ভিডিও EN
  1. Home/
  2. মতামত

শুভ জন্মদিন মানবতাবাদী নেত্রী

নূরুন্নবী চৌধুরী শাওন | প্রকাশিত: ০২:৪১ এএম, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭

আজ ২৮ সেপ্টেম্বর। জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের বড় মেয়ে শেখ হাসিনার জন্মদিন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদরের হাচুমণি ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের মধুমতি নদী তীরবর্তী অজপাড়াগাঁ টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন।

বাবার রাজনৈতিক ব্যস্ততার কারণে তাঁকে খুব একটা কাছে পাননি। বঙ্গবন্ধু তখন দেশ বিভাগের পরবর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও লেখাপড়া নিয়ে ব্যস্ত। থাকতেন কলকাতায়। দাদা ও দাদীর আদরে শৈশব শুরু হয় তাঁর।

বাংলাদেশের গ্রামে আর দশজন শিশুর শৈশব যেমন কাটে তেমনই গ্রামবাংলার ধুলোমাটি মেখে আর দশজন সাধারণ মানুষের সাথেই বেড়ে উঠেছেন শেখ হাসিনা। ১৯৫৪ সালে বঙ্গবন্ধু যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভার সদস্য হলে পরিবারের সাথে শেখ হাসিনার শুরু হয় নগর জীবন।

শেখ হাসিনা ছাত্র রাজনীতি করেছেন। বাংলাদেশের প্রধান নেতার মেয়ে হয়েও তিনি আর দশজন কর্মীর মতই ছাত্র রাজনীতি করেছেন। শেখ হাসিনা ইন্টারমিডিয়েট গার্লস কলেজে পড়ার সময় ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সদস্য এবং রোকেয়া হল শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ছাত্রলীগের নেত্রী হিসেবে তিনি আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন এবং ৬-দফা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট অভিশপ্ত রাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হওয়ার কিছুদিন আগে ছোট বোন রেহানাসহ ইউরোপ ভ্রমণে যান। তাই বেঁচে যান দু'বোন। কিন্তু হারান সমস্ত পরিবার। এক রাতেই দু'বোন এতিম হয়ে পড়েন।

তাৎক্ষণিকভাবে দেশে ফেরার কোনো পরিবেশ না থাকায় তিনি ইউরোপ ছেড়ে স্বামী-সন্তানসহ ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন। ১৯৮১ সালে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে তাঁকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। ওই বছরই ১৭ মে তিনি দীর্ঘ ৬ বছর প্রবাস জীবনের অবসান ঘটিয়ে মাতৃভূমি বাংলাদেশে ফিরে আসেন।

শেখ হাসিনা তাঁর বিচক্ষণ নেতৃত্বে দীর্ঘ ২৩ বছর পর আওয়ামী লীগকে আবারও ক্ষমতায় আনেন। এই দীর্ঘ সময়ে তাঁকে লড়াই করতে হয়েছে দেশি বিদেশী অপশক্তির বিরুদ্ধে, স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে। লড়তে হয়েছে জাতির পিতার খুনিদের বিরুদ্ধে। তাঁকে লড়তে হয়েছে সেনা শাসনের বিরুদ্ধে।

১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর দীর্ঘ ২৩ বছর উল্টোরথে চলা বাংলাদেশকে আবারও স্বাধীনতার চেতনায়, বাঙালি সংস্কৃতির ধারায় ফিরিয়ে আনেন। অর্থনৈতিকভাবে ভঙ্গুর ও ক্ষয়িষ্ণু বাংলাদেশকে আবারও সমৃদ্ধির পথে ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু করেন।

শেখ হাসিনা যখনই ক্ষমতায় এসেছেন এদেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়েছে। এদেশের দুঃখী মানুষের অধিকার নিশ্চিত হয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ বিশ্ব মানচিত্রে একটি উদীয়মান অর্থনীতির দেশ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

আজ শেখ হাসিনার ৭১ তম জন্মদিন। ঠিক এই মুহূর্তে সারা বিশ্বে যে কয়জন জীবিত নেতার নাম শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সাথে উচ্চারিত হচ্ছে তাঁর মধ্যে শেখ হাসিনা অন্যতম। কেননা আজ বিশ্ববাসী দেখছে শেখ হাসিনার চেয়ে উদারবাদী, শেখ হাসিনার চেয়ে মানবতাবাদী কোনো নেতা এই মুহূর্তে পৃথিবীতে নেই।

রাষ্ট্রহীন, নেতাহীন, আশ্রয়হীন, সর্বস্বান্ত রোহিঙ্গাদের একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছেন শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, "বিশ্ব দুই শিবিরে বিভক্ত—শোষক আর শোষিত। আমি শোষিতের পক্ষে।" বঙ্গবন্ধুর মেয়ে দেশরত্ন শেখ হাসিনা পিতার কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে আজ শোষিতের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন।

শেখ হাসিনা আজ বাংলাদেশকে রোল মডেলে পরিণত করেছেন। কিভাবে এত দ্রুত সকল মানুষের জন্য সুষম উন্নয়ন করতে হয় সে ম্যাজিক শিখতে শেখ হাসিনার কাছে আসেন সারা বিশ্বের উন্নয়নকামী নেতারা। এটাই বাংলাদেশের সফলতা। আর সে সফলতা এসেছে শেখ হাসিনার হাত ধরে।

শেখ হাসিনা বাংলাদেশের একমাত্র অভিভাবক হিসেবে বাংলাদেশকে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির কবল থেকে বারবার রক্ষা করে যাচ্ছেন। ২০০১ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার বিনিময়ে দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দেয়ার চুক্তি করেন নি। এটা আজ সকলেই জানি। বরং শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে প্রতিবেশী দেশগুলোর কাছ থেকে শান্তিপূর্ণভাবে ন্যায্য পাওনা আদায় করেছেন। সারা বিশ্ব বাংলাদেশকে এখন সমীহের চোখে দেখা হয় কেননা দেশটির নেতা হচ্ছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।

আজ বাংলাদেশ বিশ্ব মানচিত্রে একটি পরিচিত নাম। দেশটি আজ নেতৃত্বের আসনে। আর তার সবই এসেছে জাতির পিতার মেয়ে শেখ হাসিনার হাত ধরে। শেখ হাসিনা আছেন বলেই আজ বাংলাদেশ নিরাপদ।

শুভ জন্মদিন প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনা।

লেখক : সংসদ সদস্য, ভোলা-৩।

এইচআর/আরআইপি

আরও পড়ুন