‘আদালত ক্ষমতায় বসাবে এমন দিবাস্বপ্ন ভেঙে যাবে’
সংসদ ভেঙে দেয়া, বিদেশিরা অথবা আদালত ক্ষমতায় বসাবে এমন দিবাস্বপ্ন যারা দেখছেন, তাদের সেই রঙিন স্বপ্ন তাসের ঘরের মতো ভেঙে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের জন্মদিন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ আয়োজিত ছাত্রী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির আন্দোলন এখন টেমস নদীর তীরে খালেদা জিয়ার ভ্যানেটিব্যাগে। আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে ষড়যন্ত্রের পথে হাঁটছেন। কাদের নিয়ে ষড়যন্ত্র করছেন, সে খবর আমরা জানি। আমরা সময় মতো তার জবাব দেব।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আদালত ক্ষমতায় বসাবে, বিদেশিরা ক্ষমতায় বসাবে ঐ রঙিন খোয়াব এদেশে সফল হবে না। ক্ষমতায় বসাতে পারে এ দেশের জনগণ। সেই শক্তি শেখ হাসিনার সঙ্গে আছে। কোনো ষড়যন্ত্র আমাদের উন্নয়নের মহাসড়কে চলার পথে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারবে না।’
তিনি বলেন, তারা আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে শেখ হাসিনার সরকারকে হটাতে ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। জনগণের নির্বাচিত সংসদ। নির্বাচনে আপনারা আসেননি, সেটা কি নির্বাচনের দোষ? সহায়ক সরকার হবে শেখ হাসিনা সরকার। নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। এটাই সংবিধান। আমরা সংবিধানের বাইরে যাব না।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘ঈদের পরে আন্দোলন, কত ঈদ চলে গেল। আন্দোলন করবেন কেমন করে? আন্দোলন করতে হলে জনগণ লাগবে। জনগণ তো শেখ হাসিনার সঙ্গে। জনগণ আপনাদের আন্দোলনে নেই।’
কাদের বলেন, ‘আন্দোলনের ডাক দিচ্ছেন, কেউ সাড়া দিচ্ছে না। যিনি ডাক দিয়েছেন, তিনি টেমস নদীর পাড়ে। চিকিৎসার নামে চলে গেছেন, বসে বসে কি করছেন সবাই জানে। আন্দোলন এই বছর, না ঐ বছর মানুষ বাঁচে কয় বছর?’
তিনি বলেন, ‘সময়ের পরিবর্তনে, বাস্তবতার প্রয়োজনে আমাদের কৌশল পরিবর্তন হতে পারে। কিন্তু আমাদের বিশ্বাসের জায়গা থেকে এক চুলও আমরা সরে যাইনি। মরণের ভাগাড়ে দাঁড়িয়ে আমরা বার বার জীবনের জয়গান গেয়েছি।’
কাদের বলেন, ‘এ দেশের রাজনীতিতে মুজিব পরিবারই হচ্ছে সততা, আদর্শের প্রতীক। চরিত্র হননের ছোরা দিয়ে এই পরিবারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা কম হয়নি। এদের কোনো হাওয়া ভবন নেই, ক্ষমতার বিকল্প সেন্টার নেই। সজীব ওয়াজেদ জয় দেশে আসেন। দুই-একটি সৃজনশীল অনুষ্ঠান ছাড়া তাকে আর কোথাও দেখা যায় না।’
তিনি বলেন, ‘আগস্ট মাসে বিলবোর্ডের নামে বাড়াবাড়িটা ছাত্রলীগ করছে না, এটা ভালো লাগছে। ছাত্রলীগ চাঁদাবাজি করে আগস্টের কর্মসূচি পালন করছে- এমন অভিযোগ পাইনি।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ছাত্রলীগের সম্মেলন যথা সময়ে হবে। অনেক সময় বাস্তব কিছু সুবিধা-অসুবিধা থাকে। সম্মেলন করার ক্ষেত্রে সাংগঠনিক কিছু ঘাটতি আছে। ঘাটতিগুলো পূরণ করতে ছাত্রলীগকে বলা হয়েছে। আর একটু সময় লাগবে। তাদেরকে কানে কানে সম্মেলনের একটা মোটামুটি সময় বলে দেয়া হয়েছে। দেখবেন হঠাৎ করে ছাত্রলীগের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা হয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ছাত্রলীগকে আমরা সুনামের ধারায় পরিচালিত করার চেষ্টা করছি। বিশ্বজিৎ হত্যায় দণ্ডিত রাজনের মতো কর্মী ছাত্রলীগের দরকার নেই। বগুড়ার তুফান সরকারের মতো তুফান কর্মী আমাদের কোনো প্রয়োজন নেই।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসানের সভাপতিত্বে সমাবেশ সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন শহীদ সন্তান ডা. নুজহাত চৌধুরী, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন প্রমুখ।
এইউএ/এসএইচএস/এমএস