ভিডিও EN
  1. Home/
  2. মতামত

ভ্রূণহত্যা মানবহত্যার সমতুল্য

তাহমিনা ইয়াছমিন শশী | প্রকাশিত: ০৫:৩৭ এএম, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭

হঠাৎ মুঠোফোনের শব্দে জেগে উঠলাম। অনেকটা বিরক্তি নিয়েই বললাম- হ্যালো, কে বলছেন? উত্তর এলো- হসপিটাল থেকে বলছি। অজানা আতঙ্কে বুকটা কেঁপে উঠল। কণ্ঠ থেকে ভয় সরিয়ে সোজাসাপটা জানতে চাইলাম ফোন করার কারণ। ফোনের অপর পাশ থেকে স্পষ্ট ইতালিয় ভাষায় বলা হলো তাদের একজন (MEDIATRICE LINGUISTICO CULTRALE) বাংলাদেশি দোভাষী দরকার। বাংলাদেশি এক তরুণী রুগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছে। কিন্তু ইতালিয় ভাষা না জানার কারণে সমস্যার কথা চিকিৎসক কে বোঝাতে পারছে না। চিকিৎসকের কথাও বুঝতে পারছে না।

ইতালিতে এমন অনেক বাংলাদেশি মহিলা আছেন, স্বামীর টিকেটে এদেশে এসেছেন। ঘর সংসার সন্তান সবই করেছেন কিন্তু এক হরফ ইতালিয়ান শেখেন নি। সব কিছুতে নির্ভর করে থাকেন স্বামীর উপর। শুধু মহিলারা নয়, ভাষা না শেখার দলে পুরুষরাও আছেন অনেক। কাজের প্রয়োজনে যতটুকু দরকার তাও শেখেন নি। কোনো রকমে জোড়াতালি দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন। নারীদের ভাষা না জানার কারণ যে সব সময় নারীরা তা কিন্তু নয়। অনেক স্বামীরাই চাননি তার স্ত্রী ইতালিয় ভাষা শিখুক। যার ফল হলো নিজের সমস্যা বা দরকারের কথা গুলোও নিজে বলতে পারেন না। সাহায্য নিতে হয় আমার মতো কারো। নিজের ব্যক্তিগত বিষয়গুলো তৃতীয় একজন কে বলতে বাধ্য হন।

ব্যক্তিগত বিষয়গুলো তৃতীয় কাউকে বলতে আমাদের কেউই পছন্দ করেন না। লজ্জা বোধ করেন। কেঁদে ফেলেন। কিন্তু ওই পর্যন্তই। ভাষা তারা শিখবেন না। যেন দিব্বি করে বিদেশে এসেছেন। অথবা কেউ তাদের মাথার কসম দিয়ে রেখেছে। পরিচিত অনেক নারীকে দেখেছি, তারা মনের মধ্যে বদ্ধ ধারণা নিয়ে বসে আছেন, বিদেশে চাকরি না করলে ভাষার দরকার হয় না। চাকরি করবো না তো ভাষা শিখে কি করবো? পাদোভার হাসপাতালে গেলাম। দেখি ২৩/২৪ বছর বয়সের একজন সুন্দরী তরুণী বসে আছে। তার চোখে মুখে স্পষ্ট ফুটে আছে কারো জন্য অপেক্ষার সরু রেখা। তার কাছে এগিয়ে গেলাম। আমাকে দেখে বড় একটা নিঃশ্বাস নিলো। মনে হলো- এত সময় নিঃশ্বাস বন্ধ করে বসে ছিল।

ডাক্তার আমাকে অনুরোধ করলেন মেয়েটার সমস্যার কথাগুলো অনুবাদ করে দিতে। মেয়েটা জানালো তার নাম- চাঁদ (ছদ্মনাম)। শুরু হলো আমাদের কথা বলা- হাসপাতালে কেন এসেছেন? চাঁদ কোনো উত্তর না দিয়ে হু হু করে কাঁদতে শুরু করলো। ভেবেছিলাম হয়ত খুব কঠিন কোনো ব্যাধি। আমি তাকে অভয় দেয়ার চেষ্টা করলাম। চাঁদ মাথা নিচু করে বললো- ‘আমি মা হতে চলেছি’। আমি না হেসে পারলাম না। মা হতে চলেছেন এতো আনন্দের খবর। এতে কান্নার কি আছে? যখন জেনেই ফেলেছেন আপনি মা হবেন, তখন মিষ্টির দাওয়াত কিন্তু ছাড়ছি না।

