আইন-শৃঙ্খলার দিকে নজর দিন
নিরাপত্তা বোধ একটি সমাজের উন্নয়ন অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করে। সে ক্ষেত্রে সুশাসন নিশ্চিত করে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানই সরকারের মূল্য লক্ষ্য হওয়া উচিত। কিন্তু বর্তমানে সমাজে হত্যা-খুন-ধর্ষণ ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। যা যে কোনো মানুষকে উদ্বেগাকুল করে। এ অবস্থায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতিকল্পে নিতে হবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। এক্ষেত্রে অপরাধীদের গ্রেপ্তার, তাদের শাস্তির আতওতায় এনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করাই হবে মূল চ্যালেঞ্জ।
বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার হিসাবে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির এক হতাশাজনক চিত্রই উঠে এসেছে। সংস্থার হিসাব মতে, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে দেশে ২২ জন শিশু, ৩৪ জন নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার এবং ৮০ জন নারী-পুরুষকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করার পরে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া পারিবারিক কোন্দলে আহত ও নিহত, গৃহকর্মী নির্যাতন ও খুন, নারী নির্যাতন, সামাজিক ও রাজনৈতিক সহিংসতা ,শিশু হত্যার ঘটনা ছিল উল্লেখযোগ্য।
নানাবিধ কারণে সমাজে অপরাধের মাত্রা দিন দিন বাড়ছে। এরমধ্যে রয়েছে প্রলম্বিত বিচার পদ্ধতি, সামাজিক নিরাপত্তার অভাব। এসব কিছু মিলেই দেশের জনসাধারণের মানসিক ও মানবিক চিন্তা চেতনার অবক্ষয়ের কারণে বেড়ে গেছে সামাজিক অসন্তোষ আর এই সামাজিক অসন্তোষের শিকার হয়ে এই মাসে নিহত হয়েছেন ১৪ জন, আহত হয়েছেন ১৮৫ জন। বেশিরভাগ ঘটনাই ঘটেছে জমিজমা , দুই গ্রামের খেলা নিয়ে সংঘর্ষ বা তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে। অন্যান্য সহিংসতার ঘটনাগুলোর মধ্যে, মাদকের প্রভাবে বিভিন্নভাবে নিহতের সংখ্যা ৪ জন, আহত হয় ৪ জন। তাছাড়া পানিতে ডুবে, অসাবধানতাবশত, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে ৭৫ জন। গণপিটুনিতে নিহত হয় ৬ জন। চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু হয় ৩ জনের।
এ অবস্থা চলতে থাকলে একদিকে যেমন দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি ব্যাহত হবে অন্যদিকে সুশাসন প্রতিষ্ঠার যে অঙ্গীকার তা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আইনের সঠিক প্রয়োগ, অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, নৈতিক অবক্ষয় রোধে বিভিন্ন পর্যায়ে কাউন্সিলিং, মাদক নিয়ন্ত্রণ, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর দক্ষতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ, ভালো কাজের জন্য পুরস্কার, সামাজিক সংগঠনগুলোর বিভিন্ন সচেতনতামূলক কার্যক্রম ইত্যাদির মাধ্যমে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব- এমনটি মনে করছেন বিশ্লেষকরা। আইন-শৃঙ্খলার সার্বিক উন্নতিকল্পে সরকার বিষয়গুলো ভেবে দেখবে এবং সে অনুযায়ী সুদূরপ্রসারী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
এইচআর/আরআইপি