ভিডিও EN
  1. Home/
  2. মতামত

প্রধানমন্ত্রীর বিরল দৃষ্টান্ত

প্রকাশিত: ০৪:০৮ এএম, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

কথায় আছে- ‘আপনি আচরি ধর্ম অপরে শিখাও।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। বিদেশে নয়, দেশেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করালেন। কাউন্টারে গিয়ে নিজ হাতে রেজিস্ট্রেশন করে ও চেকআপের ফি জমা দিলেন।  এরপর দেশীয় চিকিৎসকরাই তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করলেন। গতকাল শুক্রবার সকালে গাজীপুরের কাশিমপুরের তেঁতুইবাড়িতে শেখ ফজিলাতুননেসা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে হাসপাতালে এই বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।  নিজের মায়ের নামে প্রতিষ্ঠিত এ হাসপাতালটির চিকিৎসাসেবায় সন্তুষ্টি  প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি যদি কখনো অসুস্থ হয়ে পড়ি, তাহলে আপনারা আমাকে বিদেশে নিবেন না। এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে উঠাবেন না। আমি দেশের মাটিতেই চিকিৎসা নিব। এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিব।’

স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে হাসপাতালের ডাক্তার, কর্মকর্তা ও উপস্থিত সুধীজনদের সঙ্গে তিনি মতবিনিময় করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘এই অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ শ্রমিক। এখানে সাধারণ মানুষের সংখ্যাই বেশি। তাদের চিকিৎসা কষ্ট লাঘব করা এবং চিকিৎসাসেবা দেওয়া আমাদের কর্তব্য। এ ছাড়া এই এলাকায় উন্নতমানের হাসপাতালের সংখ্যা কম। সেই চিন্তা থেকেই এখানে এই হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেই।’ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেহেতু এখানকার বেশির ভাগ রোগী আর্থিকভাবে অসচ্ছল। তাই তাদের আর্থিক দিক থেকে সুবিধা দিতে হবে।’ এ ক্ষেত্রে তিনি ডাক্তারদের কনসালটেন্সি ফি কমানোরও পরামর্শ দেন।

চিকিৎসা মানুষের মৌলিক অধিকার। এরসঙ্গে জীবন-মরণের প্রশ্ন জড়িত। চিকিৎসা ব্যবস্থায় নানা ইতিবাচক উদ্যোগের ফলে স্বাস্থ্যসেবা অনেকটাই নিশ্চিত হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে বেশ কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। রয়েছে মানসিক দৈন্যতাও। আমাদের দেশের বিশিষ্টজনরা সর্দি-কাশি হলেও দেশের বাইরে যান স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে। অথচ দেশেই তা সম্ভব। এতে শুধু দেশের চিকিৎসাব্যবস্থার প্রতি আস্থাহীনতাই তৈরি হয় না বরং দেশের টাকাও চলে যায় বিদেশে। অথচ দেশীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিলে চিকিৎসা ব্যবস্থার মান উন্নয়নেও তা ভূমিকা রাখতে পারে। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন ব্যক্তিবর্গ, মন্ত্রী, এমপি, প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ অন্যান্যরা যদি দেশীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নেন তাহলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের টনক নড়বে। কোনো অব্যবস্থাপনা থাকলে সেটিও দূর হয়ে যাবে।

ধরা যাক একজন মন্ত্রী কোনো একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাবেন-মন্ত্রীর এই হাসপাতালে যাওয়াকে কেন্দ্র করে হাসপাতাল ঝাড়ু দেয়া থেকে শুরু করে সবকিছুই চলবে ঠিকঠাক মত। এভাবে এক সময় চিকিৎসা ব্যবস্থায় একটি গুণগত মান পরিবর্তন করা সম্ভব হবে খুব সহজেই। এ ব্যাপারে চিকিৎসকদেরও দায়িত্ব রয়েছে। তাদের ওপর যাতে রোগীরা আস্থা রাখতে পারে সেটি নিশ্চিত করতে হবে। আমরা মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি। এ জন্য সবক্ষেত্রে আমাদের পরনির্ভরতা কমাতে হবে। প্রধানমন্ত্রী যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন সেটা অনুসরণ করাটাই এখন সকলের জন্য কর্তব্য।

এইচআর/এমএস

আরও পড়ুন