শেখ হাসিনার নেতৃত্ব এবং বাংলাদেশের এগিয়ে চলা
২৮ সেপ্টেম্বর মহাকালের রথের আরোহী ও অমৃতের সন্তান শেখ হাসিনার জন্মদিন। এবারের জন্মদিন আরো বেশি তাৎপর্য নিয়ে আমাদের সামনে হাজির হয়েছে। জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক ‘চ্যাম্পিয়ন্স অব দ্য আর্থ’ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় তাঁর সুদূরপ্রসারী কর্মকাণ্ডের স্বীকৃতিস্বরূপ এই পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। বিশ্বের অন্যতম স্বল্পোন্নত দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েও শেখ হাসিনা প্রমাণ করেছেন জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিনিয়োগ সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন অর্জনের ক্ষেত্রে উৎকৃষ্ট বিনিয়োগ। শেখ হাসিনা এ ধরনের আন্তর্জাতিক অনেক পুরস্কার পেয়েছেন। এসব পুরস্কার তাঁর কাজের স্বীকৃতি হলেও তিনি নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে চলেছেন জনমানুষের কল্যাণে। শেখ হাসিনা ২০১১ সালে বিশ্বের সেরা প্রভাবশালী নারী নেতাদের তালিকায় ৭ম এবং ২০১০ সালে নিউইয়র্ক টাইমস সাময়িকীর অনলাইন জরিপে বিশ্বের সেরা দশ ক্ষমতাধর নারীদের মধ্যে ৬ষ্ঠ স্থানে ছিলেন। অন্যদিকে ২০১০ সালের ৮ মার্চ বিশ্ব নারী দিবসের শতবর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিশ্বখ্যাত সংবাদ সংস্থা সিএনএন ক্ষমতাধর ৮ এশীয় নারীর তালিকা প্রকাশ করেছিল। ওই তালিকায় ৬ষ্ঠ অবস্থানে ছিলেন শেখ হাসিনা।
অর্থনৈতিক অগ্রগতি, অবকাঠামো নির্মাণ, জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ দমন, ধর্মনিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা, বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার কারণে বর্তমান সরকারের প্রতি মানুষের সমর্থন বেড়েছে। এ পর্যন্ত কোনো হামলা-হুমকি ও বাধা তাঁকে লক্ষ্যচ্যুত করতে পারেনি। অকুতোভয় সাহসী জননন্দিত শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ আজ সারাবিশ্বে উন্নয়নের মডেল হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করেছে। তাঁর রাজনৈতিক ভূমিকার কারণেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বপরিসরে নতুন মর্যাদায় অভিষিক্ত।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে শাসন ক্ষমতায় বিশেষত বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সংসদ বা গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে অনেক নারী রাজনীতিক এসেছেন; কিন্তু তারা কেউই কোনো দলের শীর্ষ নেতৃত্ব গ্রহণ করতে পারেননি বা ভিন্ন কোনো রাজনৈতিক দর্শন দাঁড় করাতে সক্ষম হননি। জাতীয় নারী নেতৃত্ব বলতে জোহরা তাজউদ্দীন, বেগম মতিয়া চৌধুরী, সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, খালেদা জিয়া, বেগম রওশন এরশাদ প্রমুখের নাম বারবার উচ্চারিত হয়; কিন্তু প্রধানমন্ত্রিত্ব না থাকার সময়েও শেখ হাসিনা সাহসী রাজনীতিক হিসেবেই জনগণের কাছে নমস্য ছিলেন। এখনও আছেন। কারণ তিনি এদেশের রাজনীতির ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর যোগ্য তনয়া হয়ে শাসনকার্য পরিচালনা করেছেন- কখনও বিরোধীদলীয় নেত্রী হয়ে সাংগঠনিক কর্মতৎপরতার মাধ্যমে দলীয় নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করেছেন; আবার কখনও বা রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে মানুষের ভাত ও ভোটের অধিকার রক্ষায় সচেষ্ট হয়েছেন।
