ভিডিও EN
  1. Home/
  2. রাজনীতি

‘পরিস্থিতি সমাধানে বিচারপতির বাসভবনে যান কাদের’

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৮:১৭ এএম, ১৪ আগস্ট ২০১৭

ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের ফলে দেশে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তা দ্রুত সমাধানের জন্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রধান বিচারপতির বাসায় গিয়েছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ।
সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে সতীর্থ-স্বজন আয়োজিত ‘তিনিই বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনার ও আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। হানিফ বলেন, গত পরশু দিন প্রধান বিচারপতির বাসভবনে গিয়েছিলেন আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক। এটা নিয়ে দেখলাম হঠাৎ করে বিএনপির পক্ষ থেকে তীব্র আপত্তি এবং অনেক শোরগোল।

তিনি বলেন ‘প্রধান বিচারপতির বাসায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের যাওয়াটা অন্যায় হয়েছে বলে ওনারা দাবি করছেন। কিন্তু বিচারপতির বাসায় যখন যুদ্ধাপরাধী সাকা চৌধুরীর পরিবার গিয়েছিল, তখন তো কোন কথা বলেননি। বিচারাধীন অবস্থায় একজন যুদ্ধাপরাধীর পরিবার কিভাবে বিচারপতির সঙ্গে দেখা করেন? আপনারা কি এটাই প্রমাণ করতে চান এই বিচারপতিরাই আপনাদের আপন। এরা স্বাধীনতাবিরোধীদের পক্ষে কাজ করবে, সেজন্য কি সব সময় আপনাদের নিজের বলে ভাবতে চান? আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গিয়েছিলেন বলেই আপনাদের গাত্রদহ শুরু হয়েছে।’

হানিফ বলেন, আমরা চাই বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করুক। আমরা চাই উদ্ভূত যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তা দ্রুত সমাধান হোক। সেজন্য আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক গিয়েছিলেন। এটা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করার কোন সুযোগ নেই। তিনি বলেন, ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে দেশে নতুন করে একটি বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের মধ্য দিয়ে দেশের কিছু রাজনীতিবিদ অত্যন্ত উৎসাহিত হয়ে উঠেছেন। ঘরে নিয়ে গিয়ে অভিনন্দন জানাল। আমরা অবাক হয়ে যাই। যারা দেশে গণতন্ত্রের কথা বলেন, জনগণের ক্ষমতায়নের কথা বলেন, তারা কি করে এই রায় নিয়ে উৎসাহিত হতে পারেন? বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা আমাদের সংসদের হাতে ছিল। সংসদ হচ্ছে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি দ্বারা গঠিত। আমাদের সংবিধানে পরিষ্কারভাবে বলা আছে, এ দেশের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ। জনগণ যেখানে ক্ষমতার মালিক, সেই জনগণ দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে জাতীয় সংসদ। সেই সংসদের হাতে ক্ষমতা থাকা মানে জনগণের হাতে ক্ষমতা থাকা।

তিনি বলেন, আজকে বিচারপতি অপসারণের এই রায়টা বাতিল করে দিয়ে মূলত জনগণের হাত থেকে ক্ষমতা কেড়ে নেয়ার একটি রাস্তা তৈরি করা হলো। যতদিন সংসদের হাতে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা ছিল, ততদিন একজন বিচারপতিকেও অপসারণ করা হয়নি। অথচ জিয়াউর রহমানের সময় যে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল করা হয়েছিল,তাকে পাশ কাটিয়ে অনেক বিচারপতিকে অপসারণ করা হয়। তখন এই সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কোন ভূমিকা দেখা যায়নি।

আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, আজকে এই রায়কে কেন্দ্র করে কিছু পর্যবেক্ষণ দেয়া হয়েছে যে পর্যবেক্ষণগুলো অত্যন্ত আপত্তিকর এবং দুঃখজনক। যিনি রায় দিচ্ছেন তিনি শপথ নিয়েছিলেন পবিত্র সংবিধানের মর্যাদা সমুন্নত রাখার, পবিত্র সংবিধান রক্ষা করার। সেই দায়িত্ব নিয়ে মীমাংসিত বিষয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করে দেশের ভিতর একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা সংবিধানের দায়িত্ব পালন করার পরিপন্থী।এটি কার স্বার্থে? কি কারণে আজকে মুক্তিযুদ্ধের মীমাংসিত বিষয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে?

রায়ের ভেতরে ফাদার্স অব দ্য নেশন লেখা আছে উল্লেখ করে হানিফ বলেন, ‘ফাদার্স মানে বাবা কয়জন হয়? কার কয়জন বাবা এটা পড়ার পর তো অবাক হতে হয়। বাবা তো একজনই হয়, পিতা একজনই হয়। যারা একাধিক পিতার স্বপ্ন নিয়ে এই নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন, তাদের উদ্দেশ্য নিয়ে জাতি আজ শঙ্কিত। ’

প্রধান বিচারপতিকে উদ্দেশ করে হানিফ আরও বলেন, আপনি বলেছেন সংসদ সদস্যরা অপরিপক্ক। সংসদ সদস্যদের ভাবতে হবে তারা সংসদ সদস্য হওয়ার যোগ্য কিনা। আপনি কার দ্বারা নিয়োগপ্রাপ্ত? এই সংসদ সদস্যদের দ্বারাই, নির্বাচিত রাষ্ট্রপতির দ্বারা আপনি নিয়োগপ্রাপ্ত। সংসদ সদস্যরা যদি অপরিপক্ক, অযোগ্য হয়, তাহলে রাষ্ট্রপতিও অপরিপক্ক, অযোগ্য। অপরিপক্কদের বা অযোগ্যদের নিয়োগকৃত আপনারাও তো তাহলে অপরিপক্ক হিসেবে জনগণের কাছে চিহ্নিত হবেন। এই কথাগুলো বলে কেন বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন।

সাংবাদিক রাহাত খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ।

এমএএস/এসআর/ওআর/আইআই

আরও পড়ুন