ভিডিও EN
  1. Home/
  2. মতামত

নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধান দিন

প্রকাশিত: ০৪:৩০ এএম, ০৫ ডিসেম্বর ২০১৫

বিজয়ের মাস ডিসেম্বর চলছে। এই মাসেই বাঙালি জাতি ছিনিয়ে এনেছিল রক্তখচিত লাল সবুজের পতাকা। পেয়েছিল একটি স্বাধীন ভূখণ্ড। স্বাধীন দেশে নাগরিকরা মাথা উচুঁ করে বসবাস করবে এটাই ছিল প্রত্যাশা। যেখানে নিশ্চিত থাকবে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান শিক্ষা চিকিৎসার মত মৌলিক অধিকার। থাকবে আইনের শাসন, মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা। কিন্তু যখনই এর ব্যত্যয় ঘটে মানুষ আশাহত হয়। স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব তখন কারো কারো কাছে অর্থহীন হয়ে ওঠে।

গতকাল ৪ ডিসেম্বর শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি মিলনায়তনে এমনই কিছু বেদনাভারাক্রান্ত মানুষ সমবেত হয়েছিলেন তাদের দুঃখ দুর্দশা গণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরার জন্য।  ২০১৩ সালের ২ ডিসেম্বর থেকে গত  দুই বছর আগে নিখোঁজ হওয়া মোট ১৯ পরিবারের সদস্যরা বলেছেন স্বজনদের কাছ থেকে দূরে থেকে তাদের দুর্বিষহ জীবন-যাপনের কথা। পরিবারগুলোর অভিযোগ গত দুই বছরের বিভিন্ন সময়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে সাদা পোশাকের লোকজন তাদের স্বজনদের তুলে নিয়ে গেছে। এরপর এখন পর্যন্ত তাদের কোনো খোঁজ মেলেনি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছ থেকেও পাওয়া যায়নি সদুত্তর। এ অবস্থায় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন নিখোঁজের স্বজনরা। অবিলম্বে নিখোঁজদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশে মানুষের নিখোঁজ বা গুম হয়ে যাওয়া কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারের লোকজন জানতে পারছে না তাদের স্বজনদের অবস্থা আসলে কি। কে তাদের তুলে নিয়ে গেছে। কিংবা তারা আদৌ বেঁচে আছে কিনা। এই অবস্থা যে স্বজনদের জন্য কতোটা দুর্বিষহ সেটা ভুক্তভোগীরাই কেবল বলতে পারবেন। নিখোঁজ ব্যক্তিদের রাজনৈতিক পরিচয় রয়েছে। এ কারণে তাদের গুম হওয়ার বিষয়টি বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। তাছাড়া সাধারণ একজন নাগরিকও যদি নিখোঁজ হন তাকে খুঁজে বের করাও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্ব। দুঃখজনক হচ্ছে, এ বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট কোনো বক্তব্য পাওয়া যায় না। এ কারণে নিখোঁজদের পরিবারের লোকজনের  বিপদ আরো বেড়ে যায়। কোনো ব্যক্তি যদি অপরাধ করে থাকে তাকে গ্রেপ্তার করার অধিকার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর রয়েছে। কিন্তু যারা নিখোঁজ হয়েছেন তাদের ব্যাপারে কোনো তথ্যই নেই স্বজনদের কাছে। গুম হওয়ার আরও একটি বিপদ এই যে, প্রতিটি মুহূর্ত কাটে অপেক্ষায়। অপেক্ষার প্রহর ভয়াবহ রকম কষ্টের। এই নারকীয় যন্ত্রণা থেকে স্বজনদের মুক্তি দেয়াটা অত্যন্ত জরুরি।

আমরা নিখোঁজ ব্যক্তিদের সম্পর্কে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সুষ্পষ্ট বক্তব্য চাই। গুম, আতঙ্ক একটি সমাজের নিরাপত্তা বোধকে সাংঘাতিকভাবে নষ্ট করে দেয়। মনে রাখা প্রয়োজন, যে কোনো ব্যক্তির নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব কিন্তু সরকারের। এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আমরা আশা করি। স্বজনদের অপেক্ষার পালা যত দ্রুত শেষ হবে সবার জন্য তা ততোই মঙ্গল।

এইচআর/এমএস

আরও পড়ুন