১৯৯৬ সালের ২৩ জুন প্রথমবারের মতো গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন শেখ হাসিনা। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৯৬-২০০১ পাঁচ বছর ছিল স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল সময়। এ সময়কালের মধ্যে ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর ভারতের সাথে গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি, ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি, ১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা, ১৯৯৯ সালে ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করাসহ অনেক খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জিত হয়। এ সময় দ্রব্যমূল্য ছিল ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে। কৃষকের জন্য ন্যায্যমূল্যে সার, বীজ সরবরাহ এবং সেচ সুবিধা সম্প্রসারণের ফলে দেশ প্রথমবারের মতো খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে। প্রায় ২ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। প্রথম মোবাইল ফোন প্রযুক্তির বাজার উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় এবং উল্লেখযোগ্য হারে কর সুবিধা প্রদান করা হয়। বেসরকারিখাতে টেলিভিশন চ্যানেল অপারেট করার অনুমতি প্রদান করে আকাশ সংস্কৃতিকে তৃণমূল পর্যায়ে জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যাওয়া হয়। পিতার সাথে মাতার নাম লেখা বাধ্যতামূলক করা হয়। কম্পিউটার আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক হ্রাসকরণের দ্বারা সাধারণের জন্য তথ্যপ্রযুুক্তির সুযোগ অবারিত করে দেওয়া হয়। ১৯৯৬-২০০১-এর মতো ২০০৯-২০১৩ সাল পর্যন্ত ব্যাপক উন্নয়নের ফিরিস্তি এখানে উপস্থাপন করা যায়; কিন্তু সেই প্রয়াস না করে কেবল শেখ হাসিনার ধরিত্রী কন্যা হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া সম্পর্কে এখানে কিছু বলা হলো।
পরিবেশ সংরক্ষণ এখন বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোর মধ্যে অন্যতম। পৃথিবীর বিপর্যয় রোধে সারাবিশ্ব এখন সোচ্চার। পৃথিবীকে সুন্দর ও বাসযোগ্য রাখতে বিশ্বের কিছু নেতৃত্ব উদ্যোগ নিচ্ছেন, যার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্যতম। তাঁর নেতৃত্বে মহাজোট সরকার দায়িত্ব নিয়েই জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় ২০০৯-১০ অর্থবছরে নিজস্ব অর্থায়নে গঠন করে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড। শুধু তাই নয়, ফান্ড সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য প্রণয়ন করা হয় জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট আইন-২০১০। গঠন করা হয় জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক ট্রাস্টি বোর্ডও। নিজস্ব অর্থায়নে এ ফান্ড গঠন করা বিশ্বদরবারে বাংলাদেশকে নতুন করে পরিচিত করে তোলে। গত ৬ বছরে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডে ৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। এ ফান্ডের অর্থায়নে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলসহ সারাদেশে গ্রহণ করা হয়েছে ৩৬৮টি প্রকল্প। এর মধ্যে বেসরকারি সংস্থার ৬৩টি প্রকল্পও রয়েছে।
জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় অভিযোজন কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য উন্নয়ন সহযোগীদের অর্থায়নে বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ রেজিলিয়েন্স ফান্ড (বিসিসিআরএফ) গঠন করা হয়েছে। এ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ান এইড, ডেনমার্ক, ডিএফআইডি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড ও ইউএসএআইডি এ ফান্ডে সর্বমোট ১৮ দশমিক ৯৫ কোটি মার্কিন ডলার অনুদান দিয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অগ্রণী ভূমিকা পালনের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের সভাপতি, ইন্টারন্যাশনাল ক্লিন ডেভেলপমেন্ট মেকানিজমের বোর্ড সদস্য, গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ডের সদস্য, এডাপটেশন ফান্ড বোর্ড সদস্য এবং এডাপটেশন কমিটির সদস্য নির্বাচিত হয়েছে। এর সবই সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার অনন্য নেতৃত্বে।
