ভিডিও EN
  1. Home/
  2. মতামত

বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে ন্যায়বিচারের পথে

প্রকাশিত: ০৫:২৬ এএম, ১৬ মার্চ ২০১৬

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর তার দণ্ড দ্রুত কার্যকর করা হবে-এমনটিই প্রত্যাশা করছেন দেশের মানুষ। আজ বুধবার সকালে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে তাকে ট্রাইব্যুনালের জারি করা মৃত্যু পরোয়ানা পড়ে শোনানো হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার জন্য ১৫ দিন সময় দেওয়া হবে তাকে। এরপরই দণ্ড কার্যকরে আর কোনো বাধা থাকবে না।

নিজামীকে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড এবং হত্যা-গণহত্যা ও ধর্ষণসহ সুপিরিয়র রেসপন্সিবিলিটির (ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের দায়) ৮টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ৪ টিতে মৃত্যুদণ্ড ও ৪টিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলে ৩টিতে মৃত্যুদণ্ড ও ২টিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ বহাল রাখে আপিল বিভাগ।

স্বাধীনতা অর্জনের ৪৫ বছর পর যুদ্ধাপরাধের বিচার ছিলো একটি চ্যালেঞ্জিং বিষয়। কেননা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেই সপরিবারে হত্যার মধ্যদিয়ে দেশ আবার পরিচালিত হয় মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধ স্রোতে। এসময় জেলে আটক যুদ্ধাপরাধীদের ছেড়ে দেওয়া হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় সরাসরি স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী সংগঠন নিষিদ্ধ জামায়াতে ইসলামীকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের নামে রাজনীতি করার সুযোগ করে দেন সামরিক শাসক জিয়া। শুধু তাই নয় যুদ্ধাপরাধী রাজাকার, আলবদর, আল-শামসরা রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হয়। যুদ্ধাপরাধী শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী করেন জিয়া। এরই ধারাবাহিকতায় খালেদা জিয়া এই নিজামী, মুজাহিদের গাড়িতে তুলে দেন শহীদের রক্তখচিত লাল-সবুজ পতাকা। কিন্তু সবদিন সমান যায় না। অবেশেষে ঘাতকের দিন শেষ হতে থাকে। জনরায় নিয়ে ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তিনি যুদ্ধাপরাধ বিচারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইব্যুনাল গঠন করেন। এরপর একে একে গ্রেফতার করা হয় চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের। ইতিমধ্যেই চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা কাদের মোল্লা, এম কামারুজ্জামান, আলী আহসান মুজাহিদ এবং বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হয়েছে। সবশেষ মীর কাসেম আলীর ফাঁসির দণ্ড বহাল থাকলো আপিলে। এর মধ্যদিয়ে জাতি একে একে কলঙ্কমোচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশ ফিরে আসছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারায়।

যুদ্ধাপরাধের বিচারের মধ্য দিয়ে বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসছে জাতি। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার পথে হাঁটছে বাংলাদেশ। এরফলে অপরাধ করলে যে কেউ পার পায় না এই বার্তাটিও পৌঁছে যাচ্ছে সমাজে। এরমধ্য দিয়ে ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠা পাবে। গণতন্ত্র আরো মজবুত ভিত্তি পাবে। শোষণ, বঞ্চনাহীন অসাম্প্রদায়িক মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠাও সম্ভব হবে। আমাদের লক্ষ্য হোক সেই দিকে।  

এইচআর/পিআর

আরও পড়ুন