ভিডিও EN
  1. Home/
  2. মতামত

ফেসবুক খুলে দিন

প্রকাশিত: ০২:৩৪ এএম, ০৪ ডিসেম্বর ২০১৫

‘দ্বার বন্ধ করে দিয়ে ভ্রমটারে রুখি/ সত্য বলে আমি তবে কোথা দিয়ে ঢুকি’- গত ১৮ নভেম্বর থেকে বাংলাদেশে ফেসবুক, ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ থাকার প্রেক্ষাপটে রবীন্দ্রনাথের এই উক্তির শরণ নিতে হল। নিরাপত্তাজনিত কারণে এসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। আশা করা গিয়েছিল এটা সাময়িক ব্যবস্থা। সরকারের পক্ষ থেকেও এমন কথায়ই বলা হয়েছিল। কিন্তু পনের দিনেরও বেশি হয়ে গেল, এখনো ফেসবুক খুলে দেয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বাংলাদেশে প্রায় ১ কোটি ৭০ লাখেরও বেশি মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করে। সত্যি বলতে কি আধুনিক জীবনযাত্রার অংশ হয়ে গিয়েছে ফেসবুক। ফেসবুক বন্ধ থাকায় একটা অস্বস্তিকর অবস্থার মধ্য দিয়ে দিন পার করছে তারা। প্রযুক্তি ব্যবহারে অভ্যস্ত মানুষজন একটা সময় পর্যন্ত হয়তো ধৈর্য ধরবে, দীর্ঘমেয়াদে এটা কিন্তু হিতে বিপরীত হতে পারে। জননিরাপত্তার বিষয়টি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। তাই বলে শুধু নিরাপত্তার অজুহাতে ফেসবুকসহ অন্যান্য অ্যাপস দিনের পর দিন বন্ধ রাখা মোটেও যুক্তিসঙ্গত নয়। কাজেই যত দ্রুত সম্ভব এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

ফেসবুক এখন শুধু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমই নয়। ব্যবসা-বাণিজ্যসহ অনেক কিছুই এখন ফেসবুক নির্ভর। বিশেষ করে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তারা ইন্টারনেট ব্যবহার করেই ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনা করেন। ফেসবুক বন্ধ থাকায় লাখ লাখ মানুষের জীবন-জীবিকার ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। অনেকের অবস্থায়ই করুণ।বর্তমান সরকার একদিকে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কথা বলছে, অন্যদিকে ফেসবুক বন্ধ করে দিচ্ছে- এটা স্পষ্টতই স্ববিরোধিতা। আমরা এই সম্পাদকীয় স্তম্ভে পূর্বেও বলেছি, মাথা ব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলা কোনো সমাধান নয়। অপরাধীরা এগুলো ব্যবহার করে বলেই তা বন্ধ করে দিতে হবে-এটা কোনো যুক্তি হতে পারে না। কারণ অপরাধীর যোগাযোগের হাজারটা পথ খোলা আছে। এখন তো প্রযুক্তি না জানা অনেক মানুষও বিকল্প পথে ফেসবুক ব্যবহার করছে। জেনে যাচ্ছে তথ্য-প্রযুক্তির অজানা অনেক বিষয়। ভবিষ্যতে এটাও যে বিপদের কারণ হবে না তার কি কোনো গ্যারান্টি আছে?

সরকার ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সাথে নিরাপত্তাজনিত চুক্তি করার কথা বলছে। এ নিয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা হয়েছে। চুক্তি করার পর ফেসবুক খুলে দেয়া হবে-এমন ইঙ্গিতও দেয়া হচ্ছে। যাই করা হোক, সেটা যত দ্রুত হয় ততই মঙ্গল। আসলে প্রযুক্তিকে প্রযুক্তি দিয়েই মোকাবেলা করতে হবে।  এছাড়া অপরাধীরা প্রযুক্তি ব্যবহারে যতোটা দক্ষ অপরাধ দমন বাহিনীকেও তার চেয়ে দক্ষ করে তোলাটাই হবে প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ দমনের কার্যকর উপায়। সেদিকে নজর দেয়াটাই এখন সরকারের অন্যতম দায়িত্ব। কোনো কিছু বন্ধ করে দেয়ার শর্টকাট রাস্তায় আসলে সমাধান খোঁজাটা বাস্তবসম্মত নয়।

এইচআর/আরআইপি