তিনি নানা বিশেষণে বিশেষায়িত। সততা, নিষ্ঠা, রাজনৈতিক দৃঢ়তা; গণতন্ত্র, শান্তি, সম্প্রীতি ও বিশ্বভ্রাতৃত্বের অনন্য রূপকার আর মানব কল্যাণে নিবেদিতপ্রাণ তার চেয়েও আরো অনেক কিছু তিনি। দরদি নেতাটি দুঃখী মানুষের আপনজন; নির্যাতিত জনগণের সহমর্মী তথা ঘরের লোক। তিনি বলেছেন, ‘বাবার মতো আমাকে যদি জীবন উৎসর্গ করতে হয়, আমি তা করতেও প্রস্তুত।’ শান্তির অগ্রদূত শেখ হাসিনা দেশের মানুষের জন্য নিজের প্রাণকে তুচ্ছ করতে পারেন নির্দ্বিধায়। সাধারণ মানুষের আস্থা ও ভরসার কেন্দ্রবিন্দু তিনি। এজন্য তাঁর অনুপস্থিতি কারো কাম্য হতে পারে না। ধৈর্য ও সাহসের প্রতিমূর্তি শেখ হাসিনা গণতন্ত্রের মানসকন্যা, দেশরত্ন, কৃষকরত্ন, জননেত্রী- বহুমাত্রিক জ্যোতিষ্ক। তাঁকে কেন্দ্র করে, তাঁর নেতৃত্বে আবর্তিত হচ্ছে বাংলাদেশের সবকিছু।
আসলে শাসন ব্যবস্থার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। সরকারের সাফল্য নির্ভর করে শক্তিশালী নেতৃত্বের ওপর। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীর সংজ্ঞার্থ অনুসারে, প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও সংঘাতপূর্ণ প্রেক্ষাপটে নেতা ও অনুসারীগণ কর্তৃক স্বাধীনভাবে অথবা সমঝোতাপূর্ণভাবে স্থিরকৃত কিছু নির্দিষ্ট লক্ষ্য ও মূল্যবোধ, বিভিন্ন অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং অন্যান্য সম্পদরাজি ব্যক্তির দ্বারা সহজলভ্য করার পরস্পর বিনিময়কৃত প্রক্রিয়াই হলো নেতৃত্ব। এই সংজ্ঞায় রাজনীতি ও উন্নয়নের ধারণা বিজড়িত। জনগণের মৌলিক চাহিদা ও প্রয়োজনসমূহ একটি ভিশনের মাধ্যমে উচ্চতর চাহিদা ও প্রয়োজনে রূপান্তরিত করা নেতৃত্বের মৌল লক্ষণ। জনগণের কাছে নেতৃত্বের একটি ভিন্নতর আবেদন থাকে, যা কোনো ব্যক্তির গুণাবলির প্রতি জনগণের মধ্যে আকর্ষণ ও সক্রিয়তা সৃষ্টি করে। তিনি নির্দিষ্ট গুণাবলির দ্বারা সাধারণ মানুষ থেকে আলাদা। তাঁর রয়েছে সুনির্দিষ্টভাবে ব্যতিক্রমী ক্ষমতা, যা সাধারণ ব্যক্তির মধ্যে অনুপস্থিত। এজন্য তিনি নেতা হিসেবে গণ্য হয়ে থাকেন। শেখ হাসিনা প্রকৃতপক্ষে আলাদা, ভিন্ন, স্বতন্ত্র ও নেতৃত্বের গৌরবজনক আসনে সমাসীন। তিনি জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী অর্থনৈতিক বিকাশ ত্বরান্বিত করেছেন; সংকট উত্তরণে অনন্য ভূমিকা রেখেছেন। তিনি জনতার আকাক্ষাসমূহ এবং টিকে থাকার বাস্তবতার মধ্যে সেতুবন্ধনের সাহায্যে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে এনেছেন। তাঁর নেতৃত্বের সাফল্যে বাংলাদেশ আজ গৌরবজনক অধ্যায়ের সূচনা করেছে।
১৯৭৪ সালে মুক্তিযুদ্ধোত্তর বাস্তবতায় ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলে আমেরিকার রাজনীতিবিদরা বাংলাদেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। এ ধরনের মন্তব্য করেই ক্ষান্ত হননি তারা, বিভিন্ন দেশ ও সংস্থাকে পরামর্শ দেন বাংলাদেশকে কোনো প্রকার সাহায্য-সহযোগিতা না করার জন্য। তাদের বিরোধিতা ও ষড়যন্ত্রের পরও বাংলাদেশ আজ বিশেষ মর্যাদার অবস্থানে পৌঁছেছে। এ কারণে শেখ হাসিনার শাসনামলেই কিসিঞ্জারের পরবর্তী নেতৃবর্গ ভিন্ন সুরে কথা বলছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন বাংলাদেশকে বিশ্বের মডেল এবং বাংলাদেশস্থ সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডাব্লিউ মজিনা ‘এশিয়ার টাইগার’ বলে মন্তব্য করেছেন। তাঁরা উভয়ে এ ধরনের মন্তব্য করতে বাধ্য হয়েছেন বাংলাদেশের নানামুখী সাফল্য ও উন্নয়নের জন্য।
