‘আ.লীগের রূপরেখা বাস্তবায়নে ইসির রোডম্যাপ’
আওয়ামী লীগের রূপরেখা বাস্তবায়ন করতেই নির্বাচন কমিশন (ইসি) এই রোডম্যাপ দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত ‘নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠনে নাগরিক প্রত্যাশা' শীর্ষক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক জোট এ সভার আয়োজন করে।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, নির্বাচন কমিশনের দেয়া এ রোডম্যাপের আগে সহায়ক সরকারের বিষয়ে ফয়সালা করতে হবে। এ ফয়সালা হতে পারে টেবিলে, ফয়সাল হতে পারে মাঠে। তবে আমরা চাই সহায়ক সরকারের এ ফয়সালা হোক শান্তিপূর্ণভাবে।
একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আবারও একটা নৈরাজ্যের সৃষ্টি করতে চায় আওয়ামী লীগ মন্তব্য করে তিনি বলেন, নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী, নিজেদের সুবিধার জন্য নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের রদবদল করা হচ্ছে। কিন্তু কমিশন তা কিছুই জানে না। এ রকম কমিশনের হাতে কখনও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। আমরা তা কখনই বিশ্বাস করি না।
সংবিধানের বাইরে কিছুই করা যাবে না আওয়ামী লীগ নেতাদের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, আওয়ামী লীগ নেতারা বলা শুরু করেছেন সংবিধানের বাইরে কিছুই করা যাবে না। কিন্তু এ দেশে তো সংবিধানের বাইরেও নির্বাচন হয়েছে।
সংবিধান মানুষের জন্য, সংবিধানের জন্য মানুষ নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী তো ১৯৯৬ সালেই এদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজনীয়তা উপলদ্ধি করেছিলেন। কিন্তু আজ তিনি ক্ষমতায় থাকার জন্য, নিজেদের স্বার্থের জন্য সংবিধান কাটা-ছেড়া করে নিজেদের মতো করে নিয়েছেন।
তিনি বলেন, আজ যদি দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকত তাহলে নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রশ্নই থাকত না। কিন্তু সেটা তো আপনারা বাতিল করে দিয়েছেন, নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য।
খালেদা জিয়া আর দেশে ফিরবেন না ওবায়দুল কাদেরের এ বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বেগম জিয়া কবে দেশে ফিরবেন, এটা চিকিৎসকের পরামর্শের ওপর নির্ভর করবে। পালিয়ে যাওয়ার রেকর্ড তো আওয়ামী লীগের নেতাদেরই বৈশিষ্ট্য।
বেগম জিয়া লন্ডন থেকে ফিরেই সহায়ক সরকারের রূপরেখা দেবেন উল্লেখ করে বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, দেশে একটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য বেগম খালেদা জিয়া একটি সহায়ক সরকারের রূপরেখা দেবেন। এ রূপরেখা কারও পক্ষেও নয়, আবার কারও বিপক্ষেও নয়। এটি একটি সমঝোতার বা আলোচনার প্রস্তাব। সব দলের সমঝোতা না হলে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
৫ জানুয়ারির মতো দেশে আর কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, জনগণের প্রয়োজনে, জনগণ যদি চায় তাহলে এ সংবিধান পরিবর্তন করে একটি সহায়ক সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় এ দাবি নিয়ে জনগণ মাঠে নামবে। এবং তারা তাদের অধিকার আদায় করে নেবে।
আয়োজক সংগঠনের প্রধান সমন্বয়কারী হুমায়ুন কবির বেপারীর সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, আহমেদ আজম খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সুকমল বড়ুয়া প্রমুখ।
এমএম/এসআর/আরআইপি