ভিডিও EN
  1. Home/
  2. রাজনীতি

সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ : জানে না অধিকাংশ নেতাকর্মী

প্রকাশিত: ০৬:৫৬ এএম, ১২ মে ২০১৫

অবশেষে নির্ধারণ হয়েছে খুলনা মহানগর ও জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনের তারিখ। আগামী ৬ জুন জেলা শাখা এবং পরের দিন নগর শাখার সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করেছে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি। তবে সম্মেলনের তারিখের কোন কথা জানেন না খুলনায় ছাত্রলীগের কর্ণধাররা। আর এ বিষয়টি নিয়েই চলছে দলের মধ্য জোর আলোচনা সমালোচনা।

সাধারণ এবং নেতৃত্ব প্রত্যাশী নেতাকর্মীরা বলছেন, বর্তমান যেসব নেতা পদে আছেন তারা মুখে সম্মেলনের কথা বললেও প্রকৃতভাবে তারা চাননি সম্মেলন হোক। কারণ তাতে তাদের আখের গোছানোর পথে বাধা হয়ে যাবে। ফলে সম্মেলনের বিষয়টি তারা যত পারছেন এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছেন।

এদিকে পদের আশায় থাকা নেতারা ঠিকই সম্মেলনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন। তবে সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের পদ নিয়েই সব সময় আলোচনা থাকলেও এবারে খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের এ শীর্ষ দুই পদের লোক বলতে গেলে নির্ধারণ হয়ে আছে বলে জানিয়েছে সংগঠনের একাধিক সূত্র। তবে জেলা শাখায় টানাটানি শুরু হতে পারে বলেও ধারণা তাদের।

সূত্র জানায়, বিগত ২০১০ সালের ২ অক্টোবর খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে দেব দুলাল বাড়ৈ বাপ্পীকে সভাপতি ও শেখ শাহাজালাল হোসেন সুজনকে সাধারণ সম্পাদক করে ১০১ সদস্যের স্থলে মাত্র ১১ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এর প্রায় দুই বছর পর ২০১২ সালের ২ জুন ১৬১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি।

অপরদিকে, সম্মেলন করতে ব্যর্থ হওয়ায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ২০১২ সালের ১০ জানুয়ারী খুলনা জেলা ছাত্রলীগের ১৫ সদস্যের একটি অসম্পূর্ণ কমিটি এক বছরের জন্য ঘোষণা করে। এই কমিটির সভাপতির মো. আরাফাত হোসেন পল্টু এবং সাধারণ সম্পাদক মুশফিকুর রহমান সাগর। ইতোমধ্যে সংগঠনের মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও কমিটি আর পূর্ণাঙ্গ হয়নি।

সূত্র জানায়, শুরু থেকে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে ক্ষমতাসীন এই ছাত্র সংগঠনের শীর্ষ নেতারা। ফলে কেন্দ্রীয়, জাতীয় ও মূল দল আওয়ামী লীগ ঘোষিত কর্মসূচির পালনের মধ্যে সংগঠনটির সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড  সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। যে কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানভিত্তিক এই সংগঠনের বিচরণ এখন অনেকটা দলীয় কার্যালয়কেন্দ্রিক। ফলে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটগুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন এবং শিক্ষার্থীদের মৌলিক দাবি আদায়ে ছাত্রলীগের ভূমিকা এখন নেই বললেই চলে।

এছাড়া বিভিন্ন সময় উভয় কমিটির সামগ্রিক কর্মকাণ্ড ছাত্রলীগের গৌরব গাঁথা ঐতিহ্যকে অনেকটা ম্লান করে দিয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিবদমান দু’গ্রুপের একাধিবার সংঘর্ষ, টেন্ডার সিন্ডিকেট, এমনকি মাদক ব্যবসাসহ নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকারও অভিযোগ উঠেছে ছাত্র সংগঠনের কতিপয় নেতার বিরুদ্ধে। এসব ঘটনায় অভিভাবক সংগঠন আওয়ামী লীগ বিব্রত হয়ে ছাত্র লীগের সাথে সম্পর্ক বিচ্ছেদ করার হুমকি দিয়ে সংবাদ মাধ্যমে বিবৃতি দিয়েও কোন কাজ হয়নি। অবশেষে গত বছর ২২ ফেব্রুয়ারি নগর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড স্থগিত ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় কমিটি।

এদিকে, সম্প্রতি নানাভাবে বিতর্কিত ছাত্রলীগকে তৃণমূল পর্যায়ে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেয় অভিভাবক সংগঠন আওয়ামী লীগ। এরই ধারাবাহিকতায় কেন্দ্র থেকে শুরু করে জেলাভিত্তিক মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। সেই হিসেবে খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের আগামী ৭ জুন এবং জেলা ছাত্রলীগের ৬ জুন সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।

তবে এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না কেন্দ্রীয় নেতা ও নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক শেখ শাহাজালাল হোসেন সুজন। তিনি বলেন, আমিও শুনেছি। তবে এ ব্যাপারে আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত কোন নির্দেশনা দেয়া হয়নি। এছাড়া সম্মেলনের জন্য যে প্রস্তুতি থাকা দরকার অর্থাৎ ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ে কোন কমিটি নেই।

এদিকে সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পর থেকেই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদ দখলের জন্য জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন নগর শাখার বর্তমান সাধারণ সম্পাদক শেখ শাহাজালাল হোসেন সুজন এবং কেন্দ্রী সদস্য এসএম আসাদুজ্জামান রাসেল। অন্যান্য পদগুলোর জন্যও দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন কয়েকশত নেতাকর্মী।

এ ব্যাপারে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা এসএম আসাদুজ্জামান রাসেল বলেন, আমরা চাই সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হোক। কিন্তু বর্তমানে ওয়ার্ড ও থানা কমিটি না থাকায় কাউন্সিলর নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। তবে তিনি বলেন, হয়তো সিলেকশন হতে পারে।

আলমগীর হান্নান/এসএস/এমএস