দুর্যোগ মোকাবেলায় পূর্বপ্রস্তুতি
ভরা ফাল্গুনের আকাশে কালো মেঘ, পরে ঝড়ো হাওয়া ও শিলা বৃষ্টির কারণে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় রাস্তা, ফুটপাত ও নিচু এলাকায় বৃষ্টির পানি জমে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। অনেক স্থানে দেখা দেয় দীর্ঘ যানজট। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে নগরবাসী। অমর একুশে গ্রন্থমেলায়ও বিঘ্নিত হয়েছে বৃষ্টির কারণে। মাঠে পানি জমে যাওয়ায় অনেক স্টলের ভেতরে পানি ঢুকে যায়। খোদ বাংলা একাডেমির স্টলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভিজে যায় অনেক বই। এ অবস্থায় নির্ধারিত সময়ের আগেই মেলা বন্ধ করে দেয়া হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগের ওপর কারো হাত নেই। তবে বাংলা একাডেমির এ ব্যাপারে পূর্ব প্রস্তুতি থাকা উচিত ছিল। অন্যদিকে নৌপথেও ফাল্গুনের হঠাৎ ঝড় বিঘ্ন সৃষ্টি করে। তবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়-ক্ষতি হয়নি।
ঋতু পরিক্রমায় ঝড়ের মৌসুম এখনও পুরোপুরি শুরু হয়নি। তবে জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত কারণে এখন ঝড়-বন্যা-খরার নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা নেই। এ অবস্থায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় পূর্বপ্রস্তুতি থাকা বাঞ্ছনীয়। বিশেষ করে নৌযান চলাচলে সতর্কতা অবলম্বন অত্যন্ত জরুরি। হঠাৎ ঝড়ে যাতে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে এ ব্যাপরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রাখতে হবে। প্রস্তুত রাখতে হবে উদ্ধারকারী জাহাজও। এছাড়া আবহাওয়া সংকেত মেনে যাতে নৌযান চলাচল করে সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
রাজধানীতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিলবোর্ড অনেক সময় নানা দুর্ঘটনার কারণ হয়। বিশেষ করে অনেক বিলবোর্ড ঠিকমত স্থাপন না করায় একটু ঝড়ো বাতাসেই তা ভেঙে পড়ে। এতে অতীতে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে। এ ব্যাপারেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। বিদ্যুতের খুঁটিতে জড়িয়ে থাকা বিভিন্ন সেবা প্রতিষ্ঠানের তারও যে কোনো বড় দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। এ ব্যাপারেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে হবে।
রাজধানীর অন্যতম সমস্যা হচ্ছে জলাবদ্ধতা। বর্ষা মৌসুম শুরু হতে এখনও দেরি। কিন্তু এরই মধ্যে অনেক রাস্তায় পানি জমতে শুরু করেছে। রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড থেকে বাড্ডা পর্যন্ত অনেক স্থানেই ড্রেনেজ ব্যবস্থা কার্যকর না থাকায় রাস্তার ওপর পানি জমে যাচ্ছে। ঠিকমত ড্রেনেজ ব্যবস্থা কাজ না করায় স্যুয়াজের পানি নিষ্কাশন হতে পারে না। তাছাড়া ড্রেনেজ লাইনে ময়লা, কাগজপত্রসহ অন্যান্য জিনিস ফেলায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই ড্রেনেজ ব্যবস্থা সচল করতে হবে। জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করার আগেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়াটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে দায়িত্বশীল হবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।
এইচআর/পিআর