ঢাবিতে ভর্তিচ্ছুরা নাকি মেধা যাচাইকারীরা মেধাহীন?
আমি তখন সবেমাত্র ইরাক যুদ্ধ কাভার করে দেশে ফিরেছি। টানা দুই মাস রাত-দিন কষ্ট করে যুদ্ধ ময়দান থেকে সংবাদ পাঠিয়েছি। সে সব বিবেচনা করে আমার পত্রিকা কর্তৃপক্ষ একমাস ছুটি দিয়েছেন। আমি বেড়াচ্ছিলাম আত্মীয় স্বজন, বন্ধুবান্ধবের বাড়ি। একদিন মিরপুরে এক প্রাক্তন সহকর্মির বাড়ি বেড়াতে গেছি। বয়সে উনি অনেক বড়। উনার ছোট ছেলে আমাকে দেখে খুব খুশি। ক’দিন আগে তার ৫ম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষায় একটা প্রশ্ন এসেছিল। বাংলাদেশের একজন সাংবাদিক বর্তমানে ইরাকে যুদ্ধ সংবাদ সংগ্রহ করছে তার নাম কি? ভাতিজার পক্ষে এর উত্তর দেওয়া কঠিন ছিল না কারণ বাবাকে নিয়ে সে চ্যানেল-আইতে আনিস আংকেলের লাইভ সংবাদ দেখেছে। বাবাও খুশি ছেলে সেবার বৃত্তি পেয়েছে। বন্ধুও এখন ছেলের সামনা সামনি।
আমাকে নিয়ে সাধারণ জ্ঞানের প্রশ্ন। শুনে কিছুটা খুশি যে হইনি তা নয়। কিন্তু ভাবছিলাম- এই ছোট্ট ছেলের জন্য এই কঠিন প্রশ্ন কেন? সাধারণ জ্ঞানের প্রশ্নপত্রে আমরা এত কঠিন এবং অপ্রয়োজনীয় প্রশ্ন কেন করি? পঞ্চম শ্রেণির ছেলে নিউজ নাও দেখতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ছাত্রের জন্য এটা না জানা সে সময়ের প্রেক্ষাপটে হয়তো দোষের হতে পারে কিন্তু ৫ম শ্রেণির ছাত্রের জন্য মোটেও গ্রহণযোগ্য প্রশ্ন ছিল না।
সাধারণ জ্ঞানের প্রশ্ন আজ এক ভীতির কারণ হয়ে পড়েছে সব স্তরের শিক্ষার্থীদের কাছে। সেটাকে কেন্দ্র করেই মূলত কোচিং বাণিজ্য জমজমাট। যে কোনও চাকরি-বাকরি ভর্তি পরীক্ষায় সাধারণ জ্ঞানের প্রশ্ন আসবেই। উত্তর কিন্তু সিংহভাগই ভালো করছে না। বিসিএস পরীক্ষায় যে হাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির ক্ষেত্রেও সেই হাল। অনেক প্রশ্নের ভুল উত্তর দেওয়া হচ্ছে। ফলে মোট নম্বর কমে গড়ে ফেল করছে পরীক্ষার্থীরা।
সেই ভীতির কারণে কিনা জানি না, সাধারণ জ্ঞান নিয়ে লোকজনের সাধারণ জ্ঞানও ভয়ানকভাবে কমে যাচ্ছে। আমি একটি বেসরকারি টিভির সাংবাদিক নিয়োগে প্রশ্ন রেখেছিলাম- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডেন্ট-এর নাম কি? ৭০ ভাগ উত্তর দিয়েছে জিল্লুর রহমান। শেখ হাসিনা নয়। তখনকার বাংলাদেশের প্রেসিডেন্টকে তারা ভেবেছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডেন্ট। রাষ্ট্র আর দলের অধিকর্তার মাঝে তারা পার্থক্য খুঁজে পায়নি।
পেশাগত কারণে দুই বছর আগে আমি একটি স্বনামধন্য প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকে ক্লাসে প্রশ্ন করেছিলাম বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির নাম কি? তাদেরকে তাৎক্ষণিকভাবে উত্তর লিখতে বলেছিলাম। পঞ্চাশ শতাংশই ভুল করেছে। উত্তরের জায়গা খালি রেখেছে, কেউ প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের নাম লিখেছে। কেউ কেউ হামিদুর রহমান জাতীয় কিছু লিখেছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মারাত্মক পর্যায়ে সাধারণ জ্ঞানের অভাব থাকার একটা কারণ আমি চিহ্নিত করেছি যে, তাদের প্রায় ৭০/৮০ শতাংশ টিভিতে খবর দেখে না এবং দৈনিক পত্রিকা পড়ে না।
