ইউক্রেনে কি পুতিন বিজয় দেখবেন?
রাশিয়া যখন দুই বছর আগে ইউক্রেনে হামলা চালায় তখন অনেকেই আশা করেছিল খুব সহজেই পুতিন বিজয়ের মুখ দেখবেন। রাশিয়া সব দিক থেকেই ইউক্রেনের চেয়ে এগিয়ে থেকেও যুদ্ধজয় সম্ভব করতে পারেনি এখনো। বরং ইউক্রেনে অভিযান চালিয়ে রাশিয়া বড় চ্যালেঞ্জের মুখেই পড়েছে। রাশিয়ার অভ্যন্তরে যেমন সংকট বেড়েছে, তেমনি এই যুদ্ধকে কেন্দ্র করে বিশ্বরাজনীতিতে চলছে নানা পোলারাইজেশন। ইউক্রেন পশ্চিমা পুঁজিবাদী দুনিয়ার উদার সামরিক ও আর্থিক সমর্থন পেয়েছে।
আবার রাশিয়াও যে একেবারে মিত্রহীন নয়, সেটাও দেখা যাচ্ছে। পৃথিবী এখন আদর্শিক রাজনীতিকে ভিত্তি করে বিভক্ত না হয়ে এখন স্বার্থকেন্দ্রিক বিভক্তি বড় হয়ে উঠছে। এই স্বার্থের টানাপোড়েনের জন্য ন্যায় ও অন্যায়ের পার্থক্য করা অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে। পুঁজিবাদী ব্যবস্থার রক্ষকের ভূমিকা পালনকারী আমেরিকার মোড়লিপনা অব্যাহত থাকায় পৃথিবীতে শান্তি ও স্বস্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব হচ্ছে না। তবে রাশিয়া, চীন ও ভারত যদি আমেরিকাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলতে পারে, নিজেদের মধ্যে ছোটখাটো বিরোধ পাশে রেখে মানব জাতির বৃহত্তর স্বার্থগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে একটি মানবিক বিশ্ব গড়ার কাজে মনোযোগ দেয়, তাহলে একটি নতুন দিন আসা অসম্ভব কিছু নয়।
এবার একটু দেখা যাক আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকেরা ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কী ভাবছেন? এই যুদ্ধ কী শেষ হওয়ার পথে? নাকি এর জেরে দেশে দেশে মানুষের জীবনে দুঃখ-কষ্ট দারিদ্র্য আরও বাড়তেই থাকবে? বলা হচ্ছে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনে সর্বাত্মক অভিযান শুরুর পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এখন সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছেন।
রাশিয়ার সেনারা যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেনীয় বাহিনীকে চেপে ধরেছেন এবং গত দুই/তিন সপ্তাহে বেশ কয়েকটি গ্রাম দখলে নিয়েছেন। আরও অনেকগুলো লক্ষণ বলছে, রাশিয়া তাদের শক্তি ক্রমাগত বাড়িয়ে চলেছে। এতে মনে হতে পারে, ইউক্রেনীয়দের ও পশ্চিমাদের পরাজয় বাস্তবে আরও সম্ভাব্য হয়ে উঠছে।
দেশের ভেতরে গত বছর ভাগনার গ্রুপের ইয়েভগেনি প্রিগোশিনের বিদ্রোহের মুখে পড়েছিলেন ভ্লাদিমির পুতিন। পরবর্তী সময়ে প্রিগোশিন বিমান বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হন। ভ্লাদিমির পুতিনের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ অ্যালেক্সি নাভালনি ফেব্রুয়ারি মাসে সাইবেরিয়ার বন্দিশিবিরে মৃত্যুবরণ করেন।
ষষ্ঠবারের মতো প্রেসিডেন্টের পদে বসার পর পুতিন তাঁর মিত্রদেশ উত্তর কোরিয়া ও ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক আরও পোক্ত করে ফেলেছেন। এর মধ্য দিয়ে রাশিয়া তাদের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় অস্ত্র ও গোলাবারুদের সরবরাহ নিশ্চিত করেছে। এর ফলে রাশিয়া তাদের যুদ্ধ-যন্ত্রকে খুব ভালোভাবেই সচল রাখতে পারছে। এর বিপরীতে গত ছয় মাসে ইউক্রেনীয় বাহিনী পশ্চিমা সামরিক সহায়তা না পাওয়ায় কারণে ব্যাপক সমস্যায় পড়েছে।
