ঢাকা উত্তরে প্রার্থী হচ্ছেন মান্না
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না আসন্ন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হচ্ছেন। বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এ তথ্য জানিয়েছেন নাগরিক ঐক্যের উপদেষ্টা এসএম আকরাম হোসেন। এদিকে অসুস্থ মান্নাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রাখা হয়েছে। তিনি শ্বাসকস্টে ভুগছেন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। এ ছাড়া অসুস্থ মান্নার রিমান্ড বাতিল করে মহানগর হাকিম বিকাশ কুমার সাহার আদালতে বুধবার জামিনের আবেদন জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা। আদালত আবেদন গ্রহণ করে আজ বৃহস্পতিবার শুনানির জন্য তারিখ ধার্য করেছেন।
মাহমুদুর রহমান মান্নার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আয়োজিত নাগরিক ঐক্যের ওই সমাবেশে সংগঠনের উপদেষ্টা এসএম আকরাম হোসেন বলেন, প্রথমবার যখন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল, তখন মান্না জনসংযোগ করে ব্যাপক সাড়া পেয়েছেন। তাই মান্না জেলে থাকুক আর বাইরে থাকুক তিনি নির্বাচনে যাবেন। অবিলম্বে মাহমুদুর রহমান মান্নার মুক্তি দাবি করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ক্ষমতাসীন সরকার সিজোফ্রেনিক সরকার। এ রকম সরকারের দুটো চরিত্র থাকে। এক সময় উন্মাদ, এক সময় তত ভালো মানুষ থাকে। তিনি বলেন, যতদিন আমরা ভয় পাব, ততদিন এ অত্যাচার চলতেই থাকবে। অত্যাচারের বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়ানো ছাড়া কোনো পথ নাই। হাইকোর্ট কর্তৃক সুয়োমটো রুল জারি করে মাহমুদুর রহমান মান্নাকে ছাড়িয়ে আনার কথাও বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, মিডিয়াতে বিকৃতভাবে মান্নার বক্তব্য এসেছে। ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয়েছে, তাকে গ্রেফতারের প্রেক্ষাপট তৈরি করার জন্য। তিনি বলেন, কারা মান্নার সমালোচনা করেছেন, যারা নিজেদের উপদলীয় কোন্দলে অলরেডি ক্যাম্পাসে শত শত লাশ ফেলে দিয়েছেন। আমরা আবু বকরের নাম বলতে পারি। মান্নার গ্রেফতারের পর আওয়ামী লীগ-বিএনপির বিরুদ্ধে তৃতীয় জোটের কার্যক্রম স্তব্ধ হয়ে গেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এ সময় মান্নাকে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে যাওয়ার জন্য নাগরিক ঐক্যের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় নেতা ফজলুল হক সরকারের সভাপতিত্বে নাগরিক সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (রব) সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, নাগরিক ঐক্যের নেতা আবু বকর সিদ্দিক প্রমুখ।
উল্লেখ্য, বহুল আলোচিত মান্না-খোকা টেলি-সংলাপ ফাঁস হওয়ার পর ২৪ ফেব্রুয়ারি মান্নাকে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী পরিচয়ে গুলশান থেকে আটক করা হয়। ২০ ঘণ্টা নিখোঁজ থাকার পর ওই দিনই তাকে ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে র্যাব। সেনা-বিদ্রোহে উসকানি দেয়ার অভিযোগে ২৪ ফেব্রুয়ারি মান্নার বিরুদ্ধে মামলা হয় গুলশান থানায়। ২৫ ফেব্রুয়ারি তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। রিমান্ড চলাকালে ৫ মার্চ তার বিরুদ্ধে নতুন করে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হয়, যাতে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকাকেও আসামি করা হয়। এ মামলায় গত ৭ মার্চ দ্বিতীয় দফায় ১০ দিনের রিমান্ড নেয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিগগিরই মান্নাকে টিএফআই সেলে নেয়ার কথা ছিল বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
এসএইচএ/এমএস