আজকে বাংলাদেশ যে অবস্থানে দাঁড়িয়েছে এটা হিলারি ও মজিনার পূর্ব-পুুরুষরা কোনো দিন স্বপ্নেও ভাবেননি। ২০১২ সালের ১৯ জুলাই মার্কিন কংগ্রেসের শুনানিতে সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী রবার্ট ব্লেক বলেছেন, বাংলাদেশ এশিয়ার একটি মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ শুনানিতে ডেমোক্র্যাটিক কংগ্রেসম্যান জো. ক্রাউলি ২০০৮ সালে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেন। ২০১২ সালের ২০ জুলাই রাজধানীর এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত মজিনা বলেন, বাংলাদেশের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এদেশ হবে বিশ্বের অন্যতম রপ্তানিকারক দেশ, বিশেষ করে ওষুধ শিল্প, তৈরি পোশাক, তথ্যপ্রযুক্তি, হিমায়িত মাছ রপ্তানির মাধ্যমে বাংলাদেশ হবে এশিয়ান টাইগার। তিনি আরো বলেন, কৃষি এবং শিক্ষাখাতে বাংলাদেশে বিপ্লব হবে। অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বাংলাদেশকে ‘নাম্বার ওয়ান উন্নয়নমুখী দেশ’ বলেছেন। এসব অর্জন সম্ভব হয়েছে জনগণের প্রতি শেখ হাসিনার অঙ্গীকারদীপ্ত নেতৃত্বের জন্য।
বর্তমান প্রজন্মের কাছে শেখ হাসিনা এক আশ্চর্য সাহসী রাজনীতিকের নাম; যাঁর সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনায় ভবিষ্যতের বাংলাদেশ উন্নয়নের ধারায় এগিয়ে চলেছে। তাছাড়া শেখ হাসিনাবিহীন যুদ্ধাপরাধের বিচার ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এজন্য তরুণ প্রজন্ম প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি-জামায়াতকে। আবার নির্বাচনের আগে বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতার বীভৎস চিত্র গণমানুষকে আতঙ্কিত করে তোলায় তারা আওয়ামী লীগের ধারাবাহিকতায় সন্তোষ প্রকাশ করে।
বিএনপির অবরোধ-হরতাল-নাশকতার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া ২০১৫ সাল ২০১৪-এর মতোই চ্যালেঞ্জিং; কিন্তু সহিংসতা আর জ্বালাও-পোড়াও করে অতীতে তারা থামাতে পারেনি যুদ্ধাপরাধের বিচার। বরং ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আযহারের মতো কুখ্যাত অপরাধীর ফাঁসির রায় জনগণকে শেখ হাসিনার প্রতি আস্থাশীল করে তুলেছে অনেক বেশি। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কৌশলের কাছে জামায়াতের বাঁচা-মরার আন্দোলনও দমে গেছে। শুধু অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নয়, কূটনীতিক দিক থেকেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছেন। তিনি মেধা ও প্রজ্ঞা দিয়ে সব বিরূপ পরিস্থিতিকে নিজের অনুকূলে নিয়ে এসেছেন। তাঁর মন্ত্রিসভায় যুক্ত হয়েছেন অভিজ্ঞ ও বর্ষীয়ান রাজনীতিকরা। কিছু বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতা সত্ত্বেও উন্নয়ন সহযোগী ও অংশীদার বানিয়ে ফেলেছেন রাশিয়া, চীন ও জাপানকে। পার্লামেন্টে সীমান্ত বিল পাস এবং ছিটমহল বিনিময়ের পর ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধুত্বের বন্ধন আরো সুদৃঢ় হয়েছে।
পূর্বমুখী কূটনীতির অংশ হিসেবে চীনের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কোন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন। নিজের সরকারের উন্নয়নের মডেল অন্যান্য দেশের কাছে উপস্থাপন করে প্রশংসিত হয়েছেন।
২০১৪ সালে জাতিসংঘের সাউথ সাউথ কো-অপারেশন ভিশনারি অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই বছর ২১ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে গ্লোবাল সাউথ সাউথ ডেভেলপমেন্ট এক্সপো (জিএসএসডি এক্সপো)-এর সমাপনী উৎসবে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে এ অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করেন তাঁর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। ডিজিটাল ব্যবস্থায় বাংলাদেশকে অগ্রগতির পথে এগিয়ে নেওয়া এবং শিক্ষার প্রসারে বৈপ্লবিক ধ্যান-ধারণার সমন্বয়ের জন্য শেখ হাসিনাকে এ অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। জাতিসংঘের গ্লোবাল সাউথ সাউথ ডেভেলপমেন্ট এক্সপো তার ঘোষণায় বলেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশে তৃণমূলে তথ্যপ্রযুক্তি প্রসার, সার্বজনীন শিক্ষা ব্যবস্থার প্রবর্তন, সর্বসাধারণের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া, সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর মাধ্যমে সমাজে অবহেলিত মানুষের জীবনধারার মানোন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনে অগ্রগতি এবং সীমিত সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রাকে বিশ্বদরবারে রোল মডেল হিসেবে উপস্থাপনের জন্য এ ‘ভিশনারি অ্যাওয়ার্ড’ পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেন তিনি।
উল্লেখ্য, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পরিবেশ এবং প্রযুক্তিগতভাবে দক্ষিণের দেশগুলোর সামগ্রিক উন্নয়নে পারস্পরিক সহযোগিতার দিগন্ত বিস্তৃত করার লক্ষ্যে ২০০৮ সালে জাতিসংঘে ‘সাউথ সাউথ কো-অপারেশন’ গঠিত হয়। তখন থেকে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এটির বার্ষিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ২০১৪-এর আয়োজনটি ছিল ৭ম এক্সপো। প্রতি বছরের সমাবেশে উন্নত বিশ্বের উন্নয়ন পরিক্রমার অভিজ্ঞতা অবহিত হয়ে উন্নয়নশীল বিশ্বে সেই ধারা প্রবাহিত করার ক্ষেত্রে এই সম্মেলনের গুরুত্ব অপরিসীম। ‘সাউথ সাউথ কো-অপারেশন’-এর গঠন ও উদ্দেশ্য বিবেচনায় আনলে শেখ হাসিনার এই পুরস্কার প্রাপ্তি আমাদের দেশের জন্য অবশ্যই গৌরবের এবং ক্রম-অগ্রসরমান উন্নয়নের স্বীকৃতি।
২০১৪ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর প্রভাবশালী ব্রিটিশ সাময়িকী ‘দ্য ইকোনমিস্ট’ দাবি করেছে, ‘বাংলাদেশের সব ক্ষমতা এখন শেখ হাসিনার হাতে। বিরোধী দল রাজনীতি থেকে অবসর নিয়েছে। সবই এখন সরকারের হাতের মুঠোয়। অন্তহীন লড়াইয়ে জিতে চলেছেন এক নারী।’ অথচ এই ম্যাগাজিনটি কয়েক বছর আগে একাধিক সংখ্যায় শেখ হাসিনা সরকার সম্পর্কে নেতিবাচক প্রতিবেদন ছাপিয়েছিল। একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীর বিচার ইস্যুতে কিংবা র্যাবের প্রসঙ্গে তাদের ভূমিকা ছিল ন্যক্কারজনক; কিংবা পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্বব্যাংকের টালবাহানার সময় মহাজোট সরকারকে নির্মমভাবে আক্রমণ করেছিল। সেই সাময়িকী আজ শেখ হাসিনার প্রশংসায় পঞ্চমুখ- এর চেয়ে সুখের খবর আর কী আছে আমাদের কাছে। নিশ্চয় তাঁর সাউথ সাউথ কো-অপারেশন ভিশনারি অ্যাওয়ার্ড পাওয়া উপলক্ষে সেই শুভ বারতা উচ্চারিত হয়েছে সারা বিশ্ববাসীর কাছে।
‘দ্য ইকোনমিস্ট’-এ প্রকাশিত ‘পলিটিক্স ইন বাংলাদেশ : ওয়ান অ্যান্ড অনলি ওয়ান’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, শেখ হাসিনার শাসন ন্যায়সঙ্গত। সেটার কারণ দেশের অর্থনীতির উন্নয়নের সফলতা। ২০০৯ সালে তিনি ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে দারিদ্র্যের হার দ্রুত কমে এসেছে। সাম্প্রতিক একটি জনমত জরিপ অনুসারে, নির্বাচনের আগের তুলনায় সরকার এখন আরো বেশি জনপ্রিয়। বিদেশি সরকারগুলো এখন শেখ হাসিনার সঙ্গেই ব্যবসা করতে ইচ্ছুক। ভারত, চীন, জাপান, রাশিয়া তার প্রধান উদাহরণ। এদেশবাসী জানে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে। সামাজিক সুরক্ষামূলক কর্মসূচির আওতায় বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, স্বামী পরিত্যক্তা ও দুঃস্থ ভাতা, পঙ্গু, প্রতিবন্ধী ও অসহায়দের জন্য ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী, ভর্তুকি মূল্যে খোলা বাজারে খাদ্যপণ্য বিক্রি, ভিজিডি, ভিজিএফ, টেস্ট রিলিফ, কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচির আওতায় খাদ্য সহায়তা, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি ইত্যাদি কর্মসূচি বাস্তবায়িত হয়েছে।
