যেমন করে এলো অনন্য সম্মান
অনেক প্রাণ আর রক্তের বিনিময়ে পাওয়া আমাদের মহান স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে একটি অবহেলিত ভূখণ্ডের মানুষ বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র অর্জনের জন্য যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরুর সে সংগ্রামের মাসে বাংলাদেশের উন্নয়ন ইতিহাসেযুক্ত হলো আরেকটি অনন্য অর্জন। স্বাধীনতা লাভের ৪৭ বছর পর জাতিসংঘ বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) শ্রেণি থেকে যোগ্যতা বলে বের হওয়ার যোগ্য বলে স্বীকৃতি দিয়েছে। এর ফলে জাতিসংঘের বিবেচনায় উন্নয়নশীল দেশের পথে বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক অভিযাত্রা শুরু হলো।
জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের (ইকোসক) উন্নয়ন নীতিবিষয়ক কমিটি (সিডিপি) ১৭.০৩.২০১৮ বাংলাদেশের এ যোগ্যতা নিশ্চিত করেছে জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনকে এ বিষয়ে চিঠি দিয়ে।
মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ ও অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা এ তিনটি সূচকেই যথাযথ যোগ্যতা একসঙ্গে অর্জন করেছে বাংলাদেশ, যা এর আগে অন্য কোনো দেশের ক্ষেত্রে ঘটেনি। বাংলাদেশের পাশাপাশি দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমার ও লাওস এলডিসি থেকে উত্তরণের যোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছে। ভুটান, সাওতোমে ও প্রিনসিপে এবং সলোমন দ্বীপপুঞ্জ দ্বিতীয়বারের মতো যোগ্যতা অর্জন করায় তাদের এলডিসি থেকে উত্তরণের সুপারিশ করেছে সিডিপি।
প্রতি ৩ বছর পর সিডিপি এলডিসি দেশগুলোর অবস্থা পর্যালোচনা করে। বাংলাদেশ ২০২১ সালে দ্বিতীয়বার পর্যালোচনায় যোগ্য হলে চূড়ান্তভাবে এলডিসি থেকে উত্তরণের সুপারিশ করবে ওই কমিটি। দৃঢ়ভাবে প্রত্যাশা করছি ২০২৪ সালে এলডিসি থেকে বের হয়ে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে পৌঁছাবে স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ।
জাতিসংঘ তার সদস্য দেশগুলোকে স্বল্পোন্নত (এলডিসি), উন্নয়নশীল এবং উন্নত এ তিন শ্রেণিতে বিভক্ত করে। বাংলাদেশ ১৯৭৫ সাল থেকে এলডিসি। সবকিছু ঠিক থাকলে বড় কোনো ব্যত্যয় না ঘটলে ২০২৪ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ এ উত্তরণকে অনুমোদন দেবে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে পৌঁছবে বাংলাদেশ।
উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার বড় সুবিধা বা বিষয় হলো মর্যাদার। বাংলাদেশ যে এগিয়ে যাচ্ছে তার একটা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এটি। বাংলাদেশকে সবাই এখন আলাদাভাবে গুরুত্ব দিয়ে বিচার বিবেচনা করবে। আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশের দর কষাকষির, বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধিরও নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে। তবে চ্যালেঞ্জ হলো, উন্নয়নশীল দেশ হলে বাংলাদেশ এলডিসি হিসেবে বাণিজ্যে যে অগ্রাধিকার পায় তার সবটুকু পাবে না। আবার বৈদেশিক অনুদান, কম সুদের ঋণও কমে আসবে। বাংলাদেশ তার সক্ষমতা দিয়ে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারবে।
এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে উত্তরণের জন্য মাথাপিছু আয়, মানব সম্পদ সূচক এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচক এ তিনটির যে কোনো দু’টি অর্জনের শর্ত থাকলেও বাংলাদেশ এ তিনটি সূচকের মানদণ্ডেই উন্নীত হয়েছে। জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাউন্সিল (ইকোসক) এর মানদণ্ড অনুযায়ী এক্ষেত্রে ০১. একটি দেশের মাথাপিছু আয় হতে হবে কমপক্ষে ১২৩০ মার্কিন ডলার, যেখানে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ১৬১০ মার্কিন ডলার। ০২. মানবসম্পদ সূচকে ৬৬ প্রয়োজন হলেও বাংলাদেশ অর্জন করেছে ৭২.৯। ০৩. অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচক হতে হবে ৩২ ভাগ বা এর কম, যেখানে বাংলাদেশের রয়েছে ২৪.৮ ভাগ।
জাতিসংঘের উন্নয়ন নীতি কমিটি (সিডিপি) গত ১২ থেকে ১৬ মার্চ এলডিসি দেশগুলোর ওপর ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা বৈঠকে বসে। মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা এ তিনটি সূচকের দুটিতে উত্তীর্ণ হলে কোনো দেশ এলডিসি থেকে উত্তরণের যোগ্য বলে বিবেচিত হয়। তবে শুধু মাথাপিছু আয়ের ভিত্তিতেও কোনো দেশ যোগ্য হতে পারে।
সে ক্ষেত্রে মাথাপিছু আয়ের যে মানদণ্ড রয়েছে ওই দেশের মাথাপিছু আয় তার দ্বিগুণ হতে হবে। মানবসম্পদ সূচকে ০৫টি বিষয়ের পরিসংখ্যান বিবেচনায় নেয় সিডিপি। এগুলো হলো- ০১. ৫ বছরের নিচে শিশুদের মৃত্যুহার, ০২. মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তির হার, ০৩. অপুষ্টিতে থাকা জনসংখ্যার হার, ০৪. বয়স্কদের স্বাক্ষরতার হার এবং ০৫. মাতৃত্বকালীন মৃত্যুহার। শেষেরটি ২০১৮ সালের পর্যালোচনায় যুক্ত হয়েছে।
অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচকে ৮টি বিষয় বিবেচনাযোগ্য। এগুলো হলো- ০১. জনসংখ্যা, ০২. উপকূলীয় এলাকায় জনসংখ্যার অনুপাত, ০৩. দুর্গম এলাকা, ০৪. পণ্য ও সেবা রফতানিতে অস্থিতিশীলতা, ০৫. রফতানি পণ্য কেন্দ্রীভূত হওয়া, ০৬. প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার জনসংখ্যা, ০৭. জিডিপিতে কৃষি, বনায়ন ও মৎস্য খাতের অংশ এবং ০৮. কৃষি উৎপাদনে অস্থিতিশীলতা।
যারা এর আগে এলডিসি থেকে বের হয়েছে তাদের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিতে হবে শুভসুন্দর পথ চলায়। সুশাসন নিশ্চিত করা, অবকাঠামো উন্নয়ন ও রাজস্ব আদায়ে সচেষ্ট হওয়া। উন্নতি করতে হবে জনস্বাস্থ্য ও শিক্ষায়। বেসরকারি ও বিদেশি বিনিয়োগের জন্য সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। উচ্চ মূল্য সংযোজন হয় এমন শিল্পের দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। জাতীয় অগ্রাধিকার বিবেচনায় রেখে বৈদেশিক ঋণের সুষ্ঠু ব্যবহার করতে হবে।
উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার যোগ্যতা অর্জনের স্বীকৃতি অনেক ইতিবাচক খবর। এতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বাড়বে, বিদেশি বিনিয়োগও বাড়বে। আরও বেশি হারে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পথ সুগম হবে। তবে উন্নয়ন উত্তরণের সব পর্যায়েই কিছু চ্যালেঞ্জ থাকে।
এগুলো মোকাবেলার যথা প্রস্তুতি নিতে হবে। এলডিসি থেকে উত্তরণ ঘটার ৩ বছর পর থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে বর্তমান জিএসপি সুবিধা থাকবে না। উন্নয়নশীল দেশগুলো ইইউতে জিএসপি প্লাস সুবিধা পায়। আমাদের সে প্রস্তুতি নিতে হবে। এলডিসি না থাকলে বাংলাদেশ অন্যান্য দেশেও অনেক ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে না। এ জন্য বিমসটেক, বিবিআইএনের মতো আঞ্চলিক উদ্যোগের সুবিধা কীভাবে কার্যকরভাবে নেওয়া যায় তার প্রস্তুতি থাকতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, প্রতিযোগিতা সক্ষমতা আরও বাড়াতে হবে। কেননা শুল্কমুক্ত সুবিধা না থাকলে প্রতিযোগিতা বেড়ে যাবে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ২০২৪ সালে এলডিসি থেকে বেরিয়ে গেলে ২০২৭ সাল পর্যন্ত ইউরোপেীয় ইউনিয়নের 'এভরিথিং বাট আর্মস' উদ্যোগের আওতায় পণ্য রফতানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে। বাংলাদেশ মানবাধিকার ও শ্রম অধিকার, পরিবেশ ও সুশাসন বিষয়ে ইইউর নিয়ম-কানুনের শর্ত পূরণ করলে জিএসপি প্লাস নামে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধা পাবে।
