রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিএনপির ঐক্যের কথা তথাকথিত : কাদের
ক্ষতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিএনপি তথাকথিত জাতীয় ঐক্যের কথা বলছে।
শুক্রবার সকালে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে তিনি এ কথা বলেন। ‘বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস-২০১৭’ উপলক্ষে ‘যানজট ও দূষণমুক্ত নগরায়ণের প্রয়োজন : গণপরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন ও ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে সেখানে যোগ দেন সেতুমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে সো কলড জাতীয় ঐক্য ডেকে লিপ সার্ভিস (বক্তৃতা সর্বস্ব) দিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। শুধু সরকারের সমালোচনা করলেই কি জাতীয় ঐক্য হয়ে যায়? জাতীয় ঐক্য কী তাদের মুখে না মনে, আমি জানতে চাই।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আমি তো ওখান থেকে এলাম, তাদের (বিএনপি নেতাদের) কি এ ধৈর্য আছে? তাদের কি এই মানসিকতা আছে বা চেতনা আছে? তারা যা করছে তা হলো দায়সারা। শুধু লোক দেখানো একটা প্রতারণা। তাদের মুখের কথা আর মনের কথা এক নয়। এটা এতদিনে প্রমাণ হয়ে গেছে। যেখানে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া হচ্ছে, স্যানিটেশন দেয়া হচ্ছে, মেডিকেশন দেয়া হচ্ছে, খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে বাস্তবে ওই উখিয়া টেকনাফ গিয়ে পরিস্থিতি দেখে কথা বলছে না। সুতরাং আমি বলবো তারা লিপ সার্ভিস দিচ্ছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সারা দুনিয়া বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনার মানবিক ও সাহসী ভূমিকার প্রশংসা করছে। বাংলাদেশের জনগণ, বিশ্বের জনগণ বর্তমান সরকারের প্রসংশায় পঞ্চমুখ। ঠিক তখন বিএনপি ঢাকায় বসে বসে টেলিভিশনের ক্যামেরার সামনে লিপ সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছে। তারা প্রথম প্রথম বলছিল যে তাদের ত্রাণ দিতে দেয়া হচ্ছে না। আমি যেদিন যাই সেদিন একই প্লেনে বিএনপি নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ছিলেন।
‘আমি বললাম, আমি এখানে আছি আপনাদের কে বাধা দেয় জানাবেন। আমি তদের আমার নম্বর দিয়েছি। আমার সঙ্গে জাহাঙ্গীর কবির নানক ছিল। তার নম্বর তারা নিয়ে গেছেন এবং পরেরদিন কয়েকবার তাদেরকে আমি জিজ্ঞেস করেছি কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না। তারা একটা ক্যাম্প করেছেন। আমি সেটার সামনে দিয়ে গিয়েছি, তারা বলেছেন যে কেউ তাদের বাধা দিচ্ছে না।’ -বলেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি আরও বলেন, সেখানে ৪/৫ লাখ লোক রয়েছে। তাই তাদের মাঝে ১০/২০ ট্রাক ত্রাণ নিয়ে গেলে তা তো লুট হয়ে যাবে, যদি নিয়ম না মানেন। আপনার নিজেরও নিরাপত্তা থাকবে না। কী যে অবস্থা তা ভাবতেও পারববেন না। ঢাকায় বসে প্রেস রিলিজ দেয়া যায়, মায়া কান্না দেখানো যায়।
সরকারে এ মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি মনের দিক থেকেও দরিদ্র। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান করে বিশ্ব দরবারে জনমত গড়ে তুলে তাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং জাতিসংঘে যে দৃঢ় বক্তব্য রাখলেন তাতে আমরা আশা করছি বিশ্বের নামিদামি দেশগুলো মিয়ানমারের এই অমানবিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবে। আমি মনে করি বিএনপির বাস্তবে বক্তৃতা সর্বস্ব কথা বাদ দিয়ে কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেবে। যে নেতিবাচক পথ বেছে নিয়েছে তা থেকে ফিরে আসবে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এম এন ছিদ্দিক, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউএনডিপির কান্ট্রি ডিরেক্টর সুদীপ মুখার্জী, নিরাপদ সড়ক চাই সংগঠনের ইলিয়াস কাঞ্চন। ঢাকা মেট্রোপলিন পুলিশ, নিরাপদ সড়ক চাই, পারিবেশবাদী আন্দোলনসহ ৪৬টি সংগঠন যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এইউএ/আরএস/এমএমজেড/এমএস/আইআই