এ ছাড়া ১৬-১৭ মে বেইজিং সফরে যান ভ্লাদিমির পুতিন। সেই সফরে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন। প্রসঙ্গত বলা দরকার, ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর কয় দিন আগে পুতিন ও সি নিজেদের মধ্যকার সহযোগিতা আরও গভীর করতে ‘সীমাহীন’ অংশীদারের কথা ঘোষণা করেছিলেন। পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে তাঁদের আদর্শিক লড়াইয়ের একধরনের বার্তাই তুলে ধরেছিল এটি।
ইউক্রেনে রাশিয়ার চলা যুদ্ধ দুই বছরের বেশি সময় পার হয়েছে। এ সময়ে দেশটির গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হয়ে উঠেছে চীন। ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান চালানোর নিন্দা জানাতে বেইজিং শুধু অস্বীকৃতিই জানায়নি; বরং পশ্চিমাদের ব্যাপক নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন মস্কোর সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্কও বজায় রেখেছে। রাশিয়ার প্রতি চীনের এমন আগ্রহ যুক্তরাষ্ট্র ও এর ইউরোপীয় মিত্রদের জন্য যথেষ্ট ক্ষোভের কারণ।
বেইজিংয়ের সঙ্গে মস্কোর সম্পর্কের এই শক্তিশালী ধারাবাহিকতার বিপরীতে বলা যায়, কিয়েভের সঙ্গে ওয়াশিংটন কিংবা পশ্চিমা রাজধানীগুলোর সম্পর্ক ততটা টেকসই নয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভেতরেই দেখা যাচ্ছে স্লোভাকিয়া ও হাঙ্গেরি অব্যাহতভাবে ইউক্রেনকে সমর্থন দেওয়ার ব্যাপারে বিরোধিতা করে আসছে।
১০ মে রাশিয়া খারকভ অঞ্চলে আক্রমণ অভিযান শুরু করে। এর মধ্যে তারা বেশ কয়েকটা গ্রাম দখলে নিয়েছে এবং ইউক্রেনের আরও ১০ কিলোমিটার ভেতরে প্রবেশ করেছে।
রুশ বাহিনীর বোমাবর্ষণ ও গোলাবর্ষণের মুখে খারকভ অঞ্চল থেকে এ পর্যন্ত ১০ হাজারের বেশি মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। এর ফলে অঞ্চলটিতে মানবিক পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। কেননা খারকভ শহরে এর মধ্যে দুই লাখ বাস্তুচ্যুত ইউক্রেনীয় আশ্রয় নিয়ে রয়েছেন।
খারকভের সাম্প্রতিক সাফল্যের সঙ্গে গত কয়েক মাসে প্রায় এক হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ ফ্রন্টলাইনের কোথাও কোথাও ভূখণ্ড জয় করতে পেরেছে রুশ বাহিনী। যদিও এই সাফল্য ক্রেমলিনের দিকে খেলার হাওয়া ঘুরিয়ে দিতে পারবে না, কিন্তু এটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ অর্জন।
গত বছর পাল্টা আক্রমণ করে ইউক্রেনীয় বাহিনী রুশ বাহিনীকে যতটা পিছু হটতে বাধ্য করেছিল, এ বছর রুশ বাহিনী তার চেয়েও বেশি অগ্রসর হতে পেরেছে। যদিও বাখমুত শহর দখলে নেওয়ার এক বছরের মধ্যে ইউক্রেনের একটি মাত্র শহরের (আবদিভকা) নিয়ন্ত্রণ নিতে পেরেছে রাশিয়া, কিন্তু ভূখণ্ডের হিসাবে তারা ইউক্রেনীয়দের কাছ থেকে ৫০০ বর্গকিলোমিটারের মতো জায়গা দখলে নিতে পেরেছে।
ইউক্রেনের ওপর রুশ বাহিনী চাপ সৃষ্টি অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র ইউক্রেনের কাছে পৌঁছানোর পরও ইউক্রেন অস্ত্রের ঘাটতিতে ভুগছে।
পশ্চিমা মিত্ররা অব্যাহতভাবে বলে চলেছে, ইউক্রেনকে সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি তাদের অগ্রাধিকারে রয়েছে, কিন্তু তারপরও শঙ্কা রয়েই গেছে। সবার চোখ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিকে। রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনের জন্য সহযোগিতা কাটছাঁট করার ঘোষণা দিয়েছেন।
