ফুটবলের নতুন দিন
কলকাতার ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকে ৩-১ গোলে হারিয়ে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ চ্যাম্পিয়নশিপে চট্টগ্রাম আবাহনীর শিরোপা জয় কি বাংলাদেশ ফুটবলের জন্য নতুন কোনো বার্তা নিয়ে আসবে- এ রকম একটি প্রশ্ন উঠতেই পারে। এদেশের ফুটবল কি আবার তার হারানো গৌরব ফিরে পাবে? শুরু হবে কি ফুটবলের নতুন দিন? আপাত দৃষ্টিতে এসব প্রশ্নের উত্তর ইতিবাচক হবে বলেই ধারণা করছেন ক্রীড়া বিশ্লেষকরা। বাংলাদেশ ঐতিহ্য ধরে রাখার ব্যাপারে খুব একটা আন্তরিক নয়, সেটা খেলাধুলা কিংবা অন্য যে কোনো ক্ষেত্রেই হোক না কেন। এই অপবাদ ঘোচাতে হবে। বাংলাদেশের ফুটবলকে ফিরিয়ে দিতে হবে তার গৌরবময় ঐতিহ্য।
শুক্রবার চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপা জিতে নিল চট্টগ্রাম আবাহনী। জয়টা বড় ব্যবধানের। কলকাতার ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকে ৩-১ গোলের ব্যবধানে হারানো কোনো মামুলি ব্যাপার নয়। বাংলাদেশের অন্যান্য বড় দল যা পারেনি চট্টগ্রাম আবাহনী তা করে দেখিয়েছে। এ জন্য প্রশংসা তাদের প্রাপ্য। তাই তো রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকারসহ অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের শুভেচ্ছা, অভিনন্দন আর অসংখ্য ফুটবলপ্রেমীর ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছে চট্টগ্রাম আবাহনী। সবচেয়ে বড় সমর্থনটা এসেছে বাংলাদেশের দর্শকদের কাছ থেকে। দর্শকরাই যে বাংলোদেশের খেলার প্রাণ সেটা ক্রিকেট, ফুটবল যাই হোক না কেন এটা বার বার প্রমাণিত হয়েছে। যে দেশে খেলা অন্তপ্রাণ এমন দর্শক আছেন সে দেশ খেলাধুলায় বিশেষ করে ফুটবলে পিছিয়ে থাকবে এটা হতে পারে না। আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আয়োজনেও রয়েছে বাংলাদেশের সাফল্য। এ্ররই ধারাবাহিকতায় অনূর্ধ ১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে আগামী বছর বাংলাদেশেই।
চট্টগ্রাম সাফল্যের পর বাংলাদেশের ফুটবল নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। কিভাবে ফুটবলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় তার জন্য সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। বাড়াতে হবে মাঠের সংখ্যা। সারা বছর ধরেই খেলার আয়োজন থাকতে হবে। পাইপ লাইনে যাতে অনেক খেলোয়াড় থাকে সেজন্য স্কুল পর্যায় থেকেই খেলাধুলার একটি পরিকল্পনার ছাপ থাকবে হবে। ক্রীড়াবান্ধব একটি পরিবেশও সৃষ্টি করতে হবে। সারাদেশে ক্লাব কালচার গড়ে তুলতে হবে। ঐতিহ্যবাহী ফুটবলের দিকে আকৃষ্ট করতে হবে নতুন প্রজন্মকে ।
মনে রাখা প্রয়োজন ফুটবল আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের সঙ্গেও জড়িত। একাত্তরে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল ছিল আমাদের ক্রীড়া যোদ্ধা। সেই গৌরবময় ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে লালন করে ফুটবলকে আমাদের স্বপ্নের কাছে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই হবে এখনকার কর্তব্য। চট্টগ্রাম থেকে সেই বার্তাই পাওয়া গেল।
এইচআর/এমএস