ব্যাংকে কার্ড জালিয়াতি রোধ করুন
বাংলাদেশে ব্যাংকিং সেক্টর অভূতপূর্ব সাফল্য দেখিয়েছে। বিশেষ করে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর সেবার মান যথেষ্ট উন্নত। এতে গ্রাহকরাও খুশি। ব্যাংকিং সেক্টরে লেগেছে তথ্য-প্রযুক্তির ছোঁয়া। অনলাইন ব্যাংকিং এখন খুবই জনপ্রিয়। এছাড়া এটিএম (অটোমেটেড টেলার মেশিন) কার্ডও গ্রাহকদের আকষর্ণের কেন্দ্র বিন্দুতে। কিন্তু প্রযুক্তির যেমন অনেক সুবিধা আছে তেমনি আছে এর যন্ত্রণাও। ব্যাংকের এটিএম কার্ড জালিয়াতির ঘটনা এখন যন্ত্রণা ও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এজন্য প্রাথমিক অবস্থায়ই এর সমাধানে ত্বরিৎ ব্যবস্থা গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।
গণমাধ্যমে খবর এসেছে স্কিমিং ডিভাইস বসিয়ে দুই শতাধিক কার্ড গ্রাহকের ব্যক্তিগত গোপন তথ্য চুরি করেছে অপরাধী চক্র। শুধু তাই নয় ক্লোন কার্ড বানিয়ে গ্রাহকের অর্থও হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। সিটি ব্যাংকের তিনটি কার্ড ক্লোন করে রাজধানীর উত্তরা, মিরপুরে একাধিক দফায় লেনদেন করে তিনজন গ্রাহকের হিসাব থেকে ৯০ হাজার টাকা তুলে নেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। গত ১২ ফেব্রুয়ারি ইস্টার্ন ব্যাংকের কার্ডধারী বেশ কিছু গ্রাহকের হিসাব থেকে গ্রাহকের অজান্তে টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে বিদেশি নাগরিকরাও এর সঙ্গে যুক্ত। এ অবস্থায় জালিয়াতি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই।
মানুষ ব্যাংকে টাকা জমা রাখে নিরাপত্তার জন্য। সেখান থেকে যদি টাকা চুরি হয়ে যায় এরচেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে। এই চুরির ঘটনাটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। ব্যাংকিং সেক্টরের জন্যও তা মাথাব্যথার বড় কারণ। এটা বন্ধ করা না গেলে মানুষ আস্থা হারাবে। এর নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া পড়বে ব্যাংকিং সেক্টরে, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন ধরনের কার্ডের গোপনীয় ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষায় প্রতিটি এটিএম বুথে এক মাসের মধ্যে প্রতিরোধক যন্ত্র বসানোর নির্দেশ দিয়েছে। এটা ঠিক প্রযুক্তিগত অপরাধ প্রযুক্তি দিয়েই মোকাবেলা করতে হবে। তবে এরসঙ্গে সর্ষের মধ্যে ভূত আছে কিনা দেখতে হবে সেটিও। অপরাধী চক্রের সাথে ব্যাংকের এক শ্রেণির অসাধু লোকজনের জড়িত থাকার বিষয়টিও আলোচিত হচ্ছে। এ ব্যাপারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। যে সমস্ত গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের টাকা ফেরত দিতে হবে। গ্রাহকের আস্থা ধরে রাখতে ব্যাংকিং সেক্টরের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে হবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
এইচআর/এমএস