বর্তমান প্রেসিডেন্ট ও ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন ইউক্রেনকে সমর্থন দেওয়ার ব্যাপারে তার শক্ত অঙ্গীকার জানালেও দ্বিতীয় দফায় তার বিজয় নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে। রুশদের জব্দ করা সম্পদ ব্যবহার করে সেই মুনাফা থেকে কীভাবে ইউক্রেনকে সহযোগিতা করা যাবে, তা নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ঐকমত্যে পৌঁছাতে পেরেছে। কিন্তু জি-৭-এর দেশগুলো এখনো একমত হতে পারেনি ইউক্রেনকে কীভাবে আর্থিকভাবে সহযোগিতাটা অব্যাহত রাখা যাবে। বিশেষ করে পশ্চিমা দেশগুলোতে স্থগিত করে রাখা রুশদের সম্পত্তি কীভাবে ব্যবহার করা যাবে, তা নিয়ে একমত হতে পারেনি।
পুতিন তাঁর নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নেন এবং তাঁর সরকারের লোকজন সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে কুণ্ঠিত হন না। দেশের ভেতরে বিভিন্ন সংস্থার সহযোগিতা নিয়ে এবং মিত্রদেশগুলোর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের সাহায্যে পুতিন নীতি-কৌশলগত ভুলগুলো শুধরে নিতে পারেন।
এ বিষয়টি রাশিয়া যে শক্তিশালী আর ইউক্রেন ও পশ্চিমারা যে খানিকটা দুর্বল, সেটাই প্রকাশ করছে। দুই বছরের বেশি সময় ধরে রাশিয়া ইউক্রেনে নিষ্ঠুরভাবে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ইউক্রেনকে পশ্চিমারা যে অস্ত্র দিচ্ছে, সেই অস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে শর্ত বেঁধে দেওয়া হয়েছে। যদিও দুই বছর পর এসে ধীরে হলেও এই নীতি বদলাচ্ছে। ইউক্রেনীয় বাহিনী কোথায়, কীভাবে পশ্চিমা অস্ত্র ব্যবহার করবে, তা নিয়ে বিধিনিষেধ শিথিল করা হচ্ছে।
রাশিয়া তাদের সেনাবাহিনীতে বিপুলসংখ্যক তরুণকে নিযুক্ত করতে পেরেছে। তাঁদের আত্মত্যাগে গত বছর ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণ তারা ঠেকিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিল। আর এ বছর আক্রমণ অভিযান পরিচালনা করতে পারছে।
পক্ষান্তরে এই এপ্রিলে মাত্র ইউক্রেন তাদের সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলক নিয়োগসংক্রান্ত আইন সংস্কার করতে পারল। এর ফলে অপেক্ষাকৃত তরুণ, সুদক্ষ ও অস্ত্রে সুসজ্জিত যোদ্ধাদের পাবে ইউক্রেন। কিন্তু সেটা বাস্তব রূপ পেতে আরও অনেক দিন লেগে যাবে।
পুতিন তাঁর নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নেন এবং তাঁর সরকারের লোকজন সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে কুণ্ঠিত হন না। দেশের ভেতরে বিভিন্ন সংস্থার সহযোগিতা নিয়ে এবং মিত্রদেশগুলোর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের সাহায্যে পুতিন নীতি-কৌশলগত ভুলগুলো শুধরে নিতে পারেন।
অন্যদিকে ন্যাটোর ৩২ দেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭ দেশ সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে সব সময়ই ভিন্ন ভিন্ন পথে হাঁটে। সে কারণে একটা সুস্থির নীতি-কৌশল নেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। ফলে ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে স্থায়ী সংকট তৈরি হয়েছে। এর ফলে ইউক্রেন হয়তো পরাজয়ের মুখে পড়ছে না, কিন্তু বিজয়ের পথও তৈরি হচ্ছে না। পুতিনের শক্তিটা অবশ্য চূড়ান্ত নয়, আপেক্ষিক। ইউক্রেন ও পশ্চিমের জন্য পুতিনের এই শক্তিটা একই সঙ্গে বিপদের ও সুযোগের।
গত সপ্তাহে রাশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমাদের উত্তেজনা নতুন মাত্রায় পৌঁছায়। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের সীমানার কাছে ট্যাকটিক্যাল পারমাণবিক অস্ত্রের মহড়ার ঘোষণা দেন। ক্রেমলিনের দিক থেকে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করা হয়েছে। তারা বলছে যে এই মহড়া আয়োজনের কারণ হচ্ছে, পশ্চিমা নেতারা ইউক্রেনে ন্যাটো সেনা মোতায়েনের কথা বলেছে এবং তাদের অস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে বলেছে।
