ভিডিও EN
  1. Home/
  2. মতামত

রোকসানা থেকে পৃথুলা, পাখিরা ফেরে না

সম্পাদকীয় ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৯:৫১ পিএম, ১২ মার্চ ২০১৮

বাংলাদেশি কোনো এয়ারলাইন্সের ইতিহাসে এটিই ভয়াবহতম বিমান দুর্ঘটনা। ফ্লাইটটিতে সিলেটের রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজের অন্তত ১১ নেপালি শিক্ষার্থী ছিলেন। যারা ছুটি কাটাতে নেপাল যাচ্ছিলেন। এখন পর্যন্ত অন্তত ৪৫ যাত্রীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে অান্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো। অবস্থান ও অাবহাওয়াগত কারণে নেপালের একমাত্র অান্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্রিভুবন এয়ারপোর্ট বহু প্রাণহানি অার দুর্ঘটনার করুণ সাক্ষী। ইউএস বাংলার ড্যাস একটি এয়ারক্রাফট এর আগেও দুর্ঘটনায় পড়েছিল। তবে তখন প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।

এর অাগে ১৯৮৪ সালের ৫ আগস্ট বাংলাদেশ বিমানের ফকার এফ ২৭-৬০০ মডেলের ছোট বিমানটি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পৌঁছানোর পথে শাহজালাল বিমানবন্দরের খুব কাছেই বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনায় বাংলাদেশ বিমানের আভ্যন্তরীণ সে ফ্লাইটের ৪৫ জন যাত্রী এবং ৪ জন ক্রুর সবাই নিহত হন। প্লেনটি চালাচ্ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম নারী পাইলট কানিজ ফাতেমা রোকসানা। অার অাজকের দুর্ঘটনায় যাত্রীদের সঙ্গে মারা গেছেন ইউএস বাংলার এ ফ্লাইটটির ফার্স্ট অফিসার বাংলাদেশের অারেক নারী পাইলট পৃথুলা রশীদ। অাজকের নেপালের দুর্ঘটনার ধরণ অার ১৯৮৪ সালের সে দুর্ঘটনার অনেক দুঃখজনক মিল।

ধারণা করি, ইউএস বাংলার বিমানটি যান্ত্রিক বা এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষের সিগন্যালের কোনো ত্রুটি বা সমন্বয়হীনতার কারণে অবতরণের অাগ মুহূর্তে পাইলটের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। কারণ ত্রিভুবন এয়ারপোর্টের কন্ট্রোল রুম থেকে এয়ারক্রাফটিকে রানওয়ের দক্ষিণ দিক থেকে অবতরণের ক্লিয়ারেন্স দেয়া হয়। এখনো সেটাই বলছেন ত্রিভুবন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।

কিন্তু সে সিগন্যাল উপেক্ষা করে রানওয়ের উত্তর অংশে জরুরি অবতরণের চেষ্টা করেন পাইলট পৃথুলা রশীদ। হয়ত এয়ারক্রাফটির গতি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকা, নোজ হুইল কাজ না করা বা অন্য কোনো কারণে এয়ারক্রাফটটি অাছড়ে পড়ে পাশের ফুটবল মাঠে। সঙ্গে সঙ্গে অাগুন লাগে। ভয়াল অাগুন মুহূর্তেই পুড়িয়ে দেয় জীবনগুলোর সব সপ্ন।

কেন পাইলটকে উল্টো দিক থেকে জরুরি অবতরণের চেষ্টা করতে হলো সে প্রশ্নের উত্তর মিললে জানা যাবে দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ।

পৃথুলার খুব স্বপ্ন ছিল অাকাশে উড়বার। উড়েছিলও অাদুরে মেয়েটা। শুধু অাকাশ পাখিটার অার মায়ের কাছে ফেরা হলো না...

লেখক : মুনজের আহমদ চৌধুরী

সদস্য রাইটার্স গ্রিল্ড অব গ্রেট ব্রিটেন

(লেখাটি লেখকের ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে নেয়া)

এসএইচএস/আরআইপি