চাঁদ আবার কাঁদতে শুরু করলো। এবার একটু অবাক হলাম। বললাম, আমার কোনো কথা কি আপনার খারাপ লেগেছে? চাঁদ মাথা দুলিয়ে বললো- ‘না’। তাহলে কাঁদছেন কেন? এবার চাঁদ যা বললো তা শুনে মনে হলো আমি ভুল শুনছি। নিজের কানের উপর আস্থাহীন হয়ে তার চোখের দিকে তাকালাম। দেখি তার চোখও একই কথা বলছে। চাঁদের গর্ভে আসা সন্তান পৃথিবীর আলো দেখুক তা চান না চাঁদের স্বামী। ডাক্তারের জিজ্ঞাসা, আপনার স্বামী কোথায়? তিনি আসেনি কেন? আর কেন বাচ্চা রাখতে চান না? চাঁদের মুখ থেকে শোনা উত্তর গুলো জানালাম ডাক্তার কে। চাঁদের স্বামী চাকরি করেন, ছুটি না থাকায় আসতে পারেননি। ডাক্তারের চোখে সন্দেহ। তিনি ভেবেছিলেন চাঁদ মিথ্যা বলছে। স্বামীকে না জানিয়ে হাসপাতালে এসেছে। ডাক্তার স্বামীর ফোন নাম্বার চাইলেন। চাঁদ তড়িঘড়ি তার স্বামীকে ফোন করলো। জানতে চাইলো ডাক্তারকে নাম্বার দিবেন কি না?

চাঁদের স্বামীভক্তি দেখে আমি বেশ মজা পেলাম। নিজের জীবন মরণ সমস্যার চেয়ে স্বামী তার কাছে বড়। একেই বলে বাঙালি নারী। হায়রে.. পুরুষরা যদি একটু বুঝতো! ডাক্তার চাঁদকে এক সপ্তাহ পরের একটা তারিখ লিখে দিয়ে বললেন, ওই দিন তার ব্লাড, ইউরিন, এনেসটোজি, গাইনি এবং সাইকোলোজি পরীক্ষা করা হবে। তারপর আবর্ত (ই,ভি,জি) বা গর্ভপাত, এবরোশন (এম,আর) করা হবে। সাথে সাথে আমাকেও জানিয়ে দেয়া হলো, ওই দিনও চাঁদের অনুবাদক হতে হবে।

কাজ শেষ করে চলে আসছি ঠিক সেই সময় পেছন থেকে একটা ডাক পড়ল। পেছন ফিরতেই দেখলাম চাঁদ- আপু একটু সময় হবে? বললাম বলেন। চাঁদ- চলেন বাইরে যাই, মুক্ত হাওয়ায় মুক্তমন নিয়ে কথা বলি। চাঁদ আমাকে জিজ্ঞাসা করল, আপু এবরোশনের সাথে সাইকোলোজি পরীক্ষার কি সম্পর্ক? আর এনেসটোজিরই বা কি দরকার? আমাদের দেশে তো এসব দরকার হয় না। বললাম, আমি তো এ বিষয়ে খুব ভালো জানি না। চাঁদ- যেটুকু জানেন তাই বলেন। আমি চাঁদকে সংক্ষেপে বোঝানোর চেষ্টা করলাম, এবরোশন খুব সেনসেটিভ একটা বিষয়। এ সময় মেয়েদের মনের অবস্থা ভালো থাকেনা। অনেক মেয়ে এবরোশন করতে চায় কিন্তু মানসিক ভাবে প্রস্তুত থাকে না। মূলত মানসিক ভাবে প্রস্তুত করার জন্যই সাইকোলোজিক পরীক্ষা করা হয়। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষের বদ্ধধারণা সাইকোলোজিস্ট মানেই হচ্ছে পাগলের ডাক্তার। ধারণাটা একদম ভুল। আর এনেসটোজি দেয়া হয় কারণ জাগ্রত অবস্থায় এবরোশন করা হয় না। এবরোশনের আগে পরীক্ষা করে দেখা হয় রোগীর বিশেষ কোনো এলার্জি আছে কিনা? খাবারে, কেমিক্যালে বা মেডিকেল সরঞ্জামে। চাঁদ বললো এসবের কোনো বালাই নেই আমাদের দেশে। রোগীকে তৈরি করে নেয়ার কথা তো ভাবাই হয় না।

