প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফরে রিজভীর সমালোচনা
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে লাশের সংখ্যা যখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে তখন সরকারপ্রধান ভ্রূক্ষেপহীন, নিরুদ্বেগে বিদেশ সফরে বেরিয়েছেন। সরকারের জনভিত্তি ধসে গেছে বলেই জনগণের বিপদের সময় নির্লজ্জ আচরণ করছেন ক্ষমতাসীনরা।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
রিজভী বলেন, এখন বিদেশিদের মন রক্ষার জন্যই প্রধানমন্ত্রী বিদেশে ছোটাছুটি করছেন। যে সমস্ত কনফারেন্সে সচিব পর্যায়ের বা প্রতিমন্ত্রী পর্যায়ের লোক যাওয়ার কথা সেখানে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত হচ্ছেন।
তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতবিক্ষত দুর্গত মানুষ এবং অসংখ্য লাশের স্তূপ ডিঙিয়ে প্রধানমন্ত্রী এখন আনন্দভ্রমনে সুইডেন গেছেন। ঠিক যেমনিভাবে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ আঘাত হানার সময় তিনি অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা সফর করেছিলেন।
তিনি আরও বলেন, অথচ দেশে কোনো দুর্যোগ হলে অন্য দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা বিদেশ সফর বাতিল করে নিজ দেশে উপদ্রুত মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়ান।
বিপদের সময় নিজ দেশের জনগণকে ফেলে চলে যাওয়ায় আওয়ামী লীগের ঐতিহ্য ও ইতিহাস উল্লেখ করে তিনি বলেন, ৭১ সালেও তারা সেই ঐতিহ্যই রক্ষা করেছেন। ১/১১ এর সময়ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী সেই ট্র্যাডিশন সমানে রক্ষা করেছেন।
‘পাহাড়ধসে মাটিচাপায় নিহত মানুষ, হতভাগ্য মানুষদের প্রতি সরকারপ্রধানসহ সরকারের অবজ্ঞায় দেশবাসী ক্ষুদ্ধ’- মন্তব্য করে রিজভী অভিযোগ করেন, স্থানীয় প্রশাসনের অবহেলায় আশ্রয়কেন্দ্রে হাজার হাজার উপদ্রুত মানুষ ঠাঁই পাচ্ছে না। সেখানে এখনও কোনো ত্রাণ পৌঁছেনি। অবস্থা ক্রমাগতভাবে বেহাল হচ্ছে।
রিজভী দাবি করেন, দেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়ও সরকারপ্রধানের বিদেশ সফর চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের উপদ্রুত মানুষ, বিধ্বস্ত জনপদ ও অসংখ্য লাশকে উপহাস করারই সামিল। প্রধানমন্ত্রীর এই সফরের তেমন কোনো কূটনৈতিক তাৎপর্যও নেই।
বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীকে যার যা সামর্থ আছে, তা নিয়ে উপদ্রুত এলাকায় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ।
এমএম/এমএমজেড/জেআইএম