এ অনন্য সম্মানের পিছনে কাজ করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল, দূরদর্শী এবং কারিশমেটিক নেতৃত্ব, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, এমডিজি অর্জন, এসডিজি বাস্তবায়নসহ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, লিঙ্গ সমতা, মহিলাদের উন্নয়ন, কৃষির উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি, দারিদ্র্যসীমা হ্রাস, গড় আয়ু বৃদ্ধি, রপ্তানিমুখী শিল্পায়ন, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, পোশাক শিল্প, ওষুধ শিল্প, রপ্তানি আয় বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন অর্থনৈতিক সূচক এবং অগ্রগতিশীল উন্নয়ন কৌশল গ্রহণের ফলে। পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর, ঢাকা মেট্রোরেলসহ দেশের মেগা প্রকল্পও উল্লেখযোগ্য।
যারা এর আগে এলডিসি থেকে বের হয়েছে তাদের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিতে হবে। প্রথমত, সুশাসন নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি অবকাঠামো উন্নয়ন ও রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধিতে সচেষ্ট হতে হবে। উন্নতি করতে হবে জনস্বাস্থ্য ও শিক্ষায়। বেসরকারি ও বিদেশি বিনিয়োগের জন্য সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। উচ্চমূল্য সংযোজন হয় এমন শিল্পের দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। জাতীয় অগ্রাধিকার বিবেচনায় রেখে বৈদেশিক ঋণের ব্যবহার করতে হবে।
উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার যোগ্যতা অর্জন ইতিবাচক খবর। এতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি, বিদেশি বিনিয়োগও বাড়বে। আরও বেশি হারে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পথ সুগম হবে। উত্তরণের সব পর্যায়েই কিছু চ্যালেঞ্জ থাকে। এগুলো মোকাবেলার প্রস্ততি নিতে হবে।
কেউ পেছনে পড়ে থাকবে না এ প্রত্যয় ও প্রতিশ্রুতি ধারণ করে আমরা শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ আমাদের জন্য শুধু একটি স্লোগানই নয়, সারা দেশের মানুষ আজ এর সুবিধা পাচ্ছেন। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের কাতারে উঠতে বাংলাদেশ এ সুদৃঢ় প্রত্যাশা আামদের আছে।
অনন্য অভিযাত্রায় কৃষির অবদান বলতে গেলে বলতে হয় কৃষি প্রধান বাংলাদেশে সার্বিক উন্নয়নে কৃষির অবদান সবচেয়ে বেশি এবং অবিস্মরণীয়। স্থিরমূল্যে ২০১৬-১৭ সনে জিডিপিতে কৃষির অবদান ১৪.৭৯% । ১/২ ফসলী জমি ৪ ফসলি জমিতে রূপান্তরিত হচ্ছে। এ কারণে দেশের ফসলের নিবিড়তা এখন ১৯৪%। ফসলের উৎপাদনশীলতা বেড়ে যাওয়ায় ২০১৬-১৭ সালে ৩ কোটি ৮৬ লাখ ৩৪ হাজার মেট্রিক টন দানাদার খাদ্যশস্য উৎপাদিত হয়েছে। দেশ দানাদার খাদ্যে স্বয়ঙ্কার।
ধান উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে ৪র্থ। লবণাক্ততা, খরা, জলাবদ্ধতাসহনশীল, জিংকসমৃদ্ধ ধানসহ ১০৮টি উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। নিবিড় সবজি চাষের মাধ্যমে ২০১৬-১৭ সালে ১ কোটি ৬০ লাখ ৪২ হাজার মেট্রিকটন সবজি উৎপাদন করে বাংলাদেশ সবজি উৎপাদনে বিশ্বে ৩য় অবস্থানে আছে। আলু উৎপাদনে বিশ্বে ৮ম। ২০১৬-১৭ ১ কোটি ২ লাখ ১৬ হাজার মেটিকটন আলু, ৮ লাখ ২০ হাজার মেট মিষ্টিআলু উৎপাদিত হয়েছে।