পরদিন চাঁদ আমাকে ফোন করে। বলে ভেতর থেকে কেউ একজন তার সাথে কথা বলছে। আমি বললাম, কি কথা?

চাঁদ বললো, আমার বেবি আমাকে জিজ্ঞাসা করেছে- আম্মু তুমি ডাক্তারের কাছে কেন গিয়েছিলে? কি বলেছে ডাক্তার? আমি ডাক্তারের কথা শুনতে পারিনি। তোমার কথা ছাড়া আমি আর কারো কথা শুনতে পারিনা।
কথার ফাকে ফাকে চাঁদ ডুকরে কাঁদছিলো। আমি বললাম, এত ইমোশোনাল হলে কি চলবে?
চাঁদ জানতে চাইল এবরোশন কিভাবে করে?

বললাম, জরায়ু থেকে ভ্রূণ বেরিয়ে আসাকে এবরোশন বা গর্ভপাত বলে। গর্ভপাত ইচ্ছাকৃত ভাবে ঘটানো যায়। আবার দুর্ঘটনা বা কারণ ছাড়াই গর্ভপাত হতে পারে। গর্ভধারণের ২২ সপ্তাহের মধ্যে কোনো দুর্ঘটনাজনিত আঘাত বা প্রাকৃতিক কারণে যদি ভ্রূণপাত ঘটে তাকে স্বতঃস্ফূর্ত গর্ভপাত বলে। আর গর্ভকালের প্রথম ১২ সপ্তাহের মধ্যে চোষণ যন্ত্রের মাধ্যমে ইচ্ছাকৃত গর্ভপাত ঘটানো হয়ে।
চাঁদ বললো- যত দিন যাচ্ছে আমার ভয় বাড়ছে, মনে হচ্ছে আমি পাপ করছি।

এক সপ্তাহ পর চাঁদের জন্য আমি আবার হাসপাতালে যাই। প্রথমে ব্লাড টেস্ট, তারপর সাইকোলোজি, গাইনি ইত্যাদি পরীক্ষা করা হয়। তাকে নানা ধরনের প্রশ্ন করা হয়। সে কোনো প্রটেকশন নিয়েছিল কি না? বড়ি কেনো খায়নি? যখন বুঝলো এরকম একটা বিষয় ঘটেছে তখন কেনো ‘উন জোরন দপো’ (বিশেষ পিল) খেলোনা, ইত্যাদি। চাঁদ কে দেখলাম তখনও তার স্বামীকে দোষমুক্ত রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করছে। সে বলে- আমরা প্রটেকশন ব্যবহার করেছি, হয়ত তা মানসম্পন্ন ছিল না। কিন্তু চাঁদ আমাকে বলেছে তার স্বামী কোনো প্রটেকশন ব্যবহার করতেন না। ডাক্তার বললেন আগামীতে সতর্ক থাকার জন্য। যেন আর কোনো দিন ভ্রূণ হত্যার মতো জঘন্য কাজ করতে না হয়।

যে কোনো বিবেচনায় এবরোশন একটি জঘন্য এবং পাপ কর্ম। Elizabeth cady stanon, susan b Anthonyi এর মতো নারীবাদীরাও এবরোশনকে নারী শোষণের হাতিয়ার বলে উল্লেখ করেছেন। এবরোশন হলো সচেতন ভাবে নিষ্ঠুর হত্যা। সুতরাং কোনো ভাবেই এবরোশন সমর্থনযোগ্য কাজ নয়। ইতালির মতো দেহজ সংস্কৃতির দেশেও এবরোশনকে ভালোভাবে দেখা হয় না। একে নিষ্ঠুর এবং জঘন্য উল্লেখ করে এর থেকে বিরত থাকার জন্য সবাইকে পরামর্শ দেয়া হয়। আমাদের ধর্ম মতেও এবরোশন কে কঠিন পাপাচার হিসেবে দেখা হয়। সম্ভবত সেই অনুভূতি থেকেই চাঁদ ভয় পাচ্ছে, পাপ বোধে ভুগছে।

