ভিডিও EN
  1. Home/
  2. মতামত

যুদ্ধাপরাধের বিচারের পথে আরেক ধাপ

প্রকাশিত: ০২:৪১ এএম, ০২ অক্টোবর ২০১৫

একাত্তরে সংঘটিত হত্যা, গণহত্যা, নির্যাতন, দেশান্তর ও ধর্মান্তরসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী ও জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের বিরুদ্ধে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এর আগে বুধবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ফাঁসি বহাল রেখে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করে। এরফলে একাত্তরের মানবতাবিরোধী এই দুই অপরাধীর বিচার প্রায় শেষ ধাপে বলা যায়। সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে ফাঁসি কার্যকর করার অপেক্ষায় এখন দেশবাসী।

২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে যুদ্ধাপরাধের বিচারের ব্যাপারে সুষ্পষ্ট অঙ্গীকার ছিল। এরপর সেই অঙ্গীকারের প্রতি জনরায় পেয়ে দলটি সরকার গঠন করে।  শুরু হয় যুদ্ধারাধের বিচার প্রক্রিয়া। দুটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আরম্ভ করা হয়। ইতিমধ্যেই অনেকরই বিচার সম্পন্ন হয়েছে। যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লা এবং কামারুজ্জমানের ফাঁসির দণ্ডও কার্যকর করা হয়েছে। এখন বাকি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারও যাতে শেষ করা যায় সেটিই প্রত্যাশা করছেন একাত্তরে স্বজন হারানো এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মানুষজন।

বুধবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দান কালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুদ্ধাপরাধের বিচারের ব্যাপারে তার অঙ্গীকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবিটি দীর্ঘদিনের। কিন্তু স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর  একাত্তরের ঘৃণ্য অপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। সামরিক শাসক জিয়া ক্ষমতা দখল করে নিষিদ্ধ জামায়াতে ইসলামীকে আবার রাজনীতি করার সুযোগ দেন। এ সময় কারাগারে বন্দি অনেক যুদ্ধাপরাধীকেও ছেড়ে দেয়া হয়। পরবর্তীতে রাজনীতিতে তারা আসন পাকাপোক্ত করে। খালেদা জিয়ার জোট সরকারে নিজামী-মুজাহিদ মন্ত্রীও হন। কিন্তু দেশের মানুষ সব সময়ই চেয়েছে যুদ্ধাপরাধের বিচার।

আশার কথা, সাবেক মন্ত্রী মুজাহিদ এখন ফাঁসির রজ্জু থেকে মাত্র অল্প কিছু দূরে। বিএনপির ডাকসাইটে নেতা যিনি দাম্ভিকতা সহকারে বলতেন তার যুদ্ধাপরাধের বিচার কেউ করতে পারবে না, সেই সাকা চৌধুরীর ফাঁসির রায়ও এখন কার্যকরের অপেক্ষায়।

একাত্তরে স্বজন হারানোর বেদনা লাঘব করাই শুধু নয়, দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্যও যুদ্ধাপরাধের বিচার করা অত্যন্ত জরুরি। অপরাধ কখনো তামাদি হয় না, এবং অপরাধ করলে কেউ পার পায় না- এই ধারণা প্রতিষ্ঠিত করতে পারলে সমাজে নীতি নৈতিকতার উন্মেষ ঘটে। এ কারণে যুদ্ধাপরাধের বিচারের কোনো বিকল্প নেই। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শোষণহীন, বঞ্চনাহীন, সমৃদ্ধ  অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠন করার প্রক্রিয়ায় এগুনোরও পথও পরিষ্কার হবে যদি স্বাধীনতা বিরোধী চক্রকে চিরতরে নির্মূল করা যায়। এ ব্যাপারে জাতীয় ঐক্যমতের কোনো বিকল্প নেই।

এইচআর/এমএস