ঈদের পর জনগণকে রাস্তায় নামার আহ্বান খালেদার
পবিত্র মাহে রমজান শেষে ঈদুল ফিতরের পর ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ গড়ে তুলতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মতিঝিলে হোটেল পূর্বাণীতে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি- এনপিপি আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলে অংশ নিয়ে এ আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপি নেত্রী বলেন, ‘প্রতিটি মানুষের উচিত নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া যে, এ অবস্থায় কি দেশ চলবে? আমরা কি শুধু হা-হুতাশ করব?’
‘তাই রোজা ও ঈদ শেষ হয়ে গেলে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকারের জুলুম-অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে রাস্তায় শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে প্রতিবাদ করতে হবে। সেটি করলে সবাই এসে শরিক হবে।’
বিএনপি চেয়ারপারসন এজন্য ছাত্র-যুবকদের অগ্রণী ভূমিকা নেয়ার আহ্বান জানান।
‘শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী রেখে কোনো নির্বাচন মেনে নেয়া হবে না’ জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, ‘সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ঐক্যবদ্ধভাবে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে অবাধ ও সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে বাধ্য করতে হবে। যে নির্বাচন একটি সহায়ক সরকারের অধীনে হবে। হাসিনা মার্কা নির্বাচন এ দেশে হবে না। হাসিনার অধীনে নির্বাচন কেউ মেনে নেবে না।’
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গতকাল দেখলাম, আওয়ামী লীগের নারীরা বলেছেন, আমরা নির্বাচন চাই না হাসিনাকে ক্ষমতায় চাই। আমরাও হাসিনাকে চাই, কিন্তু সেটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ যাকে চাইবে তারাই আসবে।’
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির প্রসঙ্গ তুলে বিএনপিপ্রধান বলেন, ‘প্রতিনিয়ত দাম বেড়েই চলেছে। এরই মধ্যে আবারও গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। মানুষ শান্তিতে নেই। এখানও খুন-গুম-নির্যাতন চলছে। মানুষ অস্থির হয়ে উঠছে।’
আগামী বছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট ‘গরিব মারার বাজেট’ অভিহিত করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘নতুন নতুন কর-ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে।’
এ সময় ব্যাংকের আমানতের ওপর প্রস্তাবিত আবগারি শুল্কের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘তাদের তো কোনো চিন্তা নেই। কারণ তাদের টাকা দেশে নেই। সব বিদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। সুতরাং তাদের তো টাকা কাটা যাবে না।’
‘জনগণের ওপর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী অত্যাচার করছে’ দাবি করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘সব বাহিনীকে চিন্তা করতে হবে এভাবেই কি দেশ চলবে? এভাবে চলতে থাকলেও তো দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে। একটি শ্রেণি তাদের ব্যবহার করে লুটপাটের মাধ্যমে দেশটি শেষ করে দেবে।’
এনপিপির সভাপতি ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ইফতারে মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, শামসুজ্জামান দুদু, আবদুস সালাম ও শামা ওবায়েদ উপস্থিত ছিলেন।
২০ দলীয় জোট নেতাদের মধ্যে এলডিপির কর্নেল অলি আহমদ, এনডিপির খন্দকার গোলাম মোর্তজা, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) আহসান হাবিব লিংকন, সাম্যবাদী দলের কমরেড সাঈদ আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এমএম/এমএআর/আরআইপি