রোডম্যাপ ঘোষণার আগেই সংলাপে বসা উচিত ছিল
একাদশ নির্বাচনের ‘রোডম্যাপ’ ঘোষণার আগেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সংলাপে বসা উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন একটা রোডম্যাপ দিয়েছেন। বলতে গেলে একদলীয়ভাবে একটা নির্বাচন করার জন্য তারা এটা (রোডম্যাপ) দিয়েছেন। সেই রোডম্যাপ দিয়ে কি হবে, যদি দেশে একটা সুষ্ঠু, গণতান্ত্রিক ও অবাধ নির্বাচন না হয়।’
‘রোডম্যাপ দেয়ার পরে-আগে তাদের (নির্বাচন কমিশন) উচিত ছিল সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করা। এখন তারা (ইসি) বলছেন, আলোচনা করবেন। রোডম্যাপ দেয়ার পরে আলোচনা করার চাইতে আগে আলোচনা করা উচিত ছিল।’
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সাবেক আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশন একটি নিরপেক্ষ কমিশন নয়, এটি একটি অগ্রহণযোগ্য কমিশন। তারা এই সরকারের কথা ও নির্দেশ অনুযায়ী চলে।’
‘প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (কে এম নুরুল হুদা) আমরা চিনি, তিনি একজন পক্ষপাত ব্যক্তি, তিনি একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন, যে কারণে আমরা তাকে গ্রহণ করতে পারি নাই। যেভাবে ইসি গঠন করা হয়েছে তা দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে করা হয়েছে। সেই নির্বাচন কমিশনের অধীনে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে বলে আমরা মনে করি না।’
দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে না মন্তব্য করে মওদুদ বলেন, ‘আমাদের ইতিহাস বলে, ১৯৭৩ সাল থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত যখনই কোনো রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় ছিল, তখন নির্বাচন কমিশন কখনও স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন নাই।’
‘১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ সালের নির্বাচনের সময় দলীয় সরকার ছিল না বলেই নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পেরেছে। বিষয়টা নির্বাচন কমিশন নয়, বিষয় হলো নির্বাচনকালীন সময়ে কোন ধরনের সরকার থাকবে তার উপরে নির্ভর করবে দেশে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হবে কি হবে না।’
একাদশ নির্বাচন সম্পর্কে দলের অবস্থান তুলে ধরে মওদুদ বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে যাবে। একদলীয়ভাবে নির্বাচন এবার বাংলাদেশের মাটিতে হতে দেয়া হবে না। সেজন্য আমরা আন্দোলনের কথা বলেছি, আমরা নির্বাচনের প্রস্তুতির কথাও বলেছি। আন্দোলন এজন্য যে, মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে। আর আমরা নির্বাচন করব এজন্য, সেই নির্বাচনে আমরা অংশগ্রহণ করব, যাতে করে সত্যিকার অর্থে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা সরকার গঠন করতে পারে।’
সংগঠনের চেয়ারম্যান কবির মুরাদের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব আবদুল্লাহিল মাসুদের পরিচালনায় আলোচনা সভায় অধ্যাপক এসএম হাসান তালুকদার, অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক তাহের আলী, অধ্যাপক এমতাজ হোসেন, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, অধ্যাপক জি কিউ মুস্তাফিজুর রহমান, অ্যাডভোকেট মাহফুজুর রহমান ফরহাদ, অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এমএম/জেএইচ/ওআর