চাঁদকে নিয়ে যাওয়া হলো এনেসটোজির কাছে। এলার্জিযুক্ত খাবারসহ বিভিন্ন পরীক্ষা করা হলো। ডাক্তার পরামর্শ দিলেন এবরোশনের আগদিন পর্যন্ত সকল প্রকারের এলার্জিযুক্ত খাবার না খাওয়ার জন্য। এবরোশনের তারিখ জানিয়ে দিলেন ডাক্তার। সে সময় চাঁদকে দেখে আমার সত্যি খুব মায়া হচ্ছিল। আজ আর কাজের জন্য নয়, মানবতার খাতিরেই ওকে বললাম- এবরোশনের দিন আমি আপনার সাথে থাকব। চাঁদ আমাকে জড়িয়ে ধরল। অঝরে কাঁদতে লাগল। কিছুক্ষণ পর কান্না থামিয়ে অভিমানী কন্ঠে তার স্বামীর কথা বললো, ও আমার এবরোশনের সময়ও থাকতে পারবে না। বলেছে, দুপুরের পরে আমাকে নিতে আসবে। আমি বললাম, ভয়ের কিছু নেই, আমি তো আছি। চাঁদ মৃদু করে একটু হাসল।

পরেরদিন সকাল ৬ টায় বাসা থেকে বেরিয়ে পড়লাম, ৭ টার মধ্যে হাসপাতালে থাকতে হবে। চাঁদ কে নিয়ে যাওয়া হয় অপারেশন থিয়েটারে। ৩ ঘন্টা পর তার জ্ঞান ফিরে আসে। আমি ওর কেভিনে প্রবেশ করি। দেখি চাঁদের চোখের কোনা গড়িয়ে পানি পড়ছে। ভেবেছিলাম চাঁদ তার স্বামীর কথা ভেবে কাঁদছে। আমি তার মাথায় হাত রেখে সান্ত্বনা দিতে চেষ্টা করলাম। চাঁদ বলল, বেবিটা তার সাথে কথা বলেছে...
-আম্মু আমি ব্যথা পাচ্ছি। ডক্টর সূচের মতো কি যেন আমার শরীরে ঢুকাচ্ছে। ওদের থামতে বলো। আম্মু আমি তোমাকে ছেড়ে কোথাও যাব না।
চোখ বন্ধ করলো চাঁদ। তার বেবি আরো কথা বলতে চায় তার সাথে।
-কেমন আছ আম্মু? এখন আমি স্বর্গে আছি। একটা এঞ্জেল আমাকে নিয়ে এসেছে তোমার কাছ থেকে। সে বলেছে তোমাকে এবরোশন করা হয়েছে। তুমি আমাকে কেনো নিতে চাওনি আম্মু?

দুপুর গড়াতে শুরু করেছে। অনেক আগেই আমার চলে আসার কথা। কিন্তু চাঁদ কিছুতেই ছাড়তে রাজি হয়নি। বার বার বলেছে অন্তত তার স্বামী আসা পর্যন্ত যেন অপেক্ষা করি। এক সময় চাঁদের স্বামী আসেন। ভদ্রলোক চাঁদের রুমে ঢুকে বললেন, নিজেকে বাবা বাবা মনে হচ্ছে। তার কথার ধরন দেখে বিরক্তিতে আমার শরীর রি রি করে উঠল। মনে হচ্ছিল শক্ত একটা কিছু বলি। অনেক কষ্টে নিজেকে সংবরণ করলাম। শুধু মনে মনে বললাম, ব্যাটা ফাইজলামি করার আর জায়গা পায় না! নিজের ভ্রূণ নষ্ট করে এখন বেহায়ার মতো কথা বলছে। একটু লজ্জাও করছে না! চাঁদ ওর স্বামীকে বললো, তুমি আমার বেবিটাকে মেরে ফেললে? স্বামী চাঁদের হাত ধরে বললো, এমন কথা বলছো কেনো? আমিই তো তোমার বেবি। মনে মনে আর একবার বললাম, হায়রে পুরুষমানুষ!

