ভিডিও EN
  1. Home/
  2. মতামত

উদ্বেগজনক, গুরুত্ব দিয়ে দেখুন

প্রকাশিত: ০৪:১৮ এএম, ০৪ মে ২০১৬

জঙ্গিতৎপরতার অভিযোগে আবারো সিঙ্গাপুরে আট বাংলাদেশিকে আটকের ঘটনাটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এর আগে জানুয়ারি মাসে ২৭ বাংলাদেশিকে আটক ও দেশে ফেরত পাঠিয়েছিল সিঙ্গাপুর। বিশ্বব্যাপী উগ্রবাদের উত্থানের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশিদের বিদেশের মাটিতে গিয়ে এই ধরনের অভিযোগে গ্রেপ্তার ও দেশে পাঠানোর প্রতিক্রিয়া হবে নানামাত্রিক। এখন বাংলাদেশি শ্রমিকরা বিদেশে বিশেষ করে সিঙ্গাপুরে আরো কঠোর নজরদারির মধ্যে থাকবে। এমনকি জনশক্তি রপ্তানিতেও এই ঘটনা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অথচ আমাদের দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম খাত হচ্ছে এই জনশক্তি রপ্তানি। প্রবাসী শ্রমিকদের পাঠানো রেমিটেন্সেই অর্থনীতির গতিপ্রবাহ অনেকটাই ঠিক থাকে। কাজেই বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে। সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে এই ঘটনা কোনো প্রভাব না ফেলে।
 
সিঙ্গাপুর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় বলছে, আটক জঙ্গিদের উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশে ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা এবং বাংলাদেশকে আইএসের ঘোষিত ইসলামি খেলাফতের আওতায় আনা। তদন্তে দেখা গেছে, ওই জঙ্গিরা বাংলাদেশে হামলা চালাতে কয়েকটি লক্ষবস্তু চিহ্নিত করেছিল। জঙ্গিদের কাছে থেকে বেশ কিছু নথি উদ্ধার করা হয়েছে। আটক রহমান মিজানুরের কাছে থেকে ‘উই নিড ফর জিহাদ ফাইট’ শিরোনামের একটি নথিসহ বোমা ও অস্ত্র তৈরির কাগজপত্র পাওয়া গেছে। নথিতে বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তাদের একটি তালিকা রয়েছে। সিঙ্গাপুর সরকারের আনা অভিযোগ বাংলাদেশের পুলিশের খতিয়ে দেখা উচিত। বিশেষ করে একের পর  এক যখন এ ধরনের ঘটনা ঘটছে তখন বিষয়টি অত্যন্ত  গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে।

জঙ্গিবাদ এখন বিশ্বব্যাপী এক বিরাট সমস্যার নাম। বাংলাদেশও এ সমস্যা থেকে মুক্ত নয়। যদিও সরকার জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখাচ্ছে, কিন্তু জঙ্গিবাদ পুরোপুরি নির্মূল করা যাচ্ছে না। এখন তো বিদেশের মাটিতেও আবারো বাংলাদেশিদের গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটলো। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। সামগ্রিকভাবে বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখতে হবে। সিঙ্গাপুর সরকার যে অভিযোগ করছে সেটির ব্যাপারে জোর তদন্ত চালাতে হবে। ঘটনা যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে তা ভবিষ্যতের জন্য এক অশনি সংকেত। বলা হচ্ছে গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে অনেকেই নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য। তাহলে বিদেশ যাওয়ার সময় এদের ব্যাপারে পুলিশ রিপোর্ট কী ছিল। পুলিশ কি তখন জানতো না। এখন থেকে এ ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। যারা দেশের বাইরে কাজ করতে যায় তারা শুধু অর্থনৈতিকভাবে অবদানই রাখে না, তাদের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে দেশের ভাবমূর্তিও জড়িত। কাজেই কেউ কোনো নেতিবাচক কাজ করলে দায়টা পড়বে কিন্তু অনেকের উপর। বিশেষ করে প্রবাসী শ্রমিকরা জঙ্গিতৎপরতার মতো অপরাধে জড়িয়ে পড়লে তার মাশুল কিন্তু ভয়ানক। এ  ব্যাপারে প্রবাসী ও বৈদেশিক শ্রমকল্যাণ মন্ত্রণালয়,  স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য দপ্তর ও সংস্থাকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। বিদেশের মাটিতে গিয়ে কেউ যাতে হয়রানি ও ষড়যন্ত্রের শিকার হয় নিশ্চিত করতে হবে সেটিও।

এইচআর/এমএস

আরও পড়ুন