শিক্ষক লাঞ্ছনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিকল্প নেই
এটা আপাত স্বস্তির বিষয় যে অবশেষে শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে স্বপদে বহাল এবং স্কুল পরিচালনা কমিটি বাতিল করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে যে ধরনের অবিচার তাঁর প্রতি করা হয়েছে সেটির প্রতিকার এই ব্যবস্থা নয়। এজন্য ঘটনার মূল হোতার যথাযথ শাস্তিই প্রাপ্য। উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীকে মারধর ও ‘ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটূক্তির’ অভিযোগে গত শুক্রবার শ্যামল কান্তিকে স্থানীয় সাংসদের উপস্থিতিতে মারধর ও কানে ধরে উঠ-বস করানো হয়। পরে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ জানান, ‘ধর্মীয় অবমাননার’ অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিকভাবে সত্যতা পায়নি সরকারি তদন্ত কমিটি। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি অন্যায়ভাবে নারায়ণগঞ্জের পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে সাময়িক বরখাস্ত করেছিল। তাই ওই কমিটি বাতিল করা হয়েছে। আর শ্যামল কান্তিকে তাঁর স্বপদে বহাল রাখা হয়েছে। অন্যদিকে সাংসদ সেলিম ওসমানও সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি দাবি করেন শিক্ষক নিজেই জীবন বাঁচাতে কানধরে উঠবস করেছেন। তবে এর তীব্র প্রতিবাদ করেছেন শিক্ষক শ্যামল কান্তি। স্কুল থেকে তাঁকে সরিয়ে দিতেই এই ষড়যন্ত্র-এমনটিই দাবি করেছেন তিনি।
একজন শিক্ষকের প্রতি একজন আইন প্রণেতার এমন আচরণের তীব্র প্রতিবাদ ওঠে সারাদেশ ব্যাপী। সরকারের উচ্চ মহল থেকেও তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়। শিক্ষামন্ত্রী এ ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। আইনমন্ত্রী বলেন, বিষয়টি ফৌজদারি অপরাধের শামিল। কোর্টও স্বপ্রণোদিত হয়ে কারণ দর্শাও নোটিশ জারি করেন কেন এই ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে। এ অবস্থার মধ্যেই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে শিক্ষককে স্বপদে বহাল এবং কমিটি বাতিল করা হয়েছে। বাকি পদক্ষেপ পরে নেওয়া হবে- এমন আশ্বাসও দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। আমরা এই আশ্বাসে আশ্বস্ত হতে চাই। তবে যা হয়েছে তার যথাযথ প্রতিকার না হলে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতেই থাকবে। এক্ষেত্রে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির কোনো বিকল্প নেই। আমরা চাই এই ন্যক্কারজনক ঘটনার একটি সুষ্ঠু প্রতিকার।
এইচআর/পিআর