কৃষিপণ্য রপ্তানি থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৫৫.৩৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছে এবং এ সময়ে ২৪ হাজার মেট্রিক টন সবজি, ৩৬০৪ মে.ট ফল এবং ৬৯৬৩.৫ মে.ট সুগন্ধি চাল রফতানি করেছে।
আম উৎপাদনে বিশ্বে ৭ম। দেশে ১৬-১৭ অর্থবছরে ২১.৪৩ লাখ মে.ট আম উৎপাদিত হয়। খাটো জাতের নারকেল, মাল্টা প্রবর্তনসহ অপ্রচলিত, প্রচলিত, বিদেশি ফল চাষ জ্যামিতিক বিস্তার অব্যাহত আছে। দেশি ও তোষা পটের জীবন রহস্য উৎঘাটনসহ ৫ শতাধিক ফসলের ক্ষতিকর ছত্রাকের জীবনরহস্য উন্মোন করা হয়েছে। ধান ব্যতিরেকে বিভিন্ন ফসলে ৫৮৪টি উচ্চ ফলনশীল জাত, ৪৪২টি উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়েছে।
৯ লাখ ৮১ হাজার ১৯৮ হেক্টর জমি সেচের সুবিধায় আনা হয়েছে। কৃষি যান্ত্রিকরণের ক্ষেত্রেদেশের হাওর ও উপকূলীয় অঞ্চলের কৃষকদের জন্য ৭০%, অন্যান্য এলাকার কৃষকদের জন্য ৫০% উন্নয়ন সহায়তা প্রদান অব্যাহত আছে। সহায়তা হিসাবে মোট ২২৮ কোটি ৩৫ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে। উৎপাদনমুখী সরকারি সুবিধা প্রদানের লক্ষে মোট ২ কোটি ৮ লাখ ১৩ হাজার ৪৭৭ জন কৃষককে কৃষি উপকরণ কার্ড প্রদান করা হয়েছে।
কৃষককে মাত্র ১০ টাকার বিনিময়ে ব্যাংক একাউন্ট খোলার সুযোগ দেওয়ায় ১ কোটি ১ লাখ ১৯ হাজার ৫৪৮টি ব্যাংক হিসাব খোলা হয়েছে। যেখানে বর্তমানে স্থিতি ২৮২ কোটি টাকা। ফসলের উৎপাদন খরচ কমানোর লক্ষে ননইউরিয়া সারের মূল্য ৪ বার কমিয়ে প্রতিকেজি টিএসপি ২২, এমওপি ১৫, ডিএপি ২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সঠিক শস্য বিন্যাস অনুসরণের লক্ষে জলবায়ু ও মৃত্তিকা উপযোগিতা অনুযায়ী ১৭টি ক্রপ জোনিং ম্যাপ প্রণয়ন করা হয়েছে। কৃষির সবকটি বিভাগের সমৃদ্ধ ওয়েবসাইট প্রণয়ন, ফসল আবাদে অনুমোদিত সার ব্যবহার সহজীকরণে অনলাইন সার সুপারিশমালা; ধান চাষে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি সহজলভ্য করার লক্ষে রাইস নলেজ ব্যাংক; ধান ব্যতিত অন্যান্য ফসল উৎপাদনে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি জানার সুবিধার্থে কৃষি প্রযুক্তি ভাণ্ডার আ্যাপস; ভূগর্ভস্থ পানির দক্ষ ব্যবস্থাপনার লক্ষে গ্রাউন্ড ওয়াটার জোনিং ম্যাপ; ফসল উৎপাদনে সেচকার্যক্রম নিবিড় মনিটরিং এর জন্য ই-সেচ সেবা প্রণয়ন; কৃষি পণ্যের প্রতিদিনের বাজার দর অনলাইনে অবহিত করা হয়।
ডিজিটাল কৃষির তথা ই-কৃষির সাফল্যজনক প্রবর্তন করা হয়েছে। দেশে মোট ৪৯৯টি কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ কেন্দ্র (এআইসিসি), কৃষিকল সেন্টার ১৬১২৩, কৃষি কমিউনিটি রেডিও এফএম ৯৮,৮, কৃষি তথ্য বাতায়ন, কৃষকবন্ধু ফোন ৩৩৩১, ওয়েব এ্যাপ্লিকেশন ও সফটওয়ার, মাল্টিমিডিয়া ই-বুক ফলপ্রসুভাবে চলমান আছে।
জাতীয় বীজ নীতি, জাতীয় কৃষিনীতি ২০১৩, জাতীয় জৈব কৃষিনীতি ২০১৬, সমন্বিত ক্ষদ্র সেচ নীতিমালা ২০১৭সহ বিভিন্ন কৃষি উন্নয়ন নীতিমালা গ্রহণ করা হয়েছে। সব কিছু মিলিয়েই অদম্য অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ আলোকিত সন্মুখে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বাস করি বেশি দিন আর দূরে নয় যেদিন জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়ন হবে শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে, সে কাঙ্ক্ষিত শুভ সুন্দরের অপেক্ষায় রইলাম আমরা বাংলার মানুষ।
লেখক : কৃষিবিদ, অতিরিক্ত পরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ি, ঢাকা।
এইচআর/আরআইপি