ভিডিও EN
  1. Home/
  2. মতামত

কারাগারে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করুন

প্রকাশিত: ০৪:১৫ এএম, ২৯ এপ্রিল ২০১৬

কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগার উদ্বোধন করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি বলেছেন-  ‘আমরা মানুষকে মানুষ হিসেবেই দেখি। জাতির পিতা আমাদের সেই শিক্ষাই দিয়েছেন। আমাদের লক্ষ্য এই কারাগার যেন একটি সংশোধনাগার হিসেবে বন্দিসেবা দিতে পারে। যারা জঘন্য অপরাধী তাদের কথা আমি বলব না, যাদের মানুষ হবার সুযোগ রয়েছে তাদের যেন সংশোধনের সুযোগটা করে দিতে পারি।’

কথায় আছে পাপকে ঘৃণা কর পাপীকে নয়। প্রধানমন্ত্রী এই নীতির প্রতিধ্বনি করেছেন তার বক্তব্যে। অপরাধমুক্ত সমাজের কথা এখনো আমরা চিন্তা করতে পারি না। তাই বিশ্ব অচিরেই কারাগারমুক্ত হবে এমন সম্ভাবনাও কম। বিশেষ করে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক-রাজনৈতিক অবস্থায় অপরাধের মাত্রা দিন দিন বাড়ছে। মানুষ অপরাধ করলে তাদেরকে গ্রেপ্তার ও বন্দি করা হয়। তবে তা হতে হবে অবশ্যই মানবিক। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে (পুরাতন) ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত বন্দি রাখা হয়েছে। এটা নিয়ে অনেকদিন ধরেই  কথা হচ্ছিলো। তাছাড়া দুইশ বছরেরও বেশি সময় ধরে চালু থাকা কারাগারটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল। এসব বিবেচনায় নতুন কারাগার নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। এতে বন্দিদের প্রতি মানবিক আচরণের দিকটিই প্রকাশ পেয়েছে।এটা সবক্ষেত্রে ধরে রাখতে হবে। বিশেষ করে বন্দি অবস্থায় অসুস্থ হলে তার চিকিৎসা যাতে হয় সেটি নিশ্চিত করতে হবে।

জাগো নিউজের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে কারা চিকিৎসার যে চিত্র ওঠে এসেছে তা অত্যন্ত করুণ। ১৩টি কেন্দ্রীয় কারাগারসহ সারাদেশে মোট কারাগারের সংখ্যা ৬৮টি। এসব কারাগারে বন্দী আছে ৭০ হাজারেরও বেশী মানুষ। তাদের অধিকাংশই কারা অভ্যন্তরে পাচ্ছেন না ভাল চিকিৎসা সেবা। কাগজে কলমে প্রতিটি কারাগারে একটি করে হাসপাতাল থাকলেও দেশের ৬৩টি কারাগারেই চিকিৎসক নেই। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারসহ পাঁচটি কারা হাসপাতালে চিকিৎসক আছেন মাত্র ৭ জন। অথচ অনুমোদিত চিকিৎসকের মোট সংখ্যা ১৪২ জন।

অভিযোগ রয়েছে, অধিকাংশ কারাগারের পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর। গাদাগাদি করে থাকার কারণে চর্মরোগসহ নানবিধ জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বন্দিরা। বয়স্ক বন্দিরা ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এদের চিকিৎসার তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। অথচ চিকিৎসা প্রত্যেক মানুষের মৌলিক অধিকার।

দেখা যাচ্ছে পদ থাকলেও সেগুলোতে নিয়োগ না দেওয়ায় একদিকে বেকার চিকিৎসকদের কর্মসংস্থান হচ্ছে না। অন্যদিকে চিকিৎসা সেবাও ব্যাহত হচ্ছে। বন্দিদের চিকিৎসা জটিল ব্যাপার। কারণ কারাভ্যন্তরে প্রয়োজনীয়  চিকিৎসক না থাকলে বন্দিদের বাইরের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে হয়। এতে বন্দিদের আনা নেওয়ার ঝামেলা রয়েছে। তাছাড়া হাসপাতালে ভর্তি করে দীর্ঘদিন চিকিৎসা করাতে হলে সেখানেও নিরাপত্তার জন্য বাড়তি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োগ করতে হয়। এসব জটিলতার একটাই সমাধান সেটি হচ্ছে কারাগারের বন্দিদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া। বর্তমান সরকার স্বাস্থ্যখাতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে। কারাগারের বন্দিরা এর বাইরে থাকতে পারে না। এ ব্যাপারে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে আমরা আশা করছি।

এইচআর/পিআর

আরও পড়ুন