২০১৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের ৬৯তম সাধারণ অধিবেশনে যোগদানকারী রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধানগণের সম্মানে এক সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। সেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন ২০১৪-এ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের জন্য শেখ হাসিনার প্রশংসা করেছেন। গ্রামীণ জীবনের ব্যাপক রূপান্তরে শেখ হাসিনার অবদান অতুলনীয়। তাঁর নেতৃত্বেই ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠার প্রভাব পড়েছে সর্বত্র। দেশের প্রতিটি ইউনিয়নের তথ্য ও সেবাকেন্দ্র চালু রয়েছে। এসব তথ্য কেন্দ্র থেকে গ্রামীণ জনগোষ্ঠী বিভিন্ন সরকারি ফরম, নোটিশ, পাসপোর্ট ও ভিসা সংক্রান্ত তথ্য, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বিভিন্ন সেবাবিষয়ক তথ্য, চাকরির খবর, নাগরিকত্ব সনদপত্র, পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল, বিদেশে চাকরি প্রাপ্তির লক্ষ্যে রেজিস্ট্রেশনসহ ২২০টি সেবা গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। উপরন্তু মোবাইল ব্যাংকিং, জীবন বীমা, মাটি পরীক্ষা ও সারের সুপারিশ, বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ এবং জমির পর্চাসহ অন্যান্য সেবা পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। প্রায় ৪ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন সম্পন্ন হয়েছে।
উপজেলা ও জেলা হাসপাতালগুলোতে মোবাইল স্বাস্থ্যসেবা টেলিমেডিসিন সিস্টেমসহ চলছে। মোবাইল টেলিফোন সিমের সংখ্যা ১০ কোটিতে উন্নীত হয়েছে আর থ্রি-জি প্রযুক্তি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে ব্যাপকভাবে। মোবাইল ফোনেই ভিডিও-কল করা যাচ্ছে এখন; টিভি দেখা হচ্ছে; ইন্টারনেটের গতি বেড়েছে। ফলে টেলি-কনফারেন্স এখন সহজ ব্যাপার। এভাবে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে চমৎকার সাফল্য দেখিয়েছে। এছাড়া আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পর্যায়ে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও অগ্রগতি প্রতিষ্ঠায় এদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। এজন্যই চীন-জাপান-ভারতের রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধানসহ বিশ্বের সকল নেতৃবৃন্দ শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করছেন নিঃশঙ্কচিত্তে। ২০১৪ সালের ৭ সেপ্টেম্বর জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন।
গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর ইউনেস্কোর ‘শান্তিবৃক্ষ’ স্মারক পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস-২০১৪ উপলক্ষে আয়োজিত ‘নারী ও কন্যাশিশুদের সাক্ষরতা ও শিক্ষা : টেকসই উন্নয়নের ভিত্তি’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর হাতে ‘শান্তিবৃক্ষ’ স্মারক তুলে দেয়ার সময় তাঁর নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করে ইউনেস্কোর প্রধান ইরিনা বোকোভা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন সাহসী নারী। বিশ্ব পর্যায়েও প্রধানমন্ত্রীর নারী ও কন্যাশিশুদের ক্ষমতায়নে রয়েছে জোরালো কণ্ঠ। সেই অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘২০১৫-পরবর্তী টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার আলোকে আমরা আমাদের রূপকল্প-২০৪১-এর ভিত্তিতে একটি উন্নত, সুশিক্ষিত ও বিজ্ঞানমনস্ক সমাজ গঠনের সোপান রচনায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এই কর্মযজ্ঞে নারী ও মেয়েশিশুরা সব সময়ই আমাদের বিবেচনার অগ্রভাগে থাকবে।’
