‘জনগণকে বিভ্রান্ত করা আ.লীগের স্বভাবজাত কৌশল’
মূল বিষয়ে উল্টাপাল্টা কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করা আওয়ামী লীগের স্বভাবজাত কৌশল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
‘জিয়াউর রহমানের শাসনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্নই আসে না’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বহুদলীয় গণতন্ত্র, মানুষের কথা বলার অধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেয়া অবৈধ হতে পারে না।
জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার দুপুরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে এসে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, জিয়াউর রহমানের সময়কার বিধিমালা অনুসরণ করেই আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন করেছে। পরবর্তীকালে সংসদ নির্বাচন থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত সব রাজনৈতিক কার্যক্রম করে যাচ্ছে। ফলে জিয়ার শাসন অবৈধ হয়ে থাকলে আজকের আওয়ামী লীগও অবৈধ।
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য ফেরানো ইসির কাজ নয় বলে সিইসির মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের কাজ কী? তাদের কাজ কি শুধু সরকার যা চাইবে তা করা? নিশ্চয়ই নয়।’
তিনি বলেন, সংবিধানে বলা আছে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি সুন্দর সহায়ক পরিবেশে ভোট গ্রহণ নিশ্চিত করা।
দেশে একটি রাজনৈতিক সঙ্কট আছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে নিরপেক্ষ নির্বাচন হওয়া সম্ভব নয়। বিশেষ করে এ সরকারের অধীনে।
তিনি আরও বলেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। অথচ দুর্ভাগ্যজনকভাবে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে সেই ব্যবস্থা বাতিল করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন ব্যবস্থা চালু করেছে। জাতীয় নির্বাচনের সময় নিরপেক্ষ সরকার না থাকলে, নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়।
সংলাপের ভবিষ্যত এবং বিএনপির মূল এজেন্ডা কী হবে- জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, এর ভবিষ্যত কী হবে তা সহজেই বোঝা যাচ্ছে। সিইসি তো বলেই দিয়েছেন তিনি শুধু শুনবেন, এরপর সিদ্ধান্ত নেবেন। আর বিএনপি সংলাপে কী ধরনের প্রস্তাব দেয় তা সংলাপকালীন সময়ে জানতে পারবেন।
বন্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি বন্যাদুর্গতদের ত্রাণ দিচ্ছে না বলে ক্ষমতাসীনদের বক্তব্য কেউ বিশ্বাস করবে না। কারণ আমরাই প্রথম বন্যাদুর্গতদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ শুরু করেছি। ইতোমধ্যে আমরা ত্রাণ কমিটি গঠন করেছি এবং আমাদের পক্ষে যতটা সম্ভব বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে রিভিউ অবশ্যই করতে পারে, সেই অধিকার তাদের আছে। এ রায় নিয়ে তারা একটা ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করছে। ফলে রাষ্ট্র ও গণতন্ত্র বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জোর করে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করেছেন। শুধু তাই নয়, আইনমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীও রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন, এতে সমগ্র জাতি উদ্বিগ্ন। তারা বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ধ্বংস করতে চায়।
বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল, সাংগঠনিক ইয়াসিন আলীসহ সংগঠনের নেতাকর্মীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এমএম/এমএমজেড/এমএআর/আরআইপি