রোহিঙ্গাদের সহায়তার নামে চাঁদাবাজি সহ্য করা হবে না
মিয়নামারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে আসা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তার নামে চাঁদাবাজি সহ্য করা হবে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
শুক্রবার সকালে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটির বৈঠকে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, রোহিঙ্গাদের সাহায্যের জন্য চাঁদাবাজির মহোৎসব যেন না হয়, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। এক্ষেত্রে চাঁদাবাজি বা জোর-জবরদস্তি সহ্য করা হবে না। এটি তো মানবিক ব্যাপার, যারা স্বেচ্ছায় সাহায্য করবে সেটি আমরা গ্রহণ করবো।
বিএনপির ত্রাণ কার্যক্রমে বাধা দেয়ার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, বিএনপি তো ত্রাণ দিতে যায় না, তারা যায় কয়েকটা নিউজ আর ছবির জন্য। এরপর দলীয় কার্যালয়ে এসে সংবাদ সম্মেলন করে।
বিএনপির ত্রাণের পরিমাণ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, কয়েকটা ট্রাক সাজিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। এর ভেতরে কি আছে, না আছে অনেক কথাই আছে। এসব আমি বলতে চাই না। অনেক কিছু থাকলেও থাকতে পারে। এতে বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই।
শৃঙ্খলা না মানায় বিএনপি বাধার সম্মুখীন হয়েছে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, একটা রুলস আছে, জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে কমিটির মাধ্যমে সবাই ত্রাণ দিচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীসহ আমি নিজেও সেভাবে দিয়েছি। কিন্তু বিএনপি নিয়ম মানতে চায় না।
কাদের বলেন, তারা নিয়ম মানলে তারা যাওয়ার আগেই ত্রাণ পৌঁছে যেত। এটা মানবিক সাহায্যের বিষয়, এখানে আমরা রাজনীতি করবো কেন? লাখ লাখ মানুষের এই সংকট আমরা একা মোকাবেলা করবো সেটাতো ভাবিনি। কেনো আমরা সেখানে অমানবিক আচরণ করবো? বিএনপি সেখানে রাজনীতি নিয়ে গেছে। না হলে নিয়ম মানবে না কেন?
ত্রাণ বিতরণে কমিটি গঠনের বিষয়ে তিনি বলেন, শৃঙ্খলা না রাখলে সব লুটপাট হয়ে যেতো। যারা বিতরণ করতে যেতো, তাদের জীবনও বিপন্ন হতে পারতো। এটা ঢাকায় বসে বোঝা যাবে না। অথচ বিএনপি সেখানে রাজনীতিতে নিয়ে গেছে। সস্তা রাজনীতি সবক্ষেত্রে করা উচিত না।
তিনি বলেন, প্রায় পাঁচ লাখের কাছাকাছি রোহিঙ্গা শরণার্থীর ঢল বাংলাদেশে এসেছে। রাখাইনে নতুন করে সেনা অভিযানের খবর আমরা পাচ্ছি। বন্যার ক্ষয়ক্ষতি এখনও আমরা কাটিয়ে উঠতে পারিনি। এরপর বর্তমান সরকারের সময়ে আমাদের উপর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ আসলো রোহিঙ্গাদের নিয়ে। আমরা চ্যালেঞ্জগুলো ঠাণ্ডা মাথায় অতিক্রণ করছি।
কাদের বলেন, এ সংকট কত দীর্ঘায়িত হবে তা আমরা জানি না। তবে আশার কথা হচ্ছে জাতিসংঘ, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ভারতসহ বিশ্ব জনমত আমাদের পক্ষে। আমরা আশা করছি চীনকেও পাশে পাবো।
আন্তর্জাতিক চাপের মুখে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের একটা শক্তিশালী টিম চীন যাচ্ছে। সেখানে দ্বিপাক্ষিক বিষয় ছাড়াও অবশ্যই রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনা হবে।
আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীর সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ ও আরও অনেকে।
এইউএ/এআরএস/এমএস/এমএস