নির্মম ও পৈশাচিক
মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে দুই শিশুকে হত্যার ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। কোনো সভ্য সমাজে এটি মেনে নেওয়া যায় না। দুঃখজনক হচ্ছে, যে শিশুরা এমনকি যুদ্ধক্ষেত্রেও অবধ্য তারা এখন স্বাধীন দেশে অপহরণ ও হত্যার শিকার হচ্ছে। এ ধরনের অপরাধ সমাজের ভেতর এক গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করে। অপরাধীর যথোপযুক্ত শাস্তিই কেবল তা রোধ করতে পারে।
মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটে কক্সবাজারের রামুতে। সেখানে মুক্তিপণ না দেওয়ায় সহোদর দুই শিশুকে হত্যা করেছে অপহরণকারীরা। তিনদিন আগে অপহরণ করা দুই শিশুকে উদ্ধারে পুলিশ-জনতার অভিযানকালে গত বুধবার ভোরে এ হত্যার ঘটনা ঘটে। হত্যার শিকার শিশুরা হলো- মোহাম্মদ হাসান শাকিল (১০) ও মোহাম্মদ হোছাইন কাজল (৮)।
নিহত মোহাম্মদ হাসান পলাশ বাইশারী শাহ নুরুদ্দিন মাদরাসার তৃতীয় শ্রেণির এবং মোহাম্মদ হোছাইন কাজল বড়বিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। গত রোববার (১৭ জানুয়ারি) বিকালে বাড়ির পাশে খেলা করার সময় অপহরণকারী চক্র মোহাম্মদ হাসান শাকিল ও মোহাম্মদ হোছাইন কাজলকে অপহরণ করে। পরে অপহরণকারীরা অভিভাবকদের মোবাইল ফোনে কল করে ৪ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে আসছিলো।
পুলিশ অভিযান চালালেও অপহৃতদের উদ্ধার করতে পারেনি। ফলে ঘটে এই মর্মান্তিক ঘটনা। শিশু অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবি একটি ভয়ানক অপরাধ। এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে একটি সিন্ডিকেট চক্র কাজ করে। এদের পেশাই হচ্ছে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়। শিশুদের সহজেই অপহরণ করা যায়। তাই শিশুরাই টার্গেট থাকে অপহরণকারীদের। কিন্তু যে সমাজে শিশুর নিরাপত্তা থাকে না সে সমাজে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায়ও এর প্রভাব পড়ে।
শিশুরা হচ্ছে ভবিষ্যত। তারা যাতে সুষ্ঠুভাবে বেড়ে উঠতে পারে, নিরাপদে নিশ্চিন্তে বসবাস করতে পারে সেটি নিশ্চিত করাই একটি কল্যাণরাষ্ট্রের অন্যতম সাংবিধানিক দায়িত্ব। এক্ষেত্রে ব্যর্থতার কোনো সুযোগ নেই।
রামুর ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশের দায়িত্ব হচ্ছে অপহরণকারীরা যাতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পায় সেটি নিশ্চিত করা। আমরা এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখতে চাই না।
এইচআর/পিআর