বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি কার স্বার্থে?
চালসহ বিভিন্ন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মধ্যেই আবার বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির তোড়জোড় চলছে। সব পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে ভোক্তাদের ওপর বাড়তি চাপ। জনস্বার্থে তাই এ ধরনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসাই হবে সমীচীন।
বরাবরের মত এবারো দাম বৃদ্ধির জন্য উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়াকে কারণ হিসেবে সামনে নিয়ে আসা হয়েছে। কিন্তু এই যুক্তিও শেষ পর্যন্ত ধোপে টেকেনা। কেননা বিদ্যুৎ উপৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানির মূল্য বাড়েনি। বরং বিশ্ব বাজারে তা কমছে। সে হিসেবে বিদ্যুতের বর্তমান মূল্যই যথেষ্ট। বরং চাইলে তা আরো কমানো যায়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে জ্বালানির দ্বৈত ব্যবহারের নীতির মাশুল এখানে দিতে হচ্ছে ভোক্তাদের। বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে জড়িতদের মধ্যে যারা জ্বালানি আমদানির লাইসেন্স পেয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক দামে জ্বালানি তেল আমদানি করছে। এরফলে তাদের উৎপাদন খরচ কম পড়ছে। আবার যাদের বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) থেকে জ্বালানি কিনতে হচ্ছে, তাদের উৎপাদন খরচ অনেক বেশি পড়ে যাচ্ছে। কারণ, আন্তর্জাতিক বাজারের প্রায় দ্বিগুণ দামে জ্বালানি বিক্রি করছে বিপিসি। এই দ্বৈতনীতির একটি সমন্বয় করা প্রয়োজন। বিভ্রান্তিকর নীতির ফলে সাধারণ মানুষ কেন মাশুল দেবে?
এছাড়া ‘লোকসান’ কমানো ও ‘ভর্তুকি’র দোহাই দেওয়ার পুরনো রীতিতেই এগুচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগ। আসলে দাম বৃদ্ধি করে শর্টকাট পথে এগুনোর চিন্তা বাদ দিতে হবে। সিস্টেমলস, দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে আগে। এছাড়া বার বার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। এমনিতেই নানা চাপে মানুষজন এর ওপর বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি যেন মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে দেখা না দেয় সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
এইচআর/আরআইপি