আগে নিজ আমলের দুষ্কর্মের কৈফিয়ত দিন : খালেদাকে ইনু
‘বড় কথা’ বলার আগে নিজ শাসনামলে হত্যা-দুর্নীতিসহ সব দুষ্কর্মের কৈফিয়ত দিয়ে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নিজ দফতরে বিএনপি ঘোষিত ‘ভিশন-৩০’ বিষয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী ইনু বলেন, ‘দুর্নীতি বন্ধের কথা বলার আগে বেগম জিয়ার দুই পুত্রের প্রমাণিত দুর্নীতির বিষয়ে ব্যাখ্যা দেয়া উচিত ছিল। তার সময়ে হাওয়া ভবনে যে সংঘবদ্ধ চক্রের মাধ্যমে দুর্নীতিকে একটি শিল্প বা ‘অর্গানাইজড সিস্টেমেটিক সিন্ডিকেটেড করাপশন অ্যাজ এন আটর্’ হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছিল, দলবাজি-দুর্নীতিবাজি ও পরিবারবাজি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল, আগে তার কৈফিয়ত প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব ছাড়া নিরপেক্ষ সহায়ক সরকারের ফাঁকা বুলি আওড়ানো ষড়যন্ত্রের শামিল।’
‘দেশে কর্তৃত্ববাদী শাসন চলছে’ এ খালেদা জিয়ার বক্তব্যের বিরোধিতা করে হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘দেশ সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় পরিচালিত হচ্ছে, নিয়মিত নির্বাচন হচ্ছে। বিএনপিই তাদের ইচ্ছে মতো নির্বাচন করা ও বর্জন করার স্বেচ্ছাচারিতায় লিপ্ত।’
ক্ষমতার ভারসাম্য বিষয়ক বক্তব্যের বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি (খালেদা জিয়া) ক্ষমতার ভারসাম্যের কথা বলেছেন, কিন্তু সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিতে পারেননি। সংবিধানের ১৫ ও ১৬ তম সংশোধনী পর্যালোচনা করবেন বলেছেন, কি করবেন বলেননি। সেখানে সামরিক শাসনকে অবৈধ ঘোষণা এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীকে দেয়া স্বীকৃতি পরিবর্তন করবেন কিনা বা সংবিধানের চারনীতির বিষয়ে তার কি অবস্থান, তাও পরিষ্কার করেননি।’
খালেদা জিয়ার ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ’ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের নামে জিয়া এবং খালেদা জিয়া পার্বত্য চট্টগ্রামে যে দমননীতি চালান, সাম্প্রদায়িকীকরণের মাধ্যমে সংখ্যালঘুদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত করেন, বাঙালি জাতীয়তা এমনকি ক্ষুদ্র জাতিসত্তাসমূহের পরিচয়ও অস্বীকার করেন, তার জবাবও তিনি দেননি।’
‘পঙ্গু তাহেরকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসি দেয়া, শতশত সৈনিক হত্যা করে ক্যান্টনমেন্টকে কসাইখানা বানানো বিএনপির মুখে মানবাধিকারের কথাও শোভা পায় না,’ যোগ করেন তথ্যমন্ত্রী ইনু।
বিএনপি নেত্রীর মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ চালানোর প্রস্তাবের বিষয়ে জাসদ সভাপতি বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের শত্রু রাজাকার-যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতিতে পুনর্বাসনকারী জিয়া-খালেদা জিয়াই মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের গাড়িতে দেশের পতাকা তুলে দিয়েছিল, জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে চালিয়েছিল হত্যা-ধ্বংসযজ্ঞ। তিনি কিভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ চালাবেন?’
খালেদা জিয়ার কৃষকবান্ধব মন্তব্যের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়ার আমলে সার-মাফিয়া চক্র তৈরি হয়েছিল, কৃষকরা ছিল নিগৃহীত, চক্রান্তের স্বীকার। সতেরজন কৃষক হত্যার ঘটনা জাতি এখনও ভোলেনি।’
তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে বেগম জিয়ার বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বেগম জিয়ার কারণেই জাতি ১৯৯১ সালে সাবমেরিন ক্যাবলে যুক্ত হওয়া থেকে বঞ্চিত হয়। ডিজিটাইজেশন তার পছন্দ নয়। তার মুখে তথ্যপ্রযুক্তির কথা হাস্যকর।’
এমইউএইচ/এমএমএ/জেএইচ/পিআর