গত ২ মে কিয়েভে আকস্মিক সফরে গিয়ে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসেন যে যত দিন দরকার তত দিন পর্যন্ত তারা কিয়েভের সহযোগিতা করে যাবে। রুশ ভূখণ্ডে হামলার জন্য ইউক্রেনীয়দের ব্রিটিশ অস্ত্র ব্যবহারের কিয়েভের পরামর্শও দেন তিনি। যুক্তরাজ্য ইউক্রেনকে দেওয়ার জন্য ফরাসি ও ব্রিটিশদের তৈরি করা স্ট্রম শ্যাডো মিসাইল এবং নিজেদের ড্রোন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সেই প্রসঙ্গ বলতে গিয়েই ডেভিড ক্যামেরন তাঁর এই পরামর্শ দেন।
পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনকে অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করলেও এখন পর্যন্ত তারা খুব পরিষ্কারভাবে জানিয়ে আসছে যে রাশিয়ার মাটিতে হামলা চালাতে সেই অস্ত্র ব্যবহার করা হবে না। সে কারণে, এখন পর্যন্ত ইউক্রেন তাদের নিজ দেশে উৎপাদিত ড্রোন ও মিসাইল দিয়ে রাশিয়ার ভেতরে বিভিন্ন সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনায় হামলা করে আসছে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ বারবার করে তাঁর দিক থেকে বলে আসছেন, ইউক্রেনে ন্যাটোর সেনা মোতায়েনের প্রশ্নটি ফয়সালা করা দরকার। এ মাসে দ্য ইকোনমিস্টকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আবারও তিনি এ বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেন।
বিস্তারিত কিছু খোলাসা না করলেও মাখোঁ বলেন, এ ব্যাপারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘কৌশলগত অস্পষ্টতা’ বজায় রাখা উচিত। এ ব্যাপারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রকৃত উদ্দেশ্য কী, সেটা যেন রাশিয়ার কাছে ধাঁধা হিসেবে থেকে যায়।
কিন্তু রাশিয়া ধাঁধার এই খেলায় নামতে রাজি নয়। তারা সরাসরি ইউক্রেনের সীমানাসংলগ্ন দক্ষিণ অঞ্চলের সামরিক জেলায় ট্যাকটিক্যাল পারমাণবিক অস্ত্রসহ সামরিক মহড়ার ঘোষণা দেয়। এর মধ্য দিয়ে তারা পশ্চিমকে খুব স্পষ্ট বার্তা দিয়ে চেয়েছে।
রাশিয়া সতর্ক করেছে, যুক্তরাজ্যের অস্ত্র দিয়ে ইউক্রেন যদি রাশিয়ায় হামলা চালায় তাহলে ‘ইউক্রেনের ভেতরে ও বাইরে’ যুক্তরাজ্যের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করতে পারে রাশিয়া। ২০২২ সালে ইউক্রেনে সর্বাত্মক অভিযান শুরুর পর এই প্রথমবার রাশিয়া ইউক্রেনের বাইরে ন্যাটোর লক্ষ্যবস্তুতে হামলার সরাসরি হুঁশিয়ারি দিল। যদিও যুক্তরাজ্য এই প্রথমবার রাশিয়ার কাছ থেকে এ ধরনের হুমকি পেল না।
চলমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরির পেছনে বেশ কয়েকটি বিষয় কাজ করেছে। যুক্তরাজ্যের ক্ষেত্রে তাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি একটি ভূমিকা রেখেছে। ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির অজনপ্রিয়তা এতটাই বেড়েছে যে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে তাদের ভরাডুবির ঘটতে পারে। ফলে তারা খড়কুটোর মতো ইউক্রেন সংঘাতকে আঁকড়ে ধরতে চেষ্টা করছে।
২৭ মে, ২০২৪
লেখক : রাজনীতিবিদ, লেখক ও চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ফর ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ।
এইচআর/জিকেএস