ভিডিও EN
  1. Home/
  2. মতামত

নূর হোসেনরা নিপাত যাক

প্রকাশিত: ০৩:৩৭ এএম, ১৪ নভেম্বর ২০১৫

চাঞ্চল্যকর সাত খুনের মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনকে শেষ পর্যন্ত ভারত থেকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে এটা নানা দিক থেকেই স্বস্তিদায়ক। এই রকম একটি প্রচেষ্টা দেখা গেল শিশু রাজন হত্যায় অভিযুক্ত কামরুলকে সৌদি থেকে দেশে ফিরিয়ে আনার মধ্য দিয়ে। রাজন হত্যার রায় ঘোষণা করা হয়েছে অত্যন্ত স্বল্পতম সময়ের মধ্যে। ফাঁসির দণ্ড নিয়ে কামরুল এখন কারাগারে। নূর হোসেনকেও ভারত থেকে এনে আদালাতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এই দু`টি ঘটনায়ই এটা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে অপরাধ করে কোথাও লুকিয়ে থাকার জায়গা এখন কমে আসছে অপরাধীদের জন্য। সরকার যদি আন্তরিক হয় তাহলে সীমান্ত পার হলেই যে অপরাধীরা ধরাছোয়ার বাইরে চলে যায় এই ধারণাও পাল্টে দেয়া যায়। দু`জন চিহ্নিত অপরাধীকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সরকার যে আন্তরিকতা, দক্ষতা দেখিয়েছে তা জনসাধারণের প্রতি দায়বদ্ধ থাকার ব্যাপারটিকেও আরও জোরালো করছে। এ ব্যাপারে সরকার অবশ্যই প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য।

নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনাটি দেশব্যাপী আলোচিত। এই পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডে নিন্দার ঝড় ওঠে। নারায়ণগঞ্জের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাত ব্যক্তি অপহৃত হওয়ার তিনদিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে ছয়জনের এবং পরদিন আরেকজনের লাশ পাওয়া গেলে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। এই হত্যার সঙ্গে র‌্যাবের কিছু কর্মকর্তা জড়িত এমন অভিযোগ উঠতে থাকে। অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যাব-১১-এর অধিনায়কসহ তিন কর্মকর্তাকে আগাম অবসরে পাঠানো হয়। ঘটনা পর পরই গত বছরের ২৭ এপ্রিল ভারতে পালিয়ে যান নূর হোসেন। বৃহস্পতিবার অবশেষে তাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হল।

সাত খুনের ঘটনায় শুরু থেকেই নানা সংশয় ও সন্দেহ ছিল যে শেষ পর্যন্ত এই খুনের বিচার হয় কিনা। বিশেষ করে প্রভাবশালী মহলের নাম বেরিয়ে আসায় এই সন্দেহ আরও দানাবাঁধে। তবে সব সংশয় দূর করে অভিযুক্ত তিন র‌্যাব- কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। হত্যা মামলার চার্জশিটও দেয়া হয়ে গেছে। প্রধান অভিযুক্ত নূর হোসেনও এখন কারাগারে। সবকিছু মিলিয়ে সাতখুনের ঘটনার বিচারের পথ অনেকটাই প্রশমিত। এখন সত্যিকার অপরাধীরা যাতে সাজা পায় সেটিই দেখতে চায় দেশের মানুষ।

রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের ফলে দেশে এমন একটি অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে যেখানে ‘নূর হোসেন’-এর মত মানুষরা রাজনীতিসহ অনেক কিছু নিয়ন্ত্রণ করছে। অপরাধীর শাস্তির পাশাপাশি এই বিষয়গুলো নিয়েও ভাবতে হবে। রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ না হলে একজন নূর হোসেনের যত বড় শাস্তিই হোক তাতে কি অবস্থার খুব বেশি পরিবর্তন হবে? কারণ ‘সব সময় সরকারি দল করা’ নূর হোসেনদের সৃষ্টি হবার পথ বন্ধ করতে হবে সবার আগে। এ বিষয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য সৃষ্টির বিকল্প নেই। সন্ত্রাসীদের লালন, পালন, তাদের প্রশ্রয়দানের সংস্কৃতি বন্ধ করার এখনই উপযুক্ত সময়। নূর হোসেনকে ফিরিয়ে আনার মধ্য দিয়ে যার সূচনা হল।

এইচআর/এসএম