রাতে বাসায় ফিরে ঘুমাতে পারছিলাম না। এক অজানা আতঙ্ক আমাকে জড়িয়ে ধরেছিল আষ্টেপৃষ্টে। চোখ বন্ধ করলে মনে হচ্ছিল এক্ষুণি চলে আসবে চাঁদের বেবিটা। চোখ মোটা মোটা করে বলবে, তুমি আমাকে হত্যা করতে সাহায্য করেছ। কি অপরাধ করেছিলাম আমি? নিজেকে খুব নিষ্ঠুর মনে হচ্ছিল। পাপ বোধ ভর করেছিল মনের ভেতর। মনে হচ্ছিল দুই পয়সার অনুবাদকের কাজ করতে গিয়ে আজ আমি এত বড় একটা পাপের ভাগিদার হলাম। সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে ল্যাপটপ নিয়ে বসি। গুগলে সার্চ করি এবরোশন বিষয়ক তথ্য। বেরিয়ে আসে ভয়াবহ এক সংখ্যা। প্রতি বছর নাকি পৃথিবীতে মোট ৪২০০০০০০ টিরও বেশি এবরোশন করা হয়। সংখ্যার বিশালত্ব দেখে আমি আঁতকে উঠি। মানুষকে আর মানুষ বলে ভাবতে পারি না।

বাংলাদেশে প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা, উপকরণের স্বল্পতা বা মজুদ শূন্যতার নেতিবাচক প্রভাব গিয়ে পড়েছে জন্মহার ও অর্থনীতির ওপর। বড়ি, ইনজেকশন ও কনডমের স্বল্পতা বা মজুদহীনতা প্রকট আকার ধারণ করেছে। এতে শতকরা ৭ দশমিক ৪ ভাগ মানুষ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত হচ্ছেন। ব্যাপক সময় ও অর্থের ব্যয় হচ্ছে। একই কারণে প্রতিবছর অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণের শিকার হচ্ছেন ১ লাখ ৫৯ হাজার ৮শ জন নারী। যাদের ৯০ হাজার ২৪০ জন এ সমস্যা হতে মুক্ত হতে ‘এম আর ও’, ২২ হাজার ৫৬০ জন এবরোশন করাচ্ছেন। এ কারণে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যার শিকার হয়ে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করছেন। অনেকে স্থায়ী ভাবে শারিরিক সমস্যায় পড়ছেন।

বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতি (এফ,পি,এ,বি) এবং হিউম্যান ডেভেলপম্যান্ট রিসার্চ সেন্টারের (এইচ,ডি,আর,পি) গবেষণায় এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সাইন্স বিভাগের শিক্ষক ও প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক এ কে এম নূর নবী বলেন, পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচি শুরু হওয়ার চার দশক পরও মাত্র অর্ধেক দম্পতি কে জন্ম নিয়ন্ত্রণের সঠিক পদ্ধতির আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। চাহিদা থাকা স্বত্তেও শতকরা ১৭ দশমিক ৬ ভাগ আগ্রহী দম্পতি কে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী সরবরাহ করতে পারছেনা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর।

প্রতিটি এবরোশন মানে হলো এক একটি হৃদ স্পন্দন থেমে যাওয়া। এক একটি হাসি থামিয়ে দেয়া। ভ্রূণহত্যা মানবহত্যার সমতুল্য, জঘন্য কদর্য পাপ। আসুন মানবতার নামে, সৃষ্টিকর্তার নামে, আমরা এই অমানবিক নিষ্ঠুর কাজটি করা থেকে বিরত থাকি। অন্যকে বিরত রাখি।

লেখক : ইতালি প্রবাসী লেখক।

এইচআর/আইআই