দৈনিক পত্রিকা পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য কতটা জরুরি এটা বুঝাতে আমি রাষ্ট্রপতির নাম না জানার উদাহরণ দিলাম আমার আরেকটি ক্লাসের শিক্ষার্থীদের, চলতি মাসে এটাও বললাম যে আমি প্রশ্নটা করে তোমাদেরকে লজ্জা দিতে চাই না। তারা জবাব দিতে আগ্রহ দেখালে আমি বললাম, ঠিক আছে শুধু নির্দিষ্ট একজনকে প্রশ্নটা করবো। তাতেই বুঝবে পত্রিকা না পড়ায় তোমাদের সাধারণ জ্ঞানের অভাব কি পরিমাণ। দেখবে তোমাদের এমন সহপাঠিও আছে যারা বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির নাম জানে না। শুধু একজনকেই প্রশ্ন করেছিলাম। সে প্রয়োজনের অতিরিক্ত সময় নিয়ে বলল, হামিদুর রহমান। মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর আব্দুল হামিদ যদি জানতেন তার নাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া অনেক শিক্ষার্থী জানে না তাহলে তিনি কাকে আত্মহত্যা করতে বলতেন আমি জানি না- শিক্ষার্থীদের নাকি তাদের শিক্ষকদের?
সম্প্রতি একটি দৈনিকের রিপোর্টে দেখলাম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ‘মেধাবীরা’ ফেলের রেকর্ড করেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘উচ্চ মাধ্যমিকে পাসের হার আর জিপিএ-৫ এর রেকর্ড গড়ার প্রতিযোগিতা থাকলেও এসব শিক্ষার্থীরা শুরুতেই হোঁচট খাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রতিযোগিতায় নেমে। আগের বছরগুলোর মানের পরীক্ষা হলেও ভর্তি পরীক্ষায় পাসের হার নেমে এসেছে লজ্জাজনক অবস্থায়। একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ইউনিটে মাত্র ৫ ভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছে। ঢাকা ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এরই মধ্যে হয়ে যাওয়া পরীক্ষার ফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায় পাসের হার ৫ থেকে ২০ ভাগের বেশি হচ্ছে না। ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের এমন দৈন্যদশাকে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার মানকে বড় প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে বলে মনে করছেন শিক্ষাবিদরা। যদিও শিক্ষামন্ত্রী ও মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টরা নানাভাবে এ অভিযোগ এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।`
রিপোর্টে উদাহরণ দিয়ে বলা হয়েছে, ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ক’, ‘খ’ ও ‘গ’ ৩টি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল মোট ১ লাখ ৬৬ হাজার ৯১৫ জন পরীক্ষার্থী। যাদের মধ্যে পাস করেছে মাত্র ৩০ হাজার ৬২০ জন। শতকরা হিসেবে যা ১৭.১৮ শতাংশ। চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক ও ঢাবির ভর্তি পরীক্ষার ফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ‘ক’ ইউনিটে পাস করেছে ২১.৫০, ‘খ’ ইউনিটে ৯.৫৫ শতাংশ এবং ‘গ’ ইউনিটে ২০.৬১ শতাংশ। গত চার বছর ধরে এই হাল।
আমার দৃষ্টিতে ফলাফল বিপর্যয়ের এই দায় শুধু শিক্ষার্থীদের নয়। প্রশ্নপত্র প্রণেতাদেরও। সে কথাটি কেউ বলছে না। আমি প্রশ্নপত্রগুলো বিশ্লেষণ করে দেখেছি এখানে একজন শিক্ষার্থীর চিন্তা করার ক্ষমতাকে, ভাষা জ্ঞানকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে না। বেশিরভাগ প্রশ্নপত্র এমসিকিউ টাইপ। সাধারণ জ্ঞান, বাংলাদেশ এবং বাংলা ভাষা বিষয়ের প্রশ্ন সবচেয়ে খারাপ। খারাপ বলছি এ কারণে যে, সাধারণ জ্ঞানের এতো সব জটিল প্রশ্ন এখন মানুষের মাথায় রাখার জায়গা নেই। তারা মুঠোফোনে রাখে। গুগোল করে বের করে। মানুষ এ দায়িত্ব দিয়ে রেখেছে ইন্টারনেটের জ্ঞান ভাণ্ডারকে।
২০১৪-১৫ সালের ঢাবি’র ‘খ’ ইউনিটের একটি প্রশ্নপত্র আমার হাতে আছে। তার থেকে কিছু নমুনা দিচ্ছি। বাংলাদেশ-ভারত সমুদ্র বিরোধ নিষ্পত্তির রায়ে কত কিলোমিটার জায়গা জুড়ে বাংলাদেশের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে: (ক)১৯.৫, (খ)২১.২, (গ) ১৮.৯ নাকি (ঘ) ১৯.৭ নটিক্যাল মাইল? এটা কেউ কি মাথায় রাখবে নাকি ফোনে দেখবে? এক নটিক্যাল মাইল= ১.৮৫২ কিলোমিটার। আমি জানি বাংলাদেশ পেয়েছে ১৯,৪৬৭ বর্গকিলোমিটার। প্রশ্নকর্তাকে বলি এবার আপনি হিসাব করেন কত নটিক্যাল মাইল? উত্তর ক, নাকি ঘ? এখানে যদি প্রশ্ন করা হতো: বাংলাদেশ-ভারতের মোট সমুদ্রসীমা কত কিংবা ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা কোন্ বছর চূড়ান্ত হয়- তাহলেও অন্তত প্রশ্নের ন্যূনতম মিনিং থাকতো এই যুগে।
ঢাকা শহরের প্রথম ফ্লাইওভার কত সালে উদ্বোধন হয়- ২০০৪ সালের ৩ নভেম্বর , ৪ নভেম্বর, ৫ নভেম্বর নাকি ৬ নভেম্বর? একজন শিক্ষার্থী যদি ২০০৪ সালও জানা থাকে এটাইতো বড় পাওনা আমার দৃষ্টিতে। নভেম্বরের ঠিক কোন্ তারিখে উদ্বোধন হয়েছে এটা জানা এতো জরুরি কেন তার মেধা যাচাইয়ের জন্য? এটা কি বাংলাদেশের জন্ম তারিখ নাকি জাতির জনকের জন্ম তারিখ? ঢাকার মহাখালিতে ২০০৪ সালের ৪ নভেম্বর ফ্লাইওভার নামে একটা ওভারব্রিজ উদ্ধোধন করা হয়েছে- এটার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চাওয়া একজন শিক্ষার্থীর মেধার কি সম্পর্ক! সাধারণ জ্ঞানের প্রশ্নের হাল যদি এই হয় তাহলে অন্ততকাল পড়েও কেউ সেই জ্ঞানের অধিকারী হতে পারবে না। সাধারণ জ্ঞানেরও সীমা থাকা দরকার।
বাংলা প্রশ্নপত্রের শ্রী দেখলে পরীক্ষার্থীদের কান্না আসবে। যেমন ইংরেজি জ্ঞানের পরীক্ষার প্রশ্নে আপনাকে বলা হল নিচের passage টি পড়ে প্রশ্নগুলোর জবাব দিন। ১. দ্বিতীয়দফা পক্ষাঘাতের আক্রমণে লেখকের কি হয়েছিল? ২. Passage-এ Quarry শব্দের মানে কি? ৩. Apparent শব্দের মানে কি? এবার বাংলা জ্ঞানের প্রশ্ন দেখেন। সেখানে বলা হচ্ছে নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে প্রশ্নগুলোর জবাব দিন। ১. অনুচ্ছেদে তৎপুরুষ সমাসবদ্ধ পদ কয়টি? ২. অনুচ্ছেদে ব্যবহৃত যুক্তবর্ণের সংখ্যা কত? ৩. অনুচ্ছেদে কয়টি প্রবাদ প্রবচন রয়েছে? উপরের দুই উদাহরণে ইংরেজির বেলায় পরীক্ষার্থীর ভাষা জ্ঞানের যে পরীক্ষা এর সঙ্গে বাংলার কি সামঞ্জস্য আছে বা প্রশ্নের যৌক্তিকতা আছে? ‘তৎপুরুষ সমাসবদ্ধ পদ’ আমি নিজেই জানি না কিন্তু বাংলা ভাষায় আমার কথা বলা, পড়া এবং লেখালেখি করার কোনও পর্যায়ে আমি এই না জানার কারণে সমস্যায় পড়িনি। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করেও বলি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু এই প্রজন্মের সবার তৎপুরুষ সমাসবদ্ধ পদ জানা জরুরি নয়।
উদাহরণ দিলে এমন ভূরি ভূরি দিয়ে বলা যাবে যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার নামে, মেধা যাচাইয়ের নামে যে পরীক্ষা নিচ্ছে- সেটা এই যুগে অচল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে সবাইকে ইউনিটের নামে শ্রেণিবদ্ধ করে মেধা যাচাই-এর যে পরীক্ষা নিচ্ছে এটা একটা পশ্চাদপদ সিদ্ধান্ত। এর মাধ্যমে যে শিক্ষার্থী যেই বিষয়ে পড়তে আগ্রহী, যার যেই বিষয়ে মেধা আছে সে তাতে ভর্তি হতে পারছে না। আবার ইচ্ছে না থাকলেও অন্য বিষয়ে সে পড়ছে। কর্মজীবনে এসে সে ধাক্কা সামলাচ্ছি। সাংবাদিকতা পড়ে আমলা হচ্ছি। ইংরেজিতে পড়ে ব্যাংকার হচ্ছি। পাবলিক এড পড়ে আইটি বিজনেস করছি।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা সাবজেক্ট অনুসারে নিচ্ছে, সেটার প্রশ্নপত্র নিয়েও প্রশ্ন আছে কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সেটা অন্তত উন্নত বলবো আমি। একসময় পরীক্ষা হলে ক্যালকুলেটর নিয়ে ঢোকা অন্যায় ছিল। এখন এটা যেমন অচল সিদ্ধান্ত তেমনি ঢাবি’র ভর্তি পরীক্ষায় বর্তমান পদ্ধতিও মেধা যাচাইয়ের অচলপন্থা। হাই-টেকের এই যুগে উদ্ভট সাধারণ জ্ঞানের দায়িত্ব ছাত্ররা নেটকে দিয়ে রেখেছে, মাথাকে নয়।
ইউরোপ-আমেরিকাসহ পৃথিবীর নানা দেশে আমাদের ছেলে-মেয়েরা উচ্চ শিক্ষায় যাচ্ছে। ভাল রেজাল্ট করছে। ইংলিশ মিডিয়ামে পড়া সিংহভাগ শিক্ষার্থীরা আন্তজার্তিকভাবে স্বীকৃত সার্টিফিকেট নিয়েও ঢাবির ভর্তি পরীক্ষায়, বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারে না। এখানে ঝরে পড়া ইংলিশ মিডিয়ামের সেই ছাত্রদের কেউ কেউ আবার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে। তাহলে গলদটা কোথায়- শুধু শিক্ষার্থীদের মেধাহীনতা নাকি তাদের মেধা যাচাইয়ে মেধাহীনতা? সেদিকেও একবার নজর দেওয়া দরকার।
কমনসেন্স ইজ এন আনকমন কোয়ালিটি। সেটা শুধু ছাত্রদের নয়, ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দেখলে মনে হয়- শিক্ষকদেরও থাকা দরকার।
লেখক: সাংবাদিক ও শিক্ষক
[email protected]
এইচআর/এমএস