে, কষ্ট রয়েছে, তারা নেতৃত্বে আসবেন। দলে বিতর্কিত এবং নিষ্ক্রিয় নেতাদের আর ঠাঁই হবে না বলে জানিয়েছেন দলের চেয়ারপারসন।

এদিকে দলের বেশিরভাগ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা-মোকদ্দমার কারণে তারাও সক্রিয় হয়ে উঠতে পারছেন না। দল পুনর্গঠনে যাদের উপর ভরসা রাখা যায় সেইসব নেতারাও সময়ে সময়ে বেঁকে বসছেন। ফলে খালেদা জিয়াও ভরসা করে কাউকে দায়িত্ব দিচ্ছেন না।

একদিকে আছে বিএনপি নেতাদের অসহযোগিতা, অন্যদিকে দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী ও গতিশীল করার ক্ষেত্রেও দেখা দিয়েছে জটিলতা। ফলে বিএনপির প্রতিটি স্তরে চলছে এক ধরণের সংকট, অস্থিরতা ও নিরবতা।

বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম বলেন, চেয়ারপারসন আন্দোলনমুখী কমিটি করতে চাচ্ছেন। আন্দোলনের জন্য এবার লড়াকু সৈনিক বেছে নিবেন তিনি। খালেদা জিয়া আবারো নামবেন রাজপথে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দলের পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে বিএনপির ৭৫টি সাংগঠনিক জেলা কমিটি ভেঙ্গে দেওয়া হতে পারে। নিষ্ক্রিয় ও অসুস্থ নেতাদের বাদ দিয়ে যোগ্য ও তরুণদের গুরুত্বপূর্ণ পদে তুলে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

বিএনপির পুনর্গঠন সর্ম্পকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, জিয়াউর রহমানের আদর্শে কষ্টিপাথরে যাচাই করেই দলকে পুনর্গঠন করা হবে। চেয়ারপারসন সেভাবেই কাজ শুরু করেছেন। সকলের মতামত নিচ্ছেন। ত্যাগী, সাংগঠনিকভাবে দক্ষ, মেধাবী ও আন্দোলন-সংগ্রামে সাধারণ কর্মীদের পাশে থাকে এমন নেতা-কর্মীদের নিয়েই দল পুনর্গঠন করা হবে।

প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভরাডুবির পর দল পুনর্গঠন করে বিএনপি। ২০০৯ সালের জুন মাসে একসঙ্গে ৭২টি সাংগঠনিক জেলা কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। ওই বছরের ৮ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিএনপির ৫ম জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। পরের বছর জানুয়ারিতে গঠন করা হয় ৩৮৬ সদস্যবিশিষ্ট জাতীয় নির্বাহী কমিটি। তিন বছর মেয়াদি এ কমিটির সময় আড়াই বছর আগেই শেষ হয়েছে।

এমএম/আরএস/আরআই/এসআরজে