২৪ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় বিকেল পৌনে ৫টায় জাতিসংঘ মহাসচিবের শিক্ষাক্ষেত্রে বৈশ্বিক উদ্যোগের উচ্চ পর্যায়ের এক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথাই পুনর্ব্যক্ত করেন। উপরন্তু সে সময় অস্ত্রের বদলে শিক্ষাখাতে আরো ব্যয় বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্বনেতৃবৃন্দের কাছে। কেবল শিক্ষা নয়, বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টায় আমাদের মাথাপিছু আয় এখন ৭ বছর আগের ৬৩০ ডলার থেকে ১ হাজার ৪৪ ডলারে উন্নীত হয়েছে। ৫ কোটির বেশি মানুষ নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্তে উন্নীত এখন। দারিদ্র্যের হার ২০০৫ সালে যেখানে ছিল ৪০ শতাংশ সেখান থেকে হ্রাস পেয়ে ২৬ শতাংশে নেমেছে। রেমিট্যান্স প্রাপ্তিতে গড়ে ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ১ হাজার ৪৫০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স প্রাপ্তি ঘটে; যেখানে ২০০৮ সালে ছিল ৮৯৮ কোটি ডলার। বাংলাদেশ বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম রেমিট্যান্স অর্জনকারী দেশ।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের আমলেই ৮ম সংবাদপত্র ওয়েজ বোর্ড গঠন ও ৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা করা হয়েছে। সাংবাদিকদের কল্যাণে প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে অনুদান প্রদান করা হয়। ১টি সরকারি ও ১৪টি বেসরকারিসহ মোট ১৫টি টেলিভিশন চ্যানেল সম্প্রচারের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দেশে প্রথমবারের মতো ১৪টি কমিউনিটি রেডিও’র লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে। তথ্য অধিকার আইন প্রণয়ন ও তথ্য কমিশন গঠন এবং সংশ্লিষ্ট বিধি ও প্রবিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে; যা মিডিয়া অঙ্গনে সরকারের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি।
দেশের ২টি ধারার রাজনৈতিক বলয়ের একটির লক্ষ্য, দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থেকে বাংলাদেশকে উন্নত মানের রাষ্ট্রে পরিণত করা। অন্যদিকে আরেকটি শক্তির অভিলাষ, যেকোনো মূল্যে ১৫ কিংবা ২১ আগস্টের মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন হওয়া। কারণ, শেখ হাসিনার নেতৃত্বের মান বেড়েছে, বেড়েছে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতা ধরে রাখার অভিনবত্ব।
মূলত শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে আগামী ২০২১ সালের আগে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে- এটা নিশ্চিত। তাই আওয়ামী পরিবারের সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে সকল অশুভ শক্তির মোকাবিলা করতে হবে। সামনে বাধা এলে তা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবিলায় সচেষ্ট থাকতে হবে। ১৯৭১ সালের পরাজিত শক্তিরা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে দেশের স্বাধীনতা ও স্বপ্নকে হত্যা করতে চেয়েছিল। শেখ হাসিনা জীবিত রয়েছেন। তিনিই তাঁর পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন; কিন্তু চলতি মাসেই সংসদে দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনা বলেছেন, ’৭১-এর পরাজিত শক্তিরা বসে নেই; ষড়যন্ত্রকারীরা নতুন নতুন ষড়যন্ত্রের জাল বুনছে। তাই সকলকে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্ব বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে উচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত করেছে। আমরা বিশ্বাস করি, এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে এবং মহাকাল তাঁর নেতৃত্বকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।
লেখক : অধ্যাপক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
এইচআর/এমএস