ভিডিও EN
  1. Home/
  2. রাজনীতি

জিয়ার পরিবারই ‘জিয়া হত্যা’র বিচার চায় না : আইনমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৩:১৮ পিএম, ১৯ আগস্ট ২০১৭

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, জিয়ার পরিবারই জিয়াউর রহমান হত্যা মামলার বিচার চায় না। এর কারণ তারা আইনের শাসনে বিশ্বাসী নয়।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার তদন্তে এসেছে জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন কিন্তু তিনি মামলা দায়েরের আগেই মারা যাওয়ায় তাকে আসামি করা হয়নি।

বিদেশে পালিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে দণ্ড কার্যকরের বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিরা যে গর্তেই পালিয়ে থাকুক না কেন তাদের খুঁজে বের করে এনে সাজা কার্যকর করা হবে।

শনিবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পথচলা ও প্রতিবন্ধকতা’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান আলোচক হিসেবে এমন মন্তব্য করেন তিনি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সহযোগিতায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা কেন্দ্র এই সেমিনারের আয়োজন করে।

আনিসুল হক বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবার নির্মমভাবে নিহত হওয়ার পর দীর্ঘ একুশ বছরেও কোনো সরকারই নৃশংস ওই হত্যাকাণ্ডের বিচারের জন্য কোনো মামলা করেনি বরং ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে বিচারের পথ বন্ধ করে রেখেছিল। শুধু তাই নয়, হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের পৃষ্ঠপোষকতা করা হয়েছিল। খুনিদের বিদেশি মিশনে চাকরি দেয়া হয়েছিল। খুনের আলামত নষ্ট করা হয়েছিল। ফলে খুনিরা বিদেশে শক্তভাবে শিকড় গেঁড়েছে এবং তাদের ফিরিয়ে আনতে বেগ পেতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, খুনি নূর চৌধরী বর্তমানে কানাডায় অবস্থান করছেন। তিনি কানাডায় অবস্থানের জন্য সেখানকার আদালতে আবেদন করে হেরে গেছেন, এখন শুধু একটি গ্রাউন্ডে নূর চৌধুরী কানাডায় অবস্থান করছেন। সেটি হলো, তিনি দেশটির সরকারের কাছে আবেদন করে বলেছেন যে, তাকে বাংলাদেশ ফেরত পাঠালে ফাঁসি দেয়া হবে। কানাডায় যেহেতু মৃত্যুদণ্ড নিষিদ্ধ তাই দেশটি বাংলাদেশকে বলেছে, তাকে ফেরত দিলে মৃত্যুদণ্ড দেয়া যাবে না।

মন্ত্রী প্রশ্ন রাখেন, এই শর্ত কি মানা সম্ভব? তাকে তো আমাদের উচ্চ আদালত মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। এরপরও সরকার তাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।

আনিসুল হক বলেন, কে এম রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয়ে আছেন। তাকে ফেরত আনার জন্য আদালতে রিভিউ করা হয়েছে এবং আইনজীবী নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিচার বাংলাদেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র- উল্লেখ করেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিচার বন্ধ করতে যারা আইন প্রণয়ন করেছিল বাংলাদেশের জনগণ তাদের শাস্তি দেবেন বলে আমার বিশ্বাস। কেবল আদালতেই সবকিছুর বিচার হয় না। কিছু কিছু বিচার সমাজেও করতে হয়। কারণ সমাজেরও কিছু দায়িত্ব আছে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার রহস্য উন্মোচনে আরও গবেষণা ও আলোচনা হওয়া উচিত।

এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড প্রতিরোধ করতে অনেকেই তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন। তারা কেন ব্যর্থ হয়েছেন এ প্রশ্নের জবাব তাদেরকেই দিতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার সাজাপ্রাপ্ত খুনি যাদের সাজা কার্যকর হয়েছে, তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্তের জন্য আইন প্রণয়নের কাজ চলছে। যারা পলাতক রয়েছেন, তাদের সম্পদও বাজেয়াপ্তের জন্য নতুন করে আইন প্রণয়নের প্রয়োজন নেই। তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্তের জন্য আদালতের আদেশ রয়েছে এবং সেই আদেশ অনুযায়ী কয়েকজনের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, জাতীয় সংসদ সদস্য বেগম ফজিলাতুন নেসা বাপ্পি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর দেলোয়ার হোসেন, দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক স্বদেশ রায় এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা কেন্দ্রের ট্রাস্টি রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক আলোচনায় অংশ নেন।

এফএইচ/এমএআর//